মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচে অসংখ্য রেকর্ড, হোয়াইট ওয়াশ জিম্বাবুয়ে

স্পোর্টস ডেস্ক:

মাশরাফির অধিনায়ক থেকে বিদায়ী ম্যাচে অসংখ্য রেকর্ড করে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে গতকাল লেখা হয় নানা রেকর্ড। মাশরাফিবাহিনী গতকাল জিম্বাবুয়েকে বৃষ্টি আইনে হারায় ১২৩ রানে।

শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্ট্যাডিয়ামে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে। উদ্বোধনী জুটিতে ২৯২ রান করেন তামিম-লিটন। লিটন ১৭৬ রান করে আউট হলেও তামিম নট আউট ছিলেন ১২৮ রানে। বৃষ্টির কারণে খেলা ৪৩ ওভারে আনা হলে নির্দিষ্ট ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩২২ রানের বড় সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

বৃষ্টি আইনে ৩২২ রানের বিপরীতে টার্গেট গিয়ে দাঁড়ায় ৩৪২ রানে। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশী বোলারদের বিপক্ষে তেমনভাবে দঁড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। দিনশেষে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে যায় মাত্র ২১৮ রানে। ডি/এল মেথডে ১২৩ রানের বড় জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের কাছে হোয়াইট ওয়াশ হয় জিম্বাবুয়ে।

মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচে নানান রেকর্ড গড়েন বালাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তাদের রেকর্ডগুলো হলো-

১. ওপেনিং জুটিতে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ছিল ১৭০। ১৯৯৯ সালের ২৫ মার্চ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মেহরাব হোসেন-শাহরিয়ার হোসেন এ রেকর্ড গড়েছিলেন। গতকাল তামিম-লিটন মিলে ২৯২ রান তুলে রেকর্ডটি লিখিয়েছেন নতুন করে।

২. তামিম-লিটন গতকাল ওপেনিং জুটিতে যে রান তুলেছেন তা বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে যেকোনো জুটিতে সর্বোচ্চ। এর আগের রেকর্ডটি ছিল সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর। ২০১৭ সালে কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ম উইকেটে ২২৪ রানের জুটি গড়েছিলেন দুজন।

৩. ওয়ানডে ক্রিকেটে ওপেনিং জুটির ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ (২৯২)। ২০১৯ সালে ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে ৩৬৫ রান তুলেছিলেন জন ক্যাম্পবেল ও শাই হোপ।  আর ২০১৮ সালে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩০৪ রানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি পাকিস্তানের ইমাম-উল-হক ও ফখর জামানের।

৪. ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস এখন লিটন দাসের। ১৭৬ রানের ইনিংস দিয়ে আগের ম্যাচে তামিমের গড়া ১৫৮ রানের রেকর্ড ভাঙলেন তিনি।

৫. ওয়ানডেতে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো এক ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি তুলে নিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা। এর মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুবার, একবার করে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। তবে ওয়ানডেতে এক ইনিংসে এই প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি তুলে নিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার।

৬. ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা এখন লিটন দাসের। ১৭৬ রানের ইনিংস খেলার পথে ৮টি ছক্কা মারেন তিনি। আগের রেকর্ডটি তামিমের। ২০১০ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ৭ ছক্কা মেরেছিলেন তামিম।

৭. ওয়ানডেতে এক ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারি মারার রেকর্ডও এখন লিটনের। আজ ১৭৬ রানের ইনিংসে ২৪টি বাউন্ডারি (৮ ছক্কা ও ১৬ চার) মারেন তিনি। এর আগে রেকর্ডটি ছিল তামিম ইকবালের। আগের ম্যাচেই ১৫৮ রানের ইনিংস খেলার পথে ২৩টি (২০ চার ও ৩ ছক্কা) বাউন্ডারি মারেন তামিম।

ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মাশরাফিকে কাধে নিয়ে সারা স্ট্যাডিয়াম ঘোরে তামিম, তাদের ঘিরে ছিলেন অন্য ক্রিকেটাররা। স্ট্যাডিয়ামজুড়ে ভেষে আসে মাশরাফি-মাশরাফি ধ্বনি। মাশরাফির অধিনায়ক পদ থেকে বিদায় জানাতে স্ট্যাডিয়াম ছিল কানায়-কানায় ভরপুর। আর বিদায় জানাতে বাংলাদেশের সকল খেলোয়াররা পড়েছিলেন মাশরাফির নাম ও নাম্বার দেওয়া জার্সি। জার্সির সামনে লেখা ছিল “Thank You Captain”।

সিরিজ সেরা হয়েছেন তামিম ইকবাল এবং ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন দাস।

এসএমজে/২৪/বা

Tagged