দুর্বল কোম্পানির দর বাড়ার কারণ কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কোনো কারণ ছাড়াই হুহু করে বেড়েই চলছে স্বল্পমূলধনী তিন কোম্পানির শেয়ার দর। কোম্পানিগুলো হলো- এমারেল্ড ওয়েল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড, নর্দার্ণ জুট ম্যানুফেকচারিং লিমিটেড, দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড।

পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি এমারেল্ড ওয়েল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের আজ মঙ্গলবার শেয়ার দর বেড়েছে ১.৪০ টাকা বা ৯.৯৩ শতাংশ। কোম্পানিটি সঠিক নিয়মের বাইরে থাকা সত্ত্বেও  শেয়ারের দর বাড়ছে। ২০১৭ সাল থেকে ডিভিডেন্ড ঘোষণা না করায় কোম্পানিটি “জেড” ক্যাটাগরির অন্তর্ভূক্ত হয়। এর পরিচালক ও উদ্যোক্তার কাছে মাত্র ২৮.৪২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কোম্পানিটির দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ রয়েছে ৬২ কোটি ৮১ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং স্বল্প সময় মেয়াদী ঋণ রয়েছে ৩০ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

এদিকে, পাট খাতের কোম্পানি নর্দার্ন জুট ম্যানুফেকচারিং লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৬৪.৫০ টাকা বা ৭.৫০ শতাংশ। ২০১৮ সালের জন্য কোন ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি এ কোম্পানি। এতে জেড ক্যাটাগরির অন্তর্ভূক্ত হয়। কোম্পানিটি ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর পরিশোধিত মূলধন মাত্র ২ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। অথচ কোম্পানিটির শেয়ারের দর ৯২৪.৭০ টাকা। কোম্পানির শেয়ারের দর গত বছর জুলাইয়ে ছিল ২৫২.২০ টাকা এবং এই বছর জানুয়ারিতে শেয়ারের দর হয়েছিল ১৪৬০.৪০ টাকা। অর্থাৎ এই ছয় মাসে শেয়ারের দর বেড়েছিল প্রায় ১২০০ টাকা। একটি স্বল্পমূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দর এভাবে বেড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক। কোম্পানিটির পরিচালক ও উদ্যোক্তার কাছে মাত্র ২১.৮৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

 

 

 

 

 

এদিকে বস্ত্র খাতের কোম্পানি দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস্ লিমিটেডের শেয়ারের দর বেড়েছে ২.৫ টাকা বা ৬.৬৭ শতাংশ। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন মাত্র ৭ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। “জেড” ক্যাটাগরির এই কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। এটি পুঞ্জিভূত লোকসানে রয়েছে। কোম্পানির প্রোফাইল অনুসারে, শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস), পি/ই রেশিও লোকসানে রয়েছে। কোম্পানিটির বার্ষিক আয় নেই বরং প্রতিবছর লোকসানে রয়েছে। এর মোট শেয়ারের মাত্র ২১.০৪ শতাংশ শেয়ার কোম্পানিটির পরিচালক ও উদ্যোক্তার নিকট রয়েছে।

এদিকে কোম্পানিটির দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ রয়েছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং স্বল্প সময় মেয়াদী ঋণ রয়েছে ২৩ কোটি ২১ লাখ ১০ হাজার টাকা।

যেখানে শেয়ারবাজারের সূচক দিন দিন পড়ছে, শেয়ারের লেনদেন কমছে, ভালো কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ছে না বরং ক্রমশ কমেই চলেছে সেখানে এরকম নিয়ম না মানা স্বল্পমূলধনী কোম্পানির শেয়ার দর হুহু করে বাড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বাজার বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীদের।

এসএমজে/২৪/বা

Tagged