অস্বচ্ছতা বাজারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে

স্বচ্ছতার অভাব থাকলে কোনো কিছু নিয়ে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যায় না। যেকোনো উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছতা। দেশের বর্তমান পুঁজিবাজারও স্বচ্ছতার অভাবে ধুঁকছে। দীর্ঘ সময় ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ারের টানা দরপতনের ফলে অনেক শেয়ার দর ফেস ভ্যালুর নিচে নেমে এসেছে। কী কারণে মাঝে-মধ্যে হঠাৎ করে দর বেড়ে যায় এটি বুঝা যাচ্ছে না। এই না বুঝার পাল্লা যত ভারী হয়, অস্বচ্ছতা ততই বাড়ে।

আকস্মিক শেয়ারের দর বাড়ার নজির অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজারেও আছে। সেগুলো ব্যতিক্রম ঘটনা। কিন্তু সে ঘটনার পেছনেও যথেষ্ট কারণ থাকে। সেসব দেশের সচেতন বিনিয়োগকারীরা সেটি বুঝতে পারেন। সেভাবেই তারা বিনিয়োগ করেন। আর আমাদের দেশে যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই দর হঠাৎ করে একদিন বেড়ে যায়। আবার যখন দরপতন হয় তখনও কোনো কারণ থাকে না। দেখা যায় অযথাই কোনো কোম্পানির শেয়ার গেইনার বা লুজারের তালিকার শীর্ষে চলে আসছে। তখন এর পেছনে কারণ খুঁজতে গেলে কিছুই পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে শুধু সচেতন বিনিয়োগকারীই নন, বাজার বিশ্লেষকরা কিছু বুঝে উঠতে পারেন না। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়- বাজারে কারসাজি রয়েছে, অস্বচ্ছতা রয়েছে। এরপর যে ঘটনাটি ঘটে, সেটি হচ্ছে এর জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করা হয় না। বের করা গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয় না। পরে বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া হয়। অতএব, বলা যায় এ ধরনের প্রবণতা বন্ধ না হলে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা সম্ভব নয়। আর স্বচ্ছতা না এলে বাজারও তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে না। এর মধ্য দিয়ে কতিপয় লোক আঙুল ফুলে কলা গাছ হবে, আর লাখ লাখ বিনিয়োগকারী কঙ্কালে পরিণত হবে। কঙ্কালসার বাজার দেশের উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা যায় না।

Tagged