লেনদেন বাড়লেও পতনের ধারায়ই পুঁজিবাজার

এসএমজে ডেস্ক

দেশের পুঁজিবাজারে অধিকাংশ শেয়ারের দরপতন চলছেই। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত প্রধান মূল্যসূচক কমে লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে শেষ ১৫ কার্যদিবসের সর্বোচ্চ হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে।

এর আগে ঈদুল আজহার আগে শেয়ারবাজারে টানা চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। ফলে কিছুটা স্বস্তি নিয়েই ঈদ উদযাপনে যান বিনিয়োগকারীরা। পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার থেকে শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন শুরু হয়েছে।

ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসের লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও শেষ পর্যন্ত বড় হয় দরপতনের তালিকা। ফলে ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে দরপতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের। দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। সেই সঙ্গে কমে যায় লেনদেনের গতি। তবে মঙ্গলবার সূচকের সামান্য উত্থান হয়। অবশ্য সূচক বাড়লেও লেনদেনের পরিমাণ কমে যায়। আর বুধবার প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও কমে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক। তবে বাড়ে লেনদেনের গতি।

এ পরিস্থিতি বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। এতে এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। আর আধাঘণ্টায় ১৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়।

কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টার পর দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় স্থান করে নিতে থাকে। ফলে একদিকে বড় হয় দরপতনের তালিকা, অন্যদিকে প্রধান মূল্যসূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে ১১৮টির দাম কমেছে। আর ১৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট অমে ৬ হাজার ৩৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক শূন্য ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচকের মিশ্র প্রবণতার দিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮৯৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮৯০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের দিনের তুলনায় বাড়েনি, গত ১২ জুনের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

এই লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৩ কোটি ৭৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লুব রেফ বাংলাদেশ ৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালেক স্পিনিং।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, জেনারেশন নেক্সট, খান ব্রাদার পিপি ওভেন ব্যাগ, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এবং বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৫টির এবং ৮৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

Tagged