সঠিক উপায়ে বিনিয়োগ করে পুঁজিবাজার থেকে রিটার্ন পাওয়া সম্ভব

নিজস্ব প্রতিবেদক

সঠিকভাবে বিনিয়োগ করলে পুঁজিবাজার থেকে রিটার্ন পাওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের ওপর আস্থা হারানোর কোনো সুযোগ নেই। বিনিয়োগের বিপরীতে যে বিনিময় দেওয়ার কথা এই বাজারের সেই সক্ষমতা রয়েছে। জেনেবুঝে বিনিয়োগ করলে এই বাজার থেকে ওই রিটার্ন পাওয়া যাবে।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০২৩ এর ‘বিনিয়োগ শিক্ষা ও পুঁজিবাজার’ বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থসূচকের উদ্যোগে চলমান তিন দিনব্যাপী ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোতে এদিন বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে সেশন চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এম সাদেকুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটের (বিএএসএম) ফ্যাকাল্টি রিজভী আহমেদ। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, গ্রীণ ডেল্টা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াফী শফিক মিনহাজ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্লেষণ ও জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করতে চাইলে আর্থিক তথ্য জানা বেশ জরুরি। তাই সাধারণ তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে এখনও বেশ কিছু ঘাটতি আছে। এমনকি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটেও প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য পাওয়া যায় না। সেখানে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানির সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য আপলোড করা নেই।

তিনি বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক গ্যাপ রয়েছে। তবে আস্থার ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি নেই। অভাব ও আস্থার ঘাটতি থাকলে বর্তমানে অনেক বিনিয়োগ আসত না। ব্যাংকগুলোতেও এখন নতুন নতুন প্রজেক্টের অফার আসে। সবাই একসঙ্গে কাজ কাজ করলে দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।

ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই শিক্ষার পদ্ধতি সঠিকভাবে এগিয়ে দেওয়া উচিত। তাদের পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। করোনার সময় স্কুল কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম অনলাইন হয়েছিল। সেরকমভাবে বিনিয়োগ শিক্ষাও অনলাইনে করানো উচিত। এছাড়া তথ্যের প্রবাহ বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি অনেক ভালো করছে। তৈরি পোশাক শিল্পে নতুন করে চার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের খবর এসেছে। আস্থা না থাকলে তা হতো না। কোনো রিসোর্টে যেতে চাইলে খালি পাওয়া যায় না। অনাস্থা থাকলে এমন হওয়ার কথা নয়। তারপরও পুঁজিবাজারে যে কিছু অনাস্থার কথা হয় সেটি দূর করার জন্য প্রয়োজন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দায়িত্বশীল বিনিয়োগ শিক্ষা।

মূল প্রবন্ধে বিএএসএমের ফ্যাকাল্টি রিজভী আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ শিক্ষা নিয়ে যারা চিন্তা করেছে তারাই লাভবান হয়েছে। অতীতের পুঁজিবাজার ধসের মূল কারণ ছিল বিনিয়োগ শিক্ষার অভাব। মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য বিষয়ের প্রভাব পুঁজিবাজারে কীভাবে পড়ে সেটাও জানতে হবে। বিনিয়োগ শিক্ষার অনেক উপকারিতা রয়েছে। মূল্যস্ফীতি হলে পুঁজিবাজারে কি ধরনের প্রভাব পড়ে এ বিষয়ে জানতে হবে। বিনিয়োগ শিক্ষা নিয়ে জানাশোনা লোকজনই পুঁজিবাজারে আসে। যেসব দেশের মানুষ গণিতে ভালো তারা বিনিয়োগ শিক্ষা বেশি বুঝে। জমানো সব টাকা দিয়ে শেয়ার কেনা উচিত না। প্রতি মাসে অল্প করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত। এভাবে বিনিয়োগ করলে শিক্ষা পুঁজিবাজারে কাজে লাগানো যাবে।