সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮
( ২০১৮ সনের ৪৭ নং আইন
[ ৮ অক্টোবর, ২০১৮ ]
Motor Vehicles Ordinance,1983 রহিতক্রমে উহার বিধানাবলি বিবেচনাক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে নূতন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং
যেহেতু ২০১৩ সনের ৭ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং
যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং
যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Motor Vehicles Ordinance, 1983 (Ordinance No. LV of 1983) রহিতক্রমে উহার বিধানাবলি বিবেচনাক্রমে সময়ের চাহিদা প্রতিফলনে নিরাপদ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে যুগোপযোগী নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।
*(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে, সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।
* এস, আর, ও নং ৩৩৩-আইন/২০১৯, তারিখঃ ২২ অক্টোবর, ২০১৯ ইং এবং ০৬ কার্তিক, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১ নভেম্বর, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ তারিখ হইতে আইনটি কার্যকর।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
(১) “আনলেডেন ওজন” অর্থ চালকের ওজন ব্যতীত কোনো মোটরযান বা ট্রেইলর কার্যরত অবস্থায় উহাতে ব্যবহৃত সরঞ্জামসহ উক্ত মোটরযান বা ট্রেইলরের ওজন, এবং বিকল্প খুচরা অংশ বা বডি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো মোটরযানের “আনলেডেন ওজন” অর্থ উহার সর্বাধিক ভারী বিকল্প খুচরা অংশ বা বডিসহ ওজন;
(২) “আর্টিকুলেটেড মোটরযান” অর্থ প্রাইম মুভার ও একটি সেমি-ট্রেইলরের সমন্বয়ে গঠিত মোটরযান যাহার সহিত সেমি-ট্রেইলর এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে সেমি-ট্রেইলরের একটি অংশ প্রাইম মুভারের উপর বিশেষভাবে আবদ্ধ থাকে ও উহার ওজনের একটি অংশ প্রাইম মুভার বহন করে;
(৩) “এক্সপ্রেস ক্যারিজ” অর্থ ভাড়ার বিনিময়ে যাত্রী বহনের জন্য ব্যবহৃত বা যাত্রী বহনের উপযোগী এইরূপ কোনো মোটরযান, যাহার ৩২ (বত্রিশ) কিলোমিটারের নিম্নে কোনো ভাড়া থাকিবে না, এবং যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি কর্তৃক ভিন্নরূপ নির্ধারিত না হইলে, যাহা অনধিক
৩২ (বত্রিশ) কিলোমিটারের মধ্যবর্তী কোনো স্থানে যাত্রী উঠানোর জন্য থামিবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, জেলা সদরের নির্দিষ্ট স্থানে উক্তরূপ কোনো মোটরযান একবার থামাইবার ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে না;
(৪) “এক্সেল” অর্থ মোটরযান বা ট্রেইলরের ভারবহনকারী দণ্ড বা ঘূর্ণায়মান দণ্ড যাহার উপর বা যাহার সহিত মোটরযান বা ট্রেইলরের চাকা ভূমির সংস্পর্শে থাকে;
(৫) “এক্সেল লোড বা এক্সেল ওজন” অর্থ কোনো মোটরযানের যে পৃষ্ঠের উপর যানটি অবস্থিত সেই পৃষ্ঠের উপর এক্সেলের সহিত সংযুক্ত সকল চাকার মাধ্যমে সঞ্চারিত মোট এক্সেল ওজন;
(৬) “ওজন” অর্থ কোনো মোটরযান সমতলে অবস্থানকালে উহার চাকার মাধ্যমে সমতলে নিপতিত সর্বমোট ওজন;
(৭) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ১৭ নং আইন) এর ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ;
(৮) “কন্ট্রাক্ট ক্যারিজ” অর্থ এইরূপ কোনো মোটরযান যাহা প্রত্যক্ষ (expressed) বা পরোক্ষ (implied) চুক্তির অধীন সম্পূর্ণ মোটরযান (vehicle as a whole) ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্টকৃত (fixed) বা সম্মত (agreed) হারে ভাড়ার বিনিময়ে,-
(ক) কোনো রুট বা দূরত্ব উল্লেখপূর্বক বা উল্লেখ ব্যতীত, সময়ের ভিত্তিতে; বা
(খ) এক স্থান হইতে অন্য স্থানে; এবং
(গ) উভয় ক্ষেত্রে, উক্ত চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নহে এইরূপ রুট লাইন বা পথিমধ্যে হইতে কোনো যাত্রী উঠানো-নামানো (pick up or set down) ব্যতীত না থামিয়া (without stopping) এক বা একাধিক যাত্রী পরিবহন করে;
এবং উহার যাত্রীগণ পৃথকভাবে ভাড়া প্রদান করুক বা না করুক, ভাড়ায় চালিত কোনো যানবাহন (rental vehicle), মাইক্রোবাস, ট্যাক্সিক্যাব, মোটর সাইকেল বা অনুরূপ কোনো যানবাহনও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৯) “কন্ডাক্টর” অর্থ যাত্রীবাহী মোটরযানের যাত্রীদের নিকট হইতে ভাড়া আদায় ও যাত্রীদের মোটরযানে ওঠা-নামা নিয়ন্ত্রণ করিবার কার্যসহ নির্ধারিত অন্য কোনো কার্য সম্পাদনে নিয়োজিত ব্যক্তি;
(১০) “কন্ডাক্টর লাইসেন্স” অর্থ কোনো মোটরযানে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কন্ডাক্টর হিসাবে কাজ করিবার জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স;
(১১) “গণপরিবহণ” অর্থ ভাড়ার বিনিময়ে যাত্রী পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত বা ব্যবহারের জন্য উপযোগী যে কোনো মোটরযান;
(১২) “চ্যাসিস” অর্থ মোটরযানের প্রধান কার্যকরী অংশ বা ফ্রেম বা ভিত্তি কাঠামো যাহার উপর মোটরযানের প্রধান যন্ত্রাংশ ও বডি সংযুক্ত থাকে এবং যাহা মোটরযান শনাক্তকারী ইউনিক নম্বর বহন করে;
(১৩) “ট্রাক্টর” অর্থ কোনো মোটরযান যাহা প্রধানত কৃষি, চাষাবাদ, উদ্যান, বনায়ন বা অনুরূপ কাজের যন্ত্র হিসাবে ডিজাইনকৃত, নির্মিত ও ব্যবহৃত হয় এবং কেবল এইরূপ কাজের স্থানে যাতায়াতের সময় রাস্তায় চালিত হয় ও উহা চালনার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যতীত অন্য কোনো ভার বহন করে না, তবে কোনো রোড-রোলার ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
(১৪) “ট্রাফিক সাইন বা সংকেত” অর্থ এই আইন বা বিধি বা প্রবিধানের বিধান অনুসারে প্রণীত বা উদ্ভাবিত ‘জাতীয় ট্রাফিক সাইন ম্যানুয়াল’ বা পুস্তিকায় প্রদত্ত বা বর্ণিত বা, সময় সময়, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত আকার, রং বা ধরনের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ নহে, এইরূপ প্রোথিত বা বহনযোগ্য সকল চিহ্ন, সংকেত, মার্কিং এবং যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ, যাহা ভাষা, উৎকীর্ণ লিপি, প্রতীক, ঘন্টা, আলো বা বাতি ব্যবহার করিয়া ট্রাফিককে তথ্য, পথনির্দেশ, সতর্ক সঙ্কেত বা নির্দেশনা প্রদান অথবা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করিবার জন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা উহার কোনো কর্মচারীর কর্তৃত্বাধীনে বা তত্ত্বাবধানে তাহার এখতিয়ারভুক্ত কোনো এলাকা, সড়ক, মহাসড়ক বা লেভেল ক্রসিং গেইটে স্থাপিত, উত্তোলিত বা অন্য কোনোভাবে প্রদর্শিত করা হয়;
(১৫) “ট্যাক্স টোকেন” অর্থ মোটরযানের উপর আরোপিত ট্যাক্স বা কর পরিশোধের পর কর আদায়কারী কর্মচারী বা অনুমোদিত কোনো কর্মচারী কর্তৃক কর পরিশোধকারীকে প্রদত্ত টোকেন বা কার্ড বা সনদ;
(১৬) “ট্যাক্সিক্যাব” অর্থ ভাড়ার বিনিময়ে চালক ব্যতীত অনধিক ৪ (চার) জন যাত্রী বহনের উপযোগী করিয়া নির্মিত বা ব্যবহৃত এইরূপ কোনো মোটরযান;
(১৭) “ট্রেইন ওজন” অর্থ ট্রেইলর ও প্রাইম মুভার এর মোট লেডেন ওজন;
(১৮) “ট্রেইলর” অর্থ কোনো পার্শ্বকার বা সম্মুখকার ব্যতীত কোনো মোটরযান, যন্ত্র, মেশিন বা অন্য কোনো কাঠামো, যাহা উহার নিজস্ব শক্তি দ্বারা চালিত হইবার জন্য ক্ষমতাসম্পন্ন নহে এবং অন্য কোনো মোটরযান দ্বারা টানিয়া লইবার জন্য ডিজাইনকৃত;
(১৯) “ড্রাইভিং লাইসেন্স” অর্থ কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির মোটরযান চালাইবার জন্য কোনো ব্যক্তিকে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স;
(২০) “দুর্ঘটনা” অর্থ কোনো সড়ক, বা মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে মোটরযান বা অন্য কোনো যানবাহন ব্যবহারের দ্বারা বা উহা হইতে উদ্ভূত কোনো অঘটন বা ঘটনা সংঘটন, যাহার ফলে কোনো ব্যক্তি বা প্রাণির মৃত্যু বা উহার দেহে গুরুতর জখম সংঘটিত হয় অথবা কোনো সম্পত্তি, যানবাহন বা স্থাপনার ক্ষতি সাধিত হয়;
(২১) “দোষসূচক পয়েন্ট” অর্থ মোটরযান চালককে প্রদত্ত পয়েন্ট হইতে এই আইন ও বিধিতে বর্ণিত কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইবার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তনকৃত পয়েন্ট;
(২২) “দ্বৈত উদ্দেশ্য যান” অর্থ এইরূপ মোটরযান যাহা যাত্রী ও পণ্য উভয় পরিবহণের জন্য নির্মিত বা অভিযোজিত এবং যাহার নিবন্ধিত লেডেন ওজন ৫০০০ কিলোগ্রামের অধিক নহে;
(২৩) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত;
(২৪) “নিবন্ধিত লেডেন ওজন” অর্থ কোনো মোটরযান বা ট্রেইলার বা মোটরযান ও ট্রেইলারের কম্বিনেশনের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট যানের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত লেডেন ওজন;
(২৫) “নিরব এলাকা” অর্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত বা নির্দেশিত এলাকা বা স্থান যেখানে শব্দ সংকেত ব্যবহার নিষিদ্ধ;
(২৬) “পরিবহণযান” অর্থ এইরূপ কোনো বাণিজ্যিক যান, ব্যক্তিগত সেবা যান, পণ্যবাহী যান, বাস, হালকা বা ভারী আর্টিকুলেটেড যান, অসমর্থদের বাহনের উপযোগী বিশেষ উদ্দেশ্য যান বা বিশেষায়িত যান, যেইক্ষেত্রে টানিয়া লইবার যানটি কোনো মোটরকার এবং সম্মিলন বা কম্বিনেশনটি ব্যক্তিগত দ্রব্যাদি ব্যতীত অন্য কিছু বহনের জন্য ব্যবহৃত হয় এইরূপ কোনো মোটরযান ও ট্রেইলরের সম্মিলন বা কম্বিনেশন, এবং কেবল কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয় এইরূপ লোকোমোটিভ বা ট্রাক্টর ব্যতীত অন্য সকল লোকোমোটিভ বা ট্রাক্টর;
(২৭) “পার্কিং এলাকা” অর্থ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা নির্ধারিত স্থানসমূহ যেখানে কোনো মোটরযান দাঁড়াইতে বা অবস্থান করিতে পারিবে, তবে এইরূপ দাঁড়ানো বা অবস্থানের সময়সীমা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে;
(২৮) “পারমিট” অর্থ কর্তৃপক্ষ বা যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি কর্তৃক কোনো মোটরযানকে পরিবহণ যান, কন্ট্রাক্ট ক্যারিজ, স্টেইজ ক্যারিজ, ব্যক্তিগত পরিবহণ, সেবাযান, দ্বৈত উদ্দেশ্য যান, বিশেষ উদ্দেশ্য যান, পর্যটক যান বা প্রমোদ পরিবহণ যান হিসাবে ব্যবহারের অনুমোদন প্রদান করিয়া, অথবা ব্যক্তিগত বা নিজস্ব পরিবহণ যান বা সাধারণ পরিবহণের মালিককে উক্ত যান ব্যবহারের অনুমোদন প্রদান করিয়া প্রদত্ত বা পৃষ্ঠাঙ্কৃত অনুমতিপত্র বা পারমিট, এবং অস্থায়ী অনুমতিপত্র বা পারমিটও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(২৯) “পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স” অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স, যাহা দ্বারা কোনো ব্যক্তি একজন বেতনভোগী কর্মচারী হিসাবে মোটরযান বা গণপরিবহণ চালাইবার অধিকারী হন;
(৩০) “পাবলিক প্লেস” অর্থ কোনো সড়ক, মহাসড়ক বা রাস্তা অথবা জনগণের প্রবেশের অধিকার রহিয়াছে এইরূপ কোনো স্থান, এবং স্টেইজ ক্যারিজ কর্তৃক যাত্রী উঠানো বা নামানো হয় এইরূপ কোনো স্টান্ড বা স্থানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৩১) “প্রতিবন্ধীবান্ধব মোটরযান” অর্থ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে পরিকল্পিত ও নির্মিত কোনো মোটরযান, যাহা কেবল অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক বা অনুরূপ ব্যক্তির জন্যই ব্যবহৃত হয়;
(৩২) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(৩৩) “প্রাইম মুভার” অর্থ এইরূপ কোনো মোটরযান যাহা ট্রেইলর বা অন্য কোনো মোটরযান টানিয়া লইবার জন্য নির্মিত বা অভিযোজিত, তবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যতীত নিজে কোনো ভার বহনের জন্য নির্মিত নয়;
(৩৪) “ফিটনেস সনদ” অর্থ কোনো মোটরযানের উপযুক্ততার সনদ যাহা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক, সময় সময়, আরোপিত আবশ্যকতাও পূরণ করে;
(৩৫) “বাণিজ্যিক মোটরযান” অর্থ কোনো পারমিট, ফ্রাঞ্চাইজ বা অপারেটর লাইসেন্সের অধীন ব্যবহৃত বা পরিচালিত কোনো গণপরিবহণ বা নিজস্ব পরিবহণ যান বা কোনো ব্যবসা বা বাণিজ্যের কাজে ব্যবহৃত কোনো মোটরযান;
(৩৬) “বাস” অর্থ এইরূপ যাত্রীবাহী মোটরযান যাহার হুইল বেইজ অন্যূন ৪৯০০ মিলিমিটার, এবং আর্টিকুলেটেড বাসও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৩৭) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(৩৮) “ভারী মোটরযান” অর্থ এইরূপ কোনো মোটরযান বা মোটরযান ও ট্রেইলরের কম্বিনেশন যাহার নিবন্ধিত লেডেন বা বোঝাইকৃত বা ভারসহ ওজন বা যাহার ট্রেইল বা শ্রেণিবদ্ধ ওজন, অথবা কোনো লোকোমোটিভ বা রোড রোলার যাহার আনলেডেন বা ভারবিহীন বা অ-বোঝাইকৃত ওজন ১২,০০০ (বারো হাজার) কিলোগ্রামের অধিক;
(৩৯) “ভাড়া” অর্থ কোনো স্টেইজ ক্যারিজ, এক্সপ্রেস ক্যারিজ, সার্ভিস বাস বা কন্ট্রাক্ট ক্যারিজে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে টিকেটের জন্য ভাড়া বাবদ প্রদেয় অর্থ;
(৪০) “মধ্যম মোটরযান” অর্থ এইরূপ কোনো মোটরযান বা মোটরযান ও ট্রেইলারের কম্বিনেশন যাহার নিবন্ধিত লেডেন বা বোঝাইকৃত বা ভারসহ ওজন বা মোটরযানের ট্রেইল বা শ্রেণিবদ্ধ ওজন, অথবা কোনো লোকোমোটিভ বা রোড রোলার যাহার আনলেডেন বা ভারবিহীন বা অ-বোঝাইকৃত ওজন ৭৫০১ হইতে ১২০০০ কিলোগ্রাম;
(৪১) “মাইক্রোবাস” অর্থ এইরূপ কোনো মোটরযান যাহা চালক ব্যতীত অন্যূন ৮ (আট) জন এবং অনধিক ১৫ (পনেরো) জন যাত্রী বহনের জন্য নির্মিত বা প্রস্তুতকৃত বা ব্যবহৃত;
(৪২) “মোটরযান” অর্থ কোনো যন্ত্রচালিত যানবাহন বা পরিবহণযান যাহা সড়ক, মহাসড়ক বা জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত, নির্মাণ বা অভিযোজন করা হয় এবং যাহার চালিকাশক্তি অন্য কোনো বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উৎস হইতে সরবরাহ হইয়া থাকে, এবং কোনো কাঠামো বা বডি সংযুক্ত হয় নাই এইরূপ চ্যাসিস ও ট্রেইলারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, তবে সংস্থাপিত বা সংযুক্ত রেলের উপর দিয়া চলাচলকারী অথবা একচ্ছত্রভাবে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানা বা অন্য কোনো নিজস্ব চত্বরে বা অঙ্গনে ব্যবহৃত যানবাহন অথবা মনুষ্য বা পশু দ্বারা চালিত যানবাহন ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
(৪৩) “মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল” অর্থ প্রশিক্ষণ ফি এর বিনিময়ে বা ফি ব্যতীত মোটরযান চালনায় তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক বা উভয় বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের কোনো স্কুল বা প্রতিষ্ঠান;
(৪৪) “মোটরযান চালক” অর্থ কোনো ব্যক্তি যিনি মোটরযান চালনা করেন বা উহার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ নিজের অধীনে রাখেন;
(৪৫) “মোটরযান মালিক” অর্থ-
(ক) এইরূপ কোনো ব্যক্তি যাহার কোনো মোটরযানে স্বত্ব রহিয়াছে এবং যাহার নামে মোটরযানটি রেজিস্ট্রেশন করা হইয়াছে;
(খ) কোনো মোটরযান ভাড়া চুক্তি, ক্রয় চুক্তি, লিজ চুক্তি, বন্ধক চুক্তি, ঋণ চুক্তি বা কিস্তিতে মূ্ল্য পরিশোধের চুক্তির অধীন ক্রয় বা দখল গ্রহণের ক্ষেত্রে, উক্ত চুক্তির অধীন উক্ত মোটরযানের দখলদার ব্যক্তি;
(গ) মোটরযানের স্বত্বাধিকারী ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত পাওয়ার অব এ্যাটর্নি প্রাপ্ত ব্যক্তি;
(ঘ) মোটরযানের স্বত্বাধিকারী ব্যক্তির মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারী; এবং
(ঙ) নাবালকের ক্ষেত্রে, উক্ত নাবালকের আইনগত অভিভাবক;
(৪৬) “মোটর সাইকেল” অর্থ দুই চাকা বিশিষ্ট মোটরযান;
(৪৭) “যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি” বা “পরিবহণ কমিটি” অর্থ ধারা ২৭ এর অধীন গঠিত যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি বা পরিবহণ কমিটি;
(৪৮) “রেজিস্ট্রেশন সনদ” অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সনদ;
(৪৯) “রুট” অর্থ কোনো মোটরযান চলাচল পথের এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চলিবার সময় যে নির্দিষ্ট সড়ক বা মহাসড়ক অতিক্রম করে;
(৫০) “শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স” অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাধীনে মোটরযান চালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণের নিমিত্ত কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য প্রদত্ত সাময়িক লাইসেন্স;
(৫১) “সেমি-ট্রেইলর” অর্থ এইরূপভাবে নির্মিত বা প্রস্তুতকৃত (constructed) বা অভিযোজিত (adapted) কোনো ট্রেইলর যাহা একটি আর্টিকুলেটেড (articulated) যানের অংশ গঠন করে;
(৫২) “স্টেইজ ক্যারিজ” অর্থ চালক ব্যতীত ৬ (ছয়) জনের অধিক যাত্রী বহনকারী বা বহনের জন্য ব্যবহৃত বা অভিযোজিত অন্য কোনো যাত্রীবাহী মোটরযান, যাহা সমগ্র যাত্রার জন্য বা যাত্রার কোনো পর্যায়ের জন্য প্রত্যেক যাত্রী কর্তৃক পৃথকভাবে মূল্য পরিশোধকৃত ভাড়ার বিনিময়ে যাত্রী পরিবহণ করে;
(৫৩) “হালকা মোটরযান” অর্থ এইরূপ কোনো মোটরযান বা মোটরযান ও ট্রেইলারের কম্বিনেশন, যাহার নিবন্ধিত লেডেন ওজন, অথবা কোনো ট্রাক্টর বা রোড রোলার, যাহার আনলেডেন ওজন ৭৫০০ কিলোগ্রামের অধিক নহে; এবং
(৫৪) “ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী” অর্থ সরকার বা কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এই আইনের অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচরী।
আইনের প্রয়োগ
৩। এই আইনের বিধানাবলি ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭’ (২০১৭ সনের ১৭ নং আইন) সহ এতদ্সংক্রান্ত প্রচলিত অন্যান্য আইনের বিধানাবলির পরিপূরক হইবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, ইত্যাদি
ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান চালনার উপর বিধি-নিষেধ
৪। (১) কোনো ব্যক্তি ড্রাইভিং লাইসেন্স বা, ক্ষেত্রমত, শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স ব্যবহার করিয়া পাবলিক প্লেসে কোনো মোটরযান চালাইতে বা চালাইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না।
(২) কোনো ব্যক্তি যে শ্রেণি বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালনার লাইসেন্স প্রাপ্ত হইয়াছেন, সেই শ্রেণি বা ক্যাটাগরি ব্যতীত অন্য কোনো শ্রেণি বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালাইতে পারিবেন না :
তবে শর্ত থাকে যে, ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তি হালকা ও মধ্যম শ্রেণি বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালাইতে পারিবেন।
(৩) মোটরযানের শ্রেণি বা ক্যাটাগরি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
গণপরিবহণ চালনার অনুমতিপত্র, ইত্যাদি
৫। (১) কোনো ব্যক্তি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুমতিপত্র ব্যতীত গণপরিবহণ চালাইতে বা চালাইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না।
(২) গণপরিবহণ চালনা, চালনার অনুমতিপত্র প্রদান ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন, ঠিকানা পরিবর্তন, ইত্যাদি
৬। (১) কোনো ব্যক্তিকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য, নির্ধারিত ফিস প্রদান সাপেক্ষে, জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপিসহ নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন দাখিল করিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য কোনো ব্যক্তিকে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলি পূরণ করিতে হইবে, যথা:-
(ক) অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে বয়স অন্যূন ১৮ (আঠারো) বৎসর এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে বয়স অন্যূন ২১ (একুশ) বৎসর;
(খ) অন্যূন অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ;
(গ) শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম;
(ঘ) মোটরযান চালনার যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; এবং
(ঙ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য শর্ত।
(৩) কোনো ব্যক্তি এই আইন বা বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত পূরণ না করিলে কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন প্রত্যাখ্যান করিবে।
(৪) কোনো ব্যক্তি এই আইন বা বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত পূরণ করিলে কর্তৃপক্ষ তাহাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করিবে এবং উক্তরূপে প্রাপ্ত লাইসেন্স, শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত, সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে।
(৫) ড্রাইভিং লাইসেন্স হস্তান্তরযোগ্য হইবে না।
(৬) কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে যে কোনো শ্রেণি বা ক্যাটাগরির লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন বা লাইসেন্সের শ্রেণি বা ক্যাটাগরি পরিবর্তন বা সংযোজন করিতে পারিবে।
(৭) কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত মেয়াদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করিবে এবং উক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে, নির্ধারিত ফিস প্রদান ও অন্যান্য শর্তপূরণ সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহা নবায়নের জন্য আবেদন করা যাইবে।
(৮) কোনো ব্যক্তি ড্রাইভিং লাইসেন্সে উল্লিখিত ঠিকানা পরিবর্তন করিলে, তিনি উক্ত ঠিকানা পরিবর্তনের ৩ (তিন) মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে আবেদন করিবেন এবং কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্তরূপ নূতন ঠিকানা সংশ্লিষ্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সে লিপিবদ্ধ ও রেজিস্টারে রেকর্ডভুক্ত করিবে।
(৯) লাইসেন্স প্রদান, মেয়াদ, নবায়ন, ফিস, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা নিশ্চিতকরণের পদ্ধতি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ড্রাইভিং লাইসেন্স
৭। কর্তৃপক্ষ, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, বিশেষ শারীরিক সামর্থ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে উপযুক্ত মনে করিলে, কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধীবান্ধব মোটরযান চালাইবার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর মোটরযান চালাইবার ড্রাইভিং লাইসেন্স
৮। (১) প্রতিরক্ষা বাহিনীর মোটরযান চালাইবার জন্য সংশ্লিষ্ট বাহিনীর স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিজস্ব পদ্ধতিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা যাইবে এবং উক্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স সমগ্র বাংলাদেশে মোটরযান চালনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত মোটরযান ইহার আওতা বহির্ভূত থাকিবে।
(২) প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত কোনো ব্যক্তির অন্যূন ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদী সংশ্লিষ্ট বাহিনী কর্তৃক প্রদত্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকিলে, কর্তৃপক্ষ যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা গ্রহণ ব্যতীত ধারা ৬ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে, তাহাকে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রেণির ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।
(৩) সরকার, যে কোনো সময়, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট বাহিনীর লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট যাচনা করিতে পারিবে এবং যাচিত তথ্য উক্ত কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করিবে।
বিদেশি নাগরিকের ড্রাইভিং লাইসেন্স
৯। (১) যে কোনো বিদেশি নাগরিক তাহার নিজ দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন ও পৃষ্ঠাঙ্কন করাইয়া উক্ত লাইসেন্সের মেয়াদকালে সমগ্র বাংলাদেশে মোটরযান চালনা করিতে পারিবেন।
(২) যে কোনো বিদেশি নাগরিক ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য, নির্ধারিত ফিস প্রদান সাপেক্ষে, নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ কোনো আবেদন করা হইলে, তাহাকে এই আইনের অধীন ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা যাইবে।
(৩) কোনো বিদেশি নাগরিক এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান বা লাইসেন্সে প্রদত্ত কোনো শর্ত লঙ্ঘন করিলে, কর্তৃপক্ষ তাহার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, রহিত বা বাতিল করিতে পারিবে বা পৃষ্ঠাঙ্কিত বিদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স অকার্যকর করিতে পারিবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে কোনো মোটরযান চালনা করিতে পারিবেন না।
কর্তৃপক্ষ ব্যতীত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত, প্রদান বা নবায়নে বিধি-নিষেধ
১০। (১) কর্তৃপক্ষ ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সমিতি ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত বা প্রদান বা উহা নবায়ন করিতে পারিবে না।
(২) কোনো ব্যক্তি কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স বিকৃত বা পরিবর্তন করিতে পারিবেন না।
(৩) কোনো ব্যক্তি কোনো নকল, ভুয়া বা জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
পয়েন্ট বরাদ্দ, কর্তন ইত্যাদি
১১। (১) শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ (বারো) পয়েন্ট বরাদ্দ থাকিবে, যাহা এই আইন বা বিধির অধীন অপরাধ সংঘটনের কারণে দোষসূচক পয়েন্ট হিসাবে কর্তনযোগ্য হইবে
তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রয়োজনে উক্তরূপ পয়েন্ট হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পয়েন্ট কর্তনের ক্ষেত্রে, নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি বিবেচনা করিতে হইবে, যথা :-
(ক) লাল বাতি অমান্য করিয়া মোটরযান চালনা;
(খ) পথচারী পারাপারের নির্দিষ্টকৃত স্থানে বা উহার সন্নিকটে বা ওভারটেকিং নিষিদ্ধ এইরূপ কোনো স্থানে ওভারটেক;
(গ) মোটরযান না থামাইয়া সরাসরি প্রধান সড়কে মোটরযান প্রবেশ;
(ঘ) সড়কে নির্দেশিত গতিসীমা লঙ্ঘন;
(ঙ) ইচ্ছাকৃতভাবে পথ আটকাইয়া বা অন্য কোনোভাবে অন্যান্য মোটরযানের চলাচলে বাধা সৃষ্টি;
(চ) একমুখি সড়কে বিপরীত দিক হইতে মোটরযান চালনা;
(ছ) বেপরোয়া ও বিপজ্জনকভাবে মোটরযান চালনা ও ওজনসীমা লঙ্ঘন;
(জ) মদ্যপ বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মোটরযান চালনা; এবং
(ঝ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য যে কোনো বিষয়।
(৩) পয়েন্ট বরাদ্দ, হ্রাস-বৃদ্ধি, কর্তন সম্পর্কিত পদ্ধতি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী ব্যক্তিকে অযোগ্য ঘোষণা এবং লাইসেন্স বাতিল, প্রত্যাহার ও স্থগিতকরণ
১২। (১) কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির নিকট যদি এইরূপ বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তি অসুস্থ্, অপ্রকৃতিস্থ, শারীরিক বা মানসিকভাবে অক্ষম, মদ্যপ, অভ্যাসগত অপরাধী বা অন্য কোনো কারণে মোটরযান চালাইতে অযোগ্য, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী ব্যক্তিকে মোটরযান চালাইবার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করিতে বা তাহার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করিতে পারিবেন।
(২) কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী ব্যক্তি এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান বা লাইসেন্সে প্রদত্ত কোনো শর্ত অথবা সরকার বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক, সময় সময়, জারিকৃত কোনো আদেশ, পরিপত্র বা নীতিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে, কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে তাহার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করিতে পারিবে।
(৩) কোনো ব্যক্তির ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হইলে তিনি কোনো মোটরযান চালাইতে পারিবেন না।
(৪) এই ধারার অধীন কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হইলে সংশ্লিষ্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী ব্যক্তি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, উহা পুনর্বিবেচনার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর কর্তৃপক্ষ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময়ে উহা নিষ্পত্তি করিবে এবং আবেদন মঞ্জুর করা হইলে তাহাকে প্রদত্ত পূর্বের লাইসেন্স পুনরুজ্জীবিত হইবে।
(৬) ড্রাইভিং লাইসেন্সের কর্তনকৃত পয়েন্ট পুনরুদ্ধার এবং পয়েন্ট কর্তনজনিত কারণে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৭) কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের দায়ে উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত হইলে, উক্ত ব্যক্তি যে আদালত কর্তৃক দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত হইয়াছেন, সেই আদালত আইনে অনুমোদিত দণ্ডাদেশের অতিরিক্ত হিসাবে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স ধারণ বা নির্দিষ্ট শ্রেণি বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালনার অযোগ্য ঘোষণা বা, ক্ষেত্রমত, উক্ত ব্যক্তির ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করিতে পারিবে।
(৮) এই ধারার অধীন ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তিকে অযোগ্য ঘোষণা, অথবা তাহার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হইলে, তাহা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রেকর্ডভুক্ত করিতে হইবে।
মোটরযান চালকের নিয়োগের শর্ত, ইত্যাদি
১৩। (১) কোনো ব্যক্তির ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকিলে বা ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হইলে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাহাকে মোটরযান চালক হিসাবে নিয়োগ করিতে বা মোটরযান চালাইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে না।
(২) বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) অনুযায়ী লিখিতভাবে চুক্তি সম্পাদন ও নিয়োগপত্র প্রদান ব্যতীত, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তিকে গণপরিবহণের চালক হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবেন না এবং কোনো ব্যক্তিও গণপরিবহণের চালক হিসাবে নিযুক্ত হইতে পারিবেন না।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো গণপরিবহণের চালক তাহার নিয়োগপত্র এবং মোটরযান চালনা সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্র (documents) গণপরিবহণে সংরক্ষণ করিবেন।
(৪) গণপরিবহণের চালক নিয়োগের শর্ত, নিয়োগপত্র প্রদানের পদ্ধতি, চুক্তি সম্পাদন ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
তৃতীয় অধ্যায়
কন্ডাক্টর লাইসেন্স
কন্ডাক্টর লাইসেন্স
১৪। (১) কোনো ব্যক্তি কন্ডাক্টর লাইসেন্স ব্যতীত কোনো গণপরিবহণে কন্ডাক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে পারিবেন না।
(২) কন্ডাক্টর লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি, মেয়াদ, নবায়ন, স্থগিত, প্রত্যাহার ও বাতিল এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
কন্ডাক্টর নিয়োগ, ইত্যাদি
১৫। (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) অনুযায়ী লিখিতভাবে চুক্তি সম্পাদন ও নিয়োগপত্র প্রদান ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে গণপরিবহণে কন্ডাক্টর হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবে না।
(২) কন্ডাক্টর নিয়োগের শর্ত, নিয়োগপত্র প্রদানের পদ্ধতি, চুক্তি সম্পাদন ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
চতুর্থ অধ্যায়
মোটরযান রেজিস্ট্রেশন
মোটরযান রেজিস্ট্রেশন
১৬। (১) কোনো ব্যক্তি বা মোটরযান মালিক রেজিস্ট্রেশন সনদ ব্যতীত সড়ক, মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে মোটরযান চালাইতে বা চালাইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না।
(২) কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা মোটরযান মালিক কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে, নির্ধারিত ফিস এবং ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য নির্ধারিত চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে, মোটরযানের রেজিস্ট্রেশনের জন্য লিখিতভাবে আবেদন করিবেন।
(৩) কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা মোটরযান মালিক রেজিস্ট্রেশন নম্বরপ্লেট সংযোজন ও প্রদর্শন ব্যতীত মোটরযান চালাইতে বা চালাইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না।
(৪) মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের আবেদন পদ্ধতি, ফি, আবেদন মঞ্জুর, প্রত্যাখ্যান, মেয়াদ, নবায়ন ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৫) প্রাইম মুভার এবং ট্রেইলারের জন্য পৃথক পৃথক রেজিস্ট্রেশন করিতে হইবে এবং পৃথক পৃথক রেজিস্ট্রেশন নম্বরপ্লেট প্রদর্শন করিতে হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, আর্টিকুলেটেড মোটরযানের ক্ষেত্রে, প্রাইম মুভারের সহিত সংযুক্ত একটি সেমি-ট্রেইলারের জন্য পৃথক রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন হইবে না।
(৬) প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ব্যবহৃত মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট বাহিনীর স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিজস্ব পদ্ধতিতে সম্পন্ন করিতে হইবে এবং উক্তরূপ রেজিস্ট্রেশন সমগ্র বাংলাদেশে মোটরযান চালাইবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত মোটরযান ইহার আওতাবহির্ভূত থাকিবে।
(৭) কোনো বিদেশি দূতাবাস বা আন্তর্জাতিক সংস্থার কোনো মোটরযান বাংলাদেশে বিক্রয় বা হস্তান্তর করা হইলে, উহা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমতিক্রমে, সংশ্লিষ্ট ক্রেতার অনুকূলে পুনঃরেজিস্ট্র্রেশন করিতে হইবে।
ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার ও প্রদর্শনে বিধি-নিষেধ
১৭। কোনো ব্যক্তি তাহার অনুকূলে প্রদত্ত রেজিস্ট্রেশন সনদ বিকৃত বা পরিবর্তন করিতে পারিবেন না, বা কোনোরূপ নকল, ভুয়া বা জাল রেজিস্ট্রেশন সনদ ব্যবহার প্রদর্শন করিতে পারিবেন না।
অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশন
১৮। (১) কোনো মোটরযান মালিক বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষের নিকট অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফি প্রদান সাপেক্ষে, আবেদন করিতে পারিবে।
(২) অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের আবেদন পদ্ধতি, ফরম, ফি, আবেদন মঞ্জুর, প্রত্যাখ্যান, মেয়াদ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
রেজিস্ট্রেশনের স্থান
১৯। (১) মোটরযান মালিকের স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানার অধিক্ষেত্রে অবস্থিত রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করিতে হইবে।
(২) কোনো মোটরযানের মালিকের ঠিকানা পরিবর্তন হইলে, সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ, মালিক কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে, উক্তরূপ আবেদনের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে পরিবর্তিত ঠিকানা নির্ধারিত পদ্ধতিতে লিপিবদ্ধ করিবে।
মোটরযান প্রদর্শন
২০। (১) কর্তৃপক্ষের সম্মুখে পরিদর্শনের জন্য নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে মোটরযান প্রদর্শন করিতে হইবে, যথা :-
(ক) রেজিস্ট্রেশনের সময়;
(খ) রেজিস্ট্রেশন সনদে মালিকানা পরিবর্তন রেকর্ডভুক্তকরণের সময়;
(গ) রেজিস্ট্রিকৃত মোটরযানের কোনো কারিগরি, অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক পরিবর্তনের সময়; এবং
(ঘ) মোটরযানের ফিটনেস সনদ গ্রহণের সময়।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মোটরযান প্রদর্শন করিতে ব্যর্থ হইলে কর্তৃপক্ষ, ক্ষেত্রমত, রেজিস্ট্রেশন বা মালিকানা পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য রেকর্ডভুক্তকরণে বা কারিগরি, অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক পরিবর্তন করিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিবে।
মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তন
২১। (১) কোনো মোটরযানের মালিকানা হস্তান্তর করা হইলে, হস্তান্তরের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে হস্তান্তরকারী কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে অবহিত করিবেন এবং উহার অনুলিপি হস্তান্তরগ্রহীতার নিকট প্রেরণ করিবেন।
(২) যে কোনো কারণে মালিকানা পরিবর্তন হউক না কেন, উহা পরিবর্তন বা হস্তান্তরের কারণে হস্তান্তরগ্রহীতা হস্তান্তরের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে স্বীয় নামে রেজিস্ট্রেশনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে আবেদন করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (১) এবং (২) এর অধীন তথ্য প্রাপ্তির এবং আবেদন গ্রহণের পর কর্তৃপক্ষ অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে হস্তান্তরগ্রহীতার নামে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করিবে এবং উহা সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিবে।
(৪) এই ধারার অধীন অন্যান্য বিষয় ও ফি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
লীজ বা কিস্তিতে ক্রয়ের চুক্তি আবদ্ধ (Hire-purchase) মোটরযানসমূহের রেজিস্ট্রেশনের বিশেষ বিধান
২২। (১) লীজ বা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্ত সম্বলিত চুক্তির মাধ্যমে ক্রয়কৃত কোনো মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষ রেজিস্ট্রেশন সনদে উক্তরূপ চুক্তি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করিবে।
(২) এই অধ্যায়ের অধীন রেজিস্ট্রিকৃত কোনো মোটরযান কোনো ব্যক্তির সহিত লীজ বা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে কোনো বিক্রয় চুক্তিতে আবদ্ধ থাকিলে, কর্তৃপক্ষ, হস্তান্তরকারী ও হস্তান্তরগ্রহীতার আবেদনের প্রেক্ষিতে, রেজিস্ট্রেশন সনদে উক্তরূপ চুক্তি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করিবে।
(৩) কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট পক্ষগণ কর্তৃক লীজ বা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে বিক্রয় চুক্তির অবসান ঘটিয়াছে মর্মে নিশ্চিত হইলে, উপ-ধারা (১) বা (২) অনুসারে রেজিস্ট্রেশন সনদে লিপিবদ্ধ তথ্যাদি বাতিল করিতে পারিবে।
(৪) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন লীজ বা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়, রেজিস্ট্রেশন সনদে মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যের অন্তর্ভুক্তি এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
মোটরযানের রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বা সীমা নির্ধারণের ক্ষমতা
২৩। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান বা কোনো এলাকার জন্য মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বা সীমা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
মোটরযান রেজিস্ট্রেশন স্থগিত, বাতিল, ইত্যাদি
২৪। (১) এই আইন বা বিধি দ্বারা নির্ধারিত মোটরযান রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত শর্তাবলির কোনো শর্ত ভঙ্গ করিলে বা এই আইনের পরিপন্থি কোনো কার্য সম্পাদন করিলে, কর্তৃপক্ষ, শুনানি গ্রহণ ও কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন স্থগিত বা, ক্ষেত্রমত, বাতিল করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত বা বাতিল করা হইলে, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আপিল দায়ের করা হইলে সরকার নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে উহা নিষ্পত্তি করিবে।
(৪) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
মোটরযানের ফিটনেস
২৫। (১) মোটরযানের ফিটনেস সনদ ব্যতীত বা মেয়াদ উত্তীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করিয়া, বা ইকোনোমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিগ্রস্ত, রংচটা, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত নির্ধারিত রং পরির্বতন করিয়া জরাজীর্ণ, বিবর্ণ বা পরিবেশ দূষণকারী কোনো মোটরযান চালনা বা চালনার অনুমতি প্রদান করা যাইবে না।।
(২) উপ-ধারা (২) এর বিধান অনুযায়ী ফিটনেসের অনুপযোগী কোনো মোটরযানের ক্ষেত্রে ফিটনেস সনদ প্রদান করা হইলে, সনদ প্রদানকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
ট্যাক্স টোকেন
২৬। (১) Motor Vehicles Tax Act, 1932 (Act No. I of 1932) এবং তদধীন প্রণীত বিধির অনুযায়ী অব্যাহতিপ্রাপ্ত মোটরযান ব্যতীত অন্য কোনো মোটরযান, ট্যাক্স টোকেন ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করিয়া, চালনা বা চালনার অনুমতি প্রদান করা যাইবে না।
(২) কোনো মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স টোকেন সংগ্রহের জন্য সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত সড়ক কর নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিয়মিত পরিশোধ করিতে হইবে।
পঞ্চম অধ্যায়
পরিবহণ কমিটি, রুট পারমিট, ইত্যাদি
যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি
২৭। (১) কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রতিটি মহানগর এলাকা, বিভাগ এবং জেলায় একটি করিয়া যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি গঠন ও উহার কর্মপরিধি নির্ধারণ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশের যে কোনো এলাকার জন্য পৃথক পরিবহণ কমিটি গঠন ও উহার কর্মপরিধি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন গঠিত কমিটিতে সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রের পরিবহন মালিক সমিতি এবং শ্রমিক সংগঠন হইতে অন্যূন ১ (এক) জন করিয়া প্রতিনিধি থাকিবেন।
রুট পারমিট
২৮। (১) কর্তৃপক্ষ বা পরিবহণ কমিটি বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী কর্তৃক প্রদত্ত বা, ক্ষেত্রমত, প্রতিস্বাক্ষরিত রুট পারমিট ব্যতীত, কোনো পরিবহণযানের মালিক পাবলিক প্লেসে পরিবহণযান ব্যবহার করিতে বা ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না :
তবে শর্ত থাকে যে, রুট পারমিটে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকিলেও,
(ক) কোনো স্টেইজ ক্যারিজ কন্ট্রাক্ট ক্যারিজ হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না;
(খ) কোনো স্টেইজ ক্যারিজে পণ্য পরিবহন করা যাইবে না; এবং
(গ) পরিবহণযানের মালিক স্টেইজ ক্যারিজে ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যক্তি বা পণ্য পরিবহণ করিতে পারিবেন না।
(২) ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা মৌসুমী ব্যবসা উপলক্ষে নির্ধারিত রুটের বাহিরে বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময় ও শর্তপূরণ সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ বা পরিবহণ কমিটি বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী পরিবহণযান চলাচলের অস্থায়ী অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
(৩) কর্তৃপক্ষ বা পরিবহণ কমিটি বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে পরিবহণযানের রুট পারমিট পরিবর্তন বা, ক্ষেত্রমত, রুট পারমিটের শর্ত ভঙ্গের কারণে উহা স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে।
(৪) এই ধারার অধীন প্রদত্ত রুট পারমিট সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
বিদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে রুট পারমিট প্রদান, ইত্যাদি
২৯। (১) কোনো বিদেশি নাগরিক কর্তৃক নিজ দেশের ব্যক্তিগত মোটরযান, গণপরিবহণ বা পণ্যবাহী মোটরযান লইয়া বাংলাদেশে প্রবেশ, পোর্ট অব এন্ট্রিতে ফি প্রদান, অবস্থান, মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের পৃষ্ঠাঙ্কন (endorsement) বা প্রতিস্বাক্ষর, এবং রুট পারমিট প্রদান সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদেশি পণ্যবাহী মোটরযানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিদ্যমান এক্সেল ওজন সীমা, এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন পরিচালনা এবং শুল্ক সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুসরণ করিতে হইবে।
রুট পারমিট হইতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত পরিবহন যান
৩০। (১) এই অধ্যায়ের অধীন রুট পারমিট সংক্রান্ত বিধান নিম্নবর্ণিত পরিবহণযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যথা :-
(ক) সরকার বা সরকারের পক্ষে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার মালিকানাধীন পরিবহনযান;
(খ) সরকার কর্তৃক অধিযাচনকৃত সরকারি কাজে ব্যবহৃত যে কোনো পরিবহণযান;
(গ) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিকানাধীন বা চুক্তিবদ্ধ নাগরিক সেবা প্রদানে ব্যবহৃত পরিবহণযান;
(ঘ) শৃঙ্খলা-বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের জন্য ব্যবহৃত পরিবহণযান;
(ঙ) মৃতদেহ বহন ও সৎকারে নিয়োজিত পরিবহণযান;
(চ) বিকল মোটরযানকে টানিয়া লইবার কাজে নিয়োজিত পরিবহণযান;
(ছ) যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মোটরযান প্রস্তুত বা নির্মাণ করেন অথবা চ্যাসিসে যুক্ত করিবার জন্য বডি নির্মাণ করেন, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কেবলমাত্র উক্তরূপ উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গেজেট বিজ্ঞপ্তি দ্বারা নির্ধারিত শর্তাবলি সাপেক্ষে ব্যবহৃত পরিবহণযান;
(জ) সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবহণযান;
(ঝ) সরকার বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্বীকৃত মোটরযান চালনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত পরিবহণযান;
(ঞ) ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার, ভ্রাম্যমাণ ঔষধালয়, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট এবং অনুরূপ কার্যে ব্যবহৃত ভ্রাম্যমাণ পরিবহণযান; এবং
(ট) প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে গন্তব্যস্থানে পৌঁছাইবার জন্য ভিন্নপথে চালনা করা প্রয়োজন এইরূপ কোনো পরিবহণযান।
(২) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত রুট পারমিট হইতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত পরিবহণযানের শ্রেণি পুনঃনির্ধারণ বা সংশোধন করিতে পারিবে।
মোটরযানের বাণিজ্যিক ব্যবহার
৩১। (১) রুট পারমিট প্রযোজ্য নহে, এইরূপ কোনো মোটরযান দ্বারা বাণিজ্যিক কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা যাইবে না :
তবে শর্ত থাকে যে, রুট পারমিট ব্যতীত, চালনা করা যায় এইরূপ মোটরযানকে কর্তৃপক্ষ বিশেষ ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারায় “বিশেষ ধরণের বাণিজ্যিক কার্যক্রম” বলিতে ব্যক্তিগত মোটরযানকে নির্ধারিত শর্তাধীনে ভাড়ায় চালনা করাকে বুঝাইবে।
(২) সরকার বা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত পরিবহণ ব্যবসার সহিত সংশ্লিষ্ট নহে এইরূপ কোনো ধরনের ভ্রাম্যমাণ বাণিজ্যিক কার্যক্রম মোটরযানে পরিচালনা করা যাইবে না বা পরিচালনার অনুমতি প্রদান করা যাইবে না :
তবে শর্ত থাকে যে, সরকারি কর্মসূচির অধীন বিক্রয়, হস্তান্তর বা প্রমোশনাল কার্যক্রম ইহার আওতাভুক্ত হইবে না।
ষষ্ঠ অধ্যায়
যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, ইত্যাদি
সড়ক পরিবহণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ক্ষমতা
৩২। (১) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী, জনস্বার্থে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এবং প্রয়োজনে নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থানীয়ভাবে প্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সর্বত্র বা নির্দিষ্ট কোনো এলাকায়, কোনো সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার বা টানেলে যে কোনো মেয়াদের জন্য সকল বা যে কোনো শ্রেণির মোটরযান চলাচল নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।
(২) কোনো মোটরযান দ্বারা চালক, যাত্রী, সড়ক ব্যবহারকারী বা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকিলে, সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, উক্ত মোটরযান বা কোনো শ্রেণির মোটরযানকে সড়ক হইতে প্রত্যাহার বা সড়কে চলাচল বন্ধের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
মোটরযানের সংখ্যা নির্ধারণ
৩৩। (১) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কর্তৃপক্ষ, জনস্বার্থে, সমগ্র বাংলাদেশ বা যে কোনো এলাকার জন্য যে কোনো ধরনের মোটরযানের সংখ্যা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কোনো এলাকার মোটরযানের সংখ্যা উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত সংখ্যার অধিক হইলে, অতিরিক্ত মোটরযানকে চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য এলাকায় চলাচলের অনুমতি প্রদান করা যাইবে।
গণপরিবহনের আসন সংখ্যা ও ভাড়া নির্ধারণ
৩৪। (১) কর্তৃপক্ষ বা যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি গণপরিবহণের নারী, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুদের জন্য আসন সংখ্যা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, গণপরিবহণের জন্য ভাড়ার হার ও সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ বা পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল ও বিশেষ সুবিধাসম্বলিত গণপরিবহণের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে উহা প্রযোজ্য হইবে না :
তবে আরও শর্ত থাকে যে, সরকার বা কর্তৃপক্ষ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল ও বিশেষ সুবিধাসম্বলিত গণপরিবহণের ভাড়া যুক্তিসংগতভাবে নির্ধারণের যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৩) কোনো গণপরিবহণ, সহজে দৃশ্যমান স্থানে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন ব্যতীত, যাত্রী পরিবহণ করিতে পারিবে না।
(৪) কোনো গণপরিবহণের মালিক, চালক, কন্ডাক্টর, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় করিতে পারিবে না।
কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মিটার, ভাড়া, ইত্যাদি
৩৫। (১) কোনো কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মালিক বা তাহার প্রতিনিধি বা প্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দিন ভিত্তিক জমার অতিরিক্ত অর্থ দাবি বা আদায় করিতে পারিবে না।
(২) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের ভাড়া সংক্রান্ত মিটার সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ায় ক্রমাঙ্কন (calibration) করিবার পর উহাতে অবৈধভাবে কোনো ধরনের পরিবর্তন করিতে বা উক্তরূপ পরিবর্তনে কোনো সহায়তা করিতে পারিবে না।
(৩) কোনো কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মালিক বা চালক রুট পারমিটে বর্ণিত এলাকার মধ্যে যেকোনো গন্তব্যে মিটারে যাইতে বাধ্য থাকিবেন এবং মিটারে প্রদর্শিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ দাবি বা আদায় করিতে পারিবেন না।
ইকনোমিক লাইফ নির্ধারণ
৩৬। সরকার, বা সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কর্তৃপক্ষ, যে কোনো ধরনের মোটরযানের ইকনোমিক লাইফ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারণ করিতে পারিবে।
মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী অবৈধ স্থাপনা অপসারণ
৩৭। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো ব্যক্তি, ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে, মহাসড়কের মালিকানাধীন জায়গায় বা ক্ষেত্রমত, মহাসড়কের ঢাল (slope) হইতে উভয় পার্শ্বে ১০ (দশ) মিটারের মধ্যে অবৈধভাবে কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী স্থাপনা (যেমন: হাট-বাজার, দোকান, ইত্যাদি) নির্মাণ করিতে পারিবেন না।
(২) মহাসড়কের মালিকানাধীন জায়গায় বা ক্ষেত্রমত, মহাসড়কের ঢাল (slope) হইতে উভয় পার্শ্বে ১০ (দশ) মিটারের মধ্যে অবৈধভাবে নির্মিত কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী স্থাপনা মহাসড়কে নিরাপদে মোটরযান চলাচল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পুলিশ বা কর্তৃপক্ষ বা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বা তৎকর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে উহা অপসারণ করিতে পারিবে।
টার্মিনাল উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা এবং চাঁদাবাজি নিষিদ্ধকরণ
৩৮। (১) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সুষ্ঠুভাবে যাত্রী বা পণ্য উঠা-নামা করিবার নিমিত্ত পরিবহণযান টার্মিনাল উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে টার্মিনাল উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার ব্যয় নির্বাহের জন্য কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান টার্মিনাল চার্জ নির্ধারণ করিতে পারিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ ব্যতীত টার্মিনালে কোনো পরিবহণযান বা মোটরযান প্রবেশ বা বাহির হইবার সময়, বা সড়ক, মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে চলাচলের সময় উহার নিকট হইতে কোনোরূপ অর্থ অবৈধভাবে আদায় করা যাইবে না।
কর্মঘণ্টা নির্ধারণ
৩৯। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) এর সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া পরিবহণ যানের চালক, কন্ডাক্টর, হেলপার-কাম-ক্লিনারগণের কর্মঘণ্টা ও বিরতিকাল নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা পরিবহন যানের চালক, কন্ডাক্টর, হেলপার-কাম-ক্লিনার, উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত কর্মঘণ্টা ও বিরতিকাল মানিয়া চলিবেন।
সপ্তম অধ্যায়
মোটরযানের নির্মাণ, সরঞ্জাম বিন্যাস ও রক্ষণাবেক্ষণ
মোটরযানের নির্মাণ, সরঞ্জাম বিন্যাস ও রক্ষণাবেক্ষণ
৪০। (১) মোটরযান নির্মাণ, সরঞ্জামাদির বিন্যাস ও রক্ষণাবেক্ষণ এমনভাবে করিতে হইবে যাহাতে মোটরযান চালক উহা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করিতে সক্ষম হন।
(২) বাংলাদেশে চলাচলের জন্য মোটরযান ডান-দিক-চালিত স্টিয়ারিং বিশিষ্ট হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিশেষ ধরনের কাজে ব্যবহৃত মোটরযানের জন্য ইহার ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যের স্টিয়ারিং অনুমোদন করিতে পারিবে।
(৩) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত কারিগরি বিনির্দেশের (technical specification) ব্যত্যয় ঘটাইয়া কোনো মোটরযানের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, আসন বিন্যাস, হুইল বেইজ, রিয়ার ওভার হ্যাংগ, ফ্রন্ট ওভার হ্যাংগ, সাইড ওভার হ্যাংগ, চাকার আকৃতি, প্রকৃতি ও অবস্থা, ব্রেক ও স্টিয়ারিং গিয়ার, হর্ন, সেফটি গ্লাস, সংকেত প্রদানের লাইট ও রিফ্লেক্টর, স্পিড গভর্নর, ধোঁয়া নির্গমণ ব্যবস্থা ও কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ, শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা বা সমজাতীয় অন্য কোনো কিছু পরিবর্তন করা যাইবে না।
(৪) রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরযানের কোনো কারিগরি, অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(৫) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিশেষ ধরনের মোটরযানের রং নির্ধারণ করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ নির্ধারিত রং সরকার বা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত পরিবর্তন করা যাইবে না।
অষ্টম অধ্যায়
ট্রাফিক ও ওজনসীমা নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ দূষণ, ইত্যাদি
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ
৪১। সরকার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা ট্রাফিক চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং সড়ক নিরাপত্তা বিধানে মোটরযানের ব্যবহার, গতিসীমা, পার্কিং এলাকা, ট্রাফিক সাইন ও সংকেত ব্যবহার, চলাচল ইত্যাদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।
ট্রাফিক সাইন ও সংকেতের ব্যবহার
৪২। (১) সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান মোটরযানের গতিসীমা, ওজন, পার্কিং ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং সড়ক নিরাপত্তা বিধানকল্পে সড়ক, মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে ট্রাফিক সাইন স্থাপন, প্রতিস্থাপন বা অপসারণ করিতে পারিবে এবং কোনো সংকেত উত্তোলন বা প্রদর্শন করিতে পারিবে।
(২) প্রত্যেক মোটরযান চালক, পথচারী বা সড়ক ব্যবহারকারী ট্রাফিক সাইন, সংকেত, ইত্যাদি মানিয়া চলিবে।
(৩) প্রত্যেক সড়ক ব্যবহারকারীকে সড়ক বা মহাসড়ক পারাপারে নির্দিষ্ট জেব্রা ক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস বা অনুরূপ সুবিধা, যদি থাকে, ব্যবহার করিতে হইবে।
(৪) সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বা মোটরযান পরিদর্শক বা পোশাকধারী কোনো পুলিশ অফিসার প্রয়োজনে কোনো চালককে মোটরযান থামাইতে এবং যুক্তিসঙ্গত সময় পর্যন্ত মোটরযান স্থির রাখিতে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
এক্সেল ওজন, ওজনসীমা নিয়ন্ত্রণ, ইত্যাদি
৪৩। (১) কোনো মোটরযান চালক বা কোনো ব্যক্তি সড়ক বা মহাসড়কে অনুমোদিত লেডেন ওজন, ট্রেইন ওজন বা এক্সেল ওজন এর অতিরিক্ত ওজন বহন করিয়া কোনো মোটরযান চালাইতে পারিবেন না বা চালাইবার অনুমতি প্রদান বা বাধ্য করিতে পারিবেন না।
(২) কোনো মোটরযান মালিক, প্রতিষ্ঠান, চালক বা অন্য কোনো ব্যক্তি রেজিস্ট্রেশন সনদে উল্লিখিত আনলেডেন ওজন বৃদ্ধি করিতে পারিবেন না।
(৩) সরকার, বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, সড়ক বা মহাসড়কে চলাচলকারী মোটরযান বা ট্রেইলর এর লেডেন ওজন, ট্রেইন ওজন বা এক্সেল ওজন পরীক্ষা করিতে পারিবে এবং অনুমোদিত ওজনের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করিতে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত ক্ষেত্রে মোটরযান চালক অনুমোদিত ওজনের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করিতে বাধ্য থাকিবেন।
(৪) উপ-ধারা (৩) তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, সড়ক বা মহাসড়কে চলাচলকারী মোটরযানের ওজন পরীক্ষায় ওজনের অতিরিক্ত ওজনের জন্য ক্রমবর্ধমান হারে জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৫) সরকার, গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত জরিমানার হার নির্ধারণ বা পুনঃনির্ধারণ করিবে।
(৬) সরকার, বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, মোটরযান বা ট্রেইলর এর সর্বোচ্চ লেডেন ওজন, ট্রেইন ওজন বা এক্সেল ওজন, গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারণ বা পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।
(৭) অনুমোদিত লেডেন ওজন, ট্রেইন ওজন বা এক্সেল ওজন এর অতিরিক্ত ওজন বহন করিয়া কোনো মোটরযান সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, কালভার্ট, বেইলি ব্রিজ, সড়কের ডিভাইডার, সড়ক বা মহাসড়কের পার্শ্বস্থ অবকাঠামো ইত্যাদির ক্ষতিসাধন করিলে, সংশ্লিষ্ট মোটরযানের মালিক ও চালক সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ ৩ (তিন) মাসের মধ্যে পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবে।
(৮) মোটরযানের মালিক ও চালক উপ-ধারা (৭) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পরিশোধে ব্যর্থ হইলে, Public Demand Recovery Act, 1913 অনুযায়ী উক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাইবে।
মোটরযানের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ
৪৪। (১) কর্তৃপক্ষ, সড়ক বা মহাসড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সহিত পরামর্শক্রমে, বিভিন্ন শ্রেণির সড়কে মোটরযানের গতিসীমা নির্ধারণ বা পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কোনো মোটরযানের চালক সড়ক বা মহাসড়কে নির্ধারিত গতিসীমার অতিরিক্ত গতিতে বা বেপরোয়াভাবে মোটরযান চালাইতে পারিবেন না।
(৩) কোনো মোটরযান চালক সড়ক বা মহাসড়কে বিপজ্জনকভাবে বা অননুমোদিতভাবে ওভারটেকিং করিতে পারিবেন না বা মোটরযান চলাচলে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিতে পারিবেন না।
শব্দমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
৪৫। (১) সরকার বা সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সময় সময়, মোটরযানের শব্দমাত্রার সীমা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কোনো মোটরযান চালক উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত শব্দমাত্রার অতিরিক্ত উচ্চমাত্রার কোনোরূপ শব্দ সৃষ্টি করিতে পারিবেন না।
(৩) সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা কর্তৃক, আদেশ দ্বারা, ঘোষিত নীরব এলাকা অতিক্রমকালে কোনো মোটরযান চালক কোনোরূপ হর্ন বাজাইতে পারিবেন না
(৪) কোনো মোটরযান চালক, মালিক বা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, নির্ধারিত শব্দমাত্রার অতিরিক্ত শব্দমাত্রা সৃষ্টিকারী কোনো যন্ত্র, যন্ত্রাংশ বা হর্ন মোটরযানে স্থাপন, পুনঃস্থাপন বা ব্যবহার করিতে পারিবে না বা করিবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে না।
(৫) উপ-ধারা (২) ও (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অ্যাম্বুলেন্স, অগ্নি-নির্বাপক যান, জরুরি উদ্ধার কাজে নিয়োজিত যান ও জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে ব্যবহৃত মোটরযানে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত শব্দমাত্রার হর্ন সংযোজন করা যাইবে।
(৬) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও তদধীন প্রণীত বিধির বিধানাবলি, যতদূর সম্ভব, অনুসরণ করিতে হইবে।
পরিবেশ দূষণকারী, ঝুঁকিপূর্ণ ইত্যাদি মোটরযান চালনার বিধি-নিষেধ
৪৬। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ১নং আইন) ও তদধীন প্রণীত বিধির সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, পরিবেশ দূষণকারী ধোঁয়া নির্গমন বা অন্য কোনো প্রকার নিঃসরণ বা নির্গমনের মাত্রা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কোনো মোটরযান সরকার নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত পরিবেশ দূষণকারী ধোঁয়া নির্গমন বা অন্য কোনো প্রকার নিঃসরণ বা নির্গমন করিলে, উক্ত মোটরযানের চালক বা মালিক বা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান উহা চালনা করিতে পারিবে না।
(৩) পরিবেশ দূষণকারী কোনো যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ মোটরযানে স্থাপন, পুনঃস্থাপন বা ব্যবহার করা যাইবে না বা ব্যবহার করিবার অনুমতি প্রদান করা যাইবে না।
(৪) কোনো ব্যক্তি ত্রুটিপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ বা নিষিদ্ধ ঘোষিত বা বিধি-নিষেধ আরোপকৃত বা সড়ক বা মহাসড়কে চলাচলের অনুপযোগী কোনো মোটরযান চালনা বা চালনার অনুমতি প্রদান করিবেন না।
ব্যাখ্যা। – এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘সড়ক বা মহাসড়কে চলাচলের অনুপযোগী’ অভিব্যক্তি অর্থে নসিমন, করিমন, ভড-ভডি, ইজি-বাইক, মোটরচালিত রিক্সা বা ভ্যান, বা অনুরূপ শ্রেণির থ্রি-হুইলার এবং সরকার বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক, সময় সময়, নিষিদ্ধ বা বিধি-নিষেধ আরোপকৃত অনুরূপ যে কোনো যানবাহনকে বুঝাইবে।
মোটরযান পার্কিং ও থামাইবার স্থান
৪৭। (১) সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বা কোনো প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব অধিক্ষেত্রের মধ্যে, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বাংলাদেশ পুলিশের পরামর্শ গ্রহণ করিয়া, সময় সময়, মোটরযান পার্কিং এলাকা, থামাইবার স্থান এবং যাত্রী ও পণ্য উঠা-নামার স্থান ও সময় নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত এলাকা ব্যতীত মোটরযান পার্কিং করা যাইবে না এবং যাত্রী বা পণ্য উঠা-নামার নির্ধারিত স্থান ও সময় ব্যতীত মোটরযান থামানো যাইবে না।
(৩) কোনো যাত্রী বা সড়ক ব্যবহারকারী মোটরযান চালক বা শ্রমিককে উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত পার্কিং এলাকা ব্যতীত অন্য কোনো এলাকায় মোটরযান পার্কিং করিতে এবং যাত্রী ও পণ্য উঠা-নামার নির্ধারিত স্থান ও সময় ব্যতীত মোটরযান থামাইতে অনুরোধ বা বাধ্য করিতে পারিবেন না।
(৪) পার্কিং সুবিধা প্রদানকারী কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবহণ কমিটির অনুমোদনক্রমে, মোটরযানের পার্কিং ফি আদায় করিতে পারিবে।
মহাসড়কের ব্যবহার
৪৮। (১) জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়ক সাধারণত দ্রুতগতির মোটরযান চলাচলে ব্যবহৃত হইবে, এবং উক্ত ক্ষেত্রে জেলা মহাসড়ক হইতে আঞ্চলিক মহাসড়কে এবং আঞ্চলিক মহাসড়ক হইতে জাতীয় মহাসড়কে দ্রুতগতির মোটরযান প্রবেশকালে যথাক্রমে আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়কে চলাচলরত মোটরযান অগ্রাধিকার পাইবে।
(২) এক মহাসড়ক হইতে অন্য মহাসড়কে মোটরযান প্রবেশের ক্ষেত্রে যে মহাসড়কে মোটরযানের সংখ্যাধিক্য রহিয়াছে সেই মহাসড়কে চলাচলরত মোটরযান অগ্রাধিকার পাইবে।
মোটরযান চলাচলের সাধারণ নির্দেশাবলি
৪৯। (১) মোটরযান চলাচলে নিম্নবর্ণিত নির্দেশাবলি মানিয়া চলিতে হইবে, যথা:-
প্রথম অংশ
(ক) মদ্যপান বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়া কোনো চালক মোটরযান চালাইতে পারিবেন না;
(খ) মদ্যপান বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়া কোনো কন্ডাক্টর বা মোটরযান শ্র্রমিক মোটরযানে অবস্থান করিতে পারিবেন না;
(গ) মোটরযান চালক কোনো অবস্থাতে কন্ডাক্টর বা মোটরযান শ্রমিককে মোটরযান চালনার দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবেন না;
(ঘ) সড়ক বা মহাসড়কে নির্ধারিত অভিমূখ ব্যতীত বিপরীত দিক হইতে মোটরযান চালানো যাইবে না;
(ঙ) সড়ক বা মহাসড়কে নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে বা উল্টো পার্শ্বে বা ভুল দিকে (wrong side) মোটরযান থামাইয়া যানজট বা অন্য কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাইবে না;
(চ) চালক ব্যতীত মোটরসাইকেলে একজনের অধিক সহযাত্রী বহন করা যাইবে না এবং চালক ও সহযাত্রী উভয়কে যথাযথভাবে হেলমেট ব্যবহার করিতে হইবে;
(ছ) চলন্ত অবস্থায় চালক, কন্ডাক্টর বা অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো যাত্রীকে মোটরযানে উঠাইতে বা নামাইতে পারিবেন না;
(জ) প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য গণপরিবহনে অনুকূল সুযোগ-সুবিধা রাখিতে হইবে;
(ঝ) মোটরযানের বডির সামনে, পিছনে, উভয়পার্শ্বে, বডির বাহিরে বা ছাদে কোনো প্রকার যাত্রী বা পণ্য বা মালামাল বহন করা যাইবে না;
(ঞ) সরকার বা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কোনো মোটরযানে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বা প্রচার করা যাইবে না;
(ট) কোনো মহাসড়ক, সড়ক, ফুটপাত, ওভারপাস বা আন্ডারপাসে মোটরযান মেরামতের নামে যন্ত্রাংশ বা মালামাল রাখিয়া বা দোকান বসাইয়া বা অন্য কোনোভাবে দ্রব্যাদি রাখিয়া যানবাহন বা পথচারী চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাইবে না;
(ঠ) সড়কের সংলগ্ন ফুটপাতের উপর দিয়া কোনো প্রকার মোটরযান চলাচল করিতে পারিবে না;
(ড) কোনো ব্যক্তি কোনো মোটরযানের মালিক বা কোনো আইনানুগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালাইয়া বাহিরে লইয়া যাইতে পারিবেন না; এবং
(ঢ) আইনানুগ কর্তৃপক্ষ বা যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত কোনো ব্যক্তি দাঁড়াইয়া থাকা কোনো মোটরযানে প্রবেশ বা আরোহন করিবে না।
দ্বিতীয় অংশ
(ক) মোটরযান চালক মোটরযান চালনারত অবস্থায় মোবাইল ফোন বা অনুরূপ সরঞ্জাম ব্যবহার করিতে পারিবেন না;
(খ) মোটরযান চালক সিটবেল্ট বাঁধা ব্যতীত মোটরযান চালাইতে পারিবেন না;
(গ) কোনো যাত্রী চলন্ত মোটরযানে চালকের মনোসংযোগের ব্যাঘাত ঘটে বা মোটরযান চালাইতে অসুবিধা হয় এইরূপ কোনো আচরণ বা কর্মকাণ্ড করিতে পারিবেন না;
(ঘ) মহিলা, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং বয়োজ্যেষ্ঠ যাত্রীর জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসিবেন না;
(ঙ) যাত্রীগণের সিটবেল্ট বাঁধা সংক্রান্ত নির্ধারিত বিধান অনুসরণ করিতে হইবে;
(চ) দূরপাল্লার মোটরযানে নির্ধারিত সংখ্যক যাত্রী বা আরোহীর অতিরিক্ত কোনো যাত্রী বা আরোহী বহন করা যাইবে না;
(ছ) কোনো চালক, কন্ডাক্টর বা মোটরযান পরিচালনা সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি পরিবহণযানে যাত্রী সাধারণের সহিত কোনো প্রকার দুর্ব্যবহার বা অসৌজন্যমূলক আচরণ বা হয়রানি করিতে পারিবেন না; এবং
(জ) রাত্রি বেলায় বিপরীত দিক হইতে আগত মোটরযান চালনায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয় এইরূপ হাইবিম ব্যবহার করিয়া মোটরযান চালানো যাইবে না।
(২) সরকার, বা সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সময় সময়, মোটরযান চলাচলের সাধারণ নির্দেশাবলি সংশোধন করিতে পারিবে।
কতিপয় ক্ষেত্রে দায়ী কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ
৫০। (১) এই আইন বা অন্য কোনো আইনের অধীন কোনো সরকারি কর্মচারী তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব বা সেবাপ্রদানে অবহেলা বা ত্রুটিপূর্ণভাবে পালন করিবার কারণে কোনো দুর্ঘটনা সংঘটিত হইলে, উক্ত সরকারি কর্মচারীকে দায়ী করিয়া প্রচলিত আইনে তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
(২) কোনো সড়কের ডিজাইন বা নির্মাণজনিত ত্রুটি বা রক্ষণাবেক্ষণজনিত ত্রুটির কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনার দায়-দায়িত্ব, ক্ষেত্রমত, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বা তদারককারী সংস্থা বা ব্যক্তির উপর একক বা যৌথভাবে বর্তাইবে এবং উহার জন্য দায়ী করিয়া প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
দাহ্য পদার্থ, ইত্যাদি পরিবহনে সতর্কতা
৫১। বিস্ফোরক বা দাহ্য পদার্থ সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি অনুযায়ী অনুমোদিত প্যাকিং ও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন ব্যতীত এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট বিশেষ ধরনের মোটরযানে ও নির্ধারিত সময় ব্যতীত, কোনো বিস্ফোরক বা দাহ্য পদার্থ মোটরযানে পরিবহণ করা যাইবে না।
নবম অধ্যায়
দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা এবং বীমা
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তাহার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান
৫২। কোনো মোটরযান হইতে উদ্ভূত দুর্ঘটনার ফলে কোনো ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা আঘাতপ্রাপ্ত হইয়া মৃত্যুবরণ করিলে, উক্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, তাহার উত্তরাধিকারীগণের পক্ষে মনোনীত ব্যক্তি ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, চিকিৎসার খরচ প্রাপ্য হইবেন।
আর্থিক সহায়তা তহবিল
৫৩। (১) ধারা ৫২ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে বা, ক্ষেত্রমত, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে আর্থিক সহায়তা তহবিল নামে একটি তহবিল গঠিত হইবে।
(২) কর্তৃপক্ষ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে ও পদ্ধতিতে মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে মোটরযানের শ্রেণি বিন্যাস বিবেচনাক্রমে প্রত্যেক মোটরযানের বিপরীতে আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা (contribution) আদায় করিবে।
(৩) মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (২) এর অধীন আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা (contribution) প্রদানে বাধ্য থাকিবে।
(৪) আর্থিক সহায়তা তহবিল ও ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্রাস্টি বোর্ড সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
(৫) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রবিধান দ্বারা কর্মচারীগণের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি নির্ধারিত হইবে।
ট্রাস্টি বোর্ড গঠন
৫৪। (১) ধারা ৫৩ তে উল্লিখিত আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনার উদ্দেশ্যে সরকার একজন চেয়ারম্যানসহ নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করিবে, যথা:-
(ক) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
(খ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(গ) জননিরাপত্তা বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ঘ) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ঙ) স্থানীয় সরকার বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(চ) সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত অন্যূন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ছ) হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি;
(জ) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত অন্যূন পরিচালক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ঝ) সরকার কর্তৃক মনোনীত সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির একজন প্রতিনিধি;
(ঞ) সরকার কর্তৃক মনোনীত সড়ক পরিবহন শ্রমিক সংগঠন বা ফেডারেশনের একজন প্রতিনিধি;
(ট) সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি;
(ঠ) সরকার কর্তৃক নিয়োজিত ট্রাস্টি বোর্ডের সচিব, যিনি উহার সদস্য সচিব হইবেন।
(২) সরকার, প্রয়োজনে যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।
(৩) সরকার কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করিতে পারিবে।
(৪) ট্রাস্টি বোর্ড একটি স্ব-শাসিত সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যালয়
৫৫। (১) ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।
(২) ট্রাস্টি বোর্ড, প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার অধস্তন বা শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যাবলি ও ক্ষমতা
৫৬। (১) ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যাবলি ও ক্ষমতা হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীকে প্রদেয় আর্থিক সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণ ও মঞ্জুর;
(খ) আর্থিক সহায়তা তহবিলের অর্থ বা সম্পত্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে সম্পাদিত হইতেছে কিনা উহা তদারকি ও প্রয়োজনে সম্পাদনের ব্যবস্থাকরণ; এবং
(গ) আর্থিক সহায়তা তহবিলের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যয় মঞ্জুর বা অনুমোদন:
তবে শর্ত থাকে থাকে যে, এই ব্যয় অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকারের এতদ্সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান অনুসরণ করিতে হইবে;
(ঘ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন ও প্রতিপালন।
(২) ট্রাস্টি বোর্ড উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কার্যাবলি সুষ্টুভাবে সম্পাদনের জন্য এক বা একাধিক কমিটি গঠন ও উহার কার্যপরিধি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠন, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা, ইত্যাদি
৫৭। (১) নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠিত হইবে, যথা :-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) মোটরযানের মালিকের নিকট হইতে আদায়কৃত চাঁদা;
(গ) এই আইনের অধীন আদায়কৃত জরিমানার অর্থ;
(ঘ) মালিক সমিতি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(ঙ) মোটর শ্রমিক সংগঠন বা ফেডারেশন কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; এবং
(চ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(২) তহবিলের অর্থ কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।
(৩) ট্রাস্টি বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার তহবিল পরিচালনা ও হিসাব সংরক্ষণ করিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ বা নির্দেশনা অনুযায়ী তহবিল পরিচালনা করা যাইবে।
(৪) তহবিল হইতে ট্রাস্টি বোর্ডের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
(৫) প্রতি অর্থ বৎসরের সমাপ্তিতে ট্রাস্টি বোর্ড আর্থিক সহায়তা তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ এতদুদ্দেশ্যে সরকারের নির্দেশনা (যদি থাকে) সাপেক্ষে, সরকারি তহবিলে জমা প্রদান করিবে।
(৬) ট্রাস্টি বোর্ড যথাযথভাবে তহবিলের হিসাবরক্ষণ এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(৭) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর “মহা হিসাব-নিরীক্ষক” নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর আর্থিক সহায়তা তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও ট্রাস্টি বোর্ডের নিকট পেশ করিবেন।
(৮) উপ-ধারা (৭) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No 2 of 1973) এর Article 2(1) (b)-তে সংজ্ঞায়িত “চার্টার্ড একাউন্টেন্ট” দ্বারা তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ট্রাস্টি বোর্ড এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউন্টেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।
(৯) উপ-ধারা (৮) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পারিতোষিক প্রাপ্ত হইবেন।
(১০) উপ-ধারা (৭) বা (৮) এর বিধান অনুসারে হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তদ্কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অথবা, ক্ষেত্রমত, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, ট্রাস্টি বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং ট্রাস্টি বোর্ডের যে কোনো সদস্য বা এতদ্সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
ট্রাস্টি বোর্ডের সভা
৫৮। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ট্রাস্টি বোর্ডের সভা, ব্যবস্থাপনা ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
আর্থিক সহায়তার আবেদন
৫৯। (১) আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী বা বৈধ প্রতিনিধি নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ফরমে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করিয়া ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর বা অন্য কোনোভাবে জ্ঞাত হইয়া চেয়ারম্যান, স্বীয় বিবেচনায়, তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার বা আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবেন, যাহা পরবর্তী বোর্ড সভায় অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(৩) ট্রাস্টি বোর্ড ক্ষতিপূরণ দাবির বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধানের ব্যবস্থা করিবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে ন্যায়ানুগ ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।
(৪) আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী বা বৈধ প্রতিনিধির নিকট উপ-ধারা (৩) এর অধীন ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত নয় মর্মে প্রতীয়মান হইলে, তিনি-
(ক) ট্রাস্টি বোর্ডের উক্তরূপ সিদ্ধান্তের সহিত ভিন্নমত পোষণ করিয়া ধারা ৬১ এর উপ-ধারা (১) অনুযায়ী উহা পুনর্বিবেচনার জন্য ট্রাস্ট্রি বোর্ডের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন; এবং
(খ) ট্রাস্টি বোর্ডের পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্তের সহিত একমত পোষণ না করিলে ধারা ৬১ এর উপ-ধারা (২) অনুযায়ী সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।
(৫) ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণের মানদণ্ড, পদ্ধতি, ক্ষতিপূরণ প্রদানের সময়সীমা, ক্ষতিপূরণের আবেদন মঞ্জুর, দাবি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির অনুসন্ধান এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
যাত্রী বা মোটরযানের বীমা
৬০। (১) কোনো মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করিলে তাহার মালিকানাধীন যে কোনো মোটরযানের জন্য যে সংখ্যক যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্টকৃত তাহাদের জীবন ও সম্পদের বীমা করিতে পারিবে।
(২) মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান উহার অধীন পরিচালিত মোটরযানের জন্য যথানিয়মে বীমা করিবেন এবং মোটরযানের ক্ষতি বা নষ্ট হওয়ার বিষয়টি বীমার আওতাভুক্ত থাকিবে এবং বীমাকারী কর্তৃক উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবেন।
(৩) মোটরযান দুর্ঘটনায় পতিত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা নষ্ট হইলে উক্ত মোটরযানের জন্য ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করা যাইবে না।
(৪) বীমার শর্ত, বীমার দায়-দায়িত্বের সীমা, বীমার দেউলিয়াত্ব, বীমা-দাবী পরিশোধ, বিরোধ-নিষ্পত্তি, বীমা সনদের কার্যকারিতা ও উহা হস্তান্তর, এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
পুনর্বিবেচনা, আপিল ও সালিশ
৬১। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি এই অধ্যায়ের অধীন প্রদত্ত কোনো সিদ্ধান্ত দ্বারা সংক্ষুদ্ধ হইলে, তিনি সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ট্রাস্টি বোর্ডের নিকট উক্ত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত দ্বারা সন্তুষ্ট না হইলে, তিনি উক্ত সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।
(৩) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) বা, (২) এর অধীন ক্ষেত্রমত, পুনর্বিবেচনা বা আপিলের সিদ্ধান্ত দ্বারা সন্তুষ্ঠ না হইলে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিযুক্ত সালিশ নিষ্পত্তিকারীর (Arbitrator) নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং সালিশ নিষ্পত্তিকারী কর্তৃক প্রদত্ত এতদ্সংক্রান্ত রোয়েদাদ (award) ট্রাস্টি বোর্ডের উপর চূড়ান্তভাবে বাধ্যকর হইবে এবং উক্তরূপ রোয়েদাদ দেওয়ানি আদালতের ডিক্রির ন্যায় জারিযোগ্য হইবে।
(৪) এই আইনের অধীন ক্ষতিপূরণ দাবি সংক্রান্ত প্রশ্ন জড়িত রহিয়াছে, এইরূপ কোনো মামলা দেওয়ানি আদালত বিচারের জন্য গ্রহণ করিবে না এবং কোনো দেওয়ানি আদালত, ক্ষতিপূরণ দাবি সালিশ নিষ্পত্তিকারী কর্তৃক গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা কার্যধারার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।
(৫) সালিশকারী নিয়োগ, সালিশের কার্যপদ্ধতি এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির চিকিৎসা
৬২। (১) কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিলে সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালক, কন্ডাক্টর বা তাহাদের প্রতিনিধি তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনা সম্পর্কে নিকটস্থ থানা এবং, ক্ষেত্রমত, ফায়ার সার্ভিস, চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বা হাসপাতালকে অবহিত করিবেন এবং আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির জীবন রক্ষার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিকটস্থ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বা হাসপাতালে প্রেরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
(২) বাংলাদেশ পুলিশ দেশব্যাপী টোল ফ্রি টেলিফোন নম্বর প্রবর্তন করিবে, যাহার মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কবলিত মোটরযানের চালক, কন্ডাক্টর, মালিক, প্রতিষ্ঠান বা পরিচালনাকারী বা তাহাদের প্রতিনিধি বা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি বা যাত্রী বা সড়ক দুর্ঘটনা প্রত্যক্ষকারী কোনো ব্যক্তি দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নম্বরে টেলিফোন করিয়া জরুরি উদ্ধার, চিকিৎসা ইত্যাদির জন্য তাৎক্ষণিক সহায়তা চাহিতে পারিবেন।
দশম অধ্যায়
মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল, মোটরযান মেরামত কারখানা, ডাম্পিং ইয়ার্ড, ইত্যাদি
মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল
৬৩। (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনা করিতে পারিবেন না।
(২) উপ-ধারা (১) যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনা করিতে থাকিলে, উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে এই আইনের অধীন মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনার নিমিত্ত কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিতে হইবে।
(৩) লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনার জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উপর এই ধারার অধীন জরিমানা আরোপিত হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, আরোপিত জরিমানা প্রদানপূর্বক নির্ধারিত শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে, মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনার নিমিত্ত কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিতে পারিবে।
(৪) মোটরযান ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুলের ইন্সস্ট্রাক্টরের লাইসেন্স প্রদান, পাঠ্যক্রম, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
মোটরযান মেরামত কারখানা
৬৪। (১) সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফি প্রদান সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত মোটরযান মেরামত কারখানা স্থাপন বা পরিচালনা করিতে পারিবে না।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মোটরযান মেরামত কারখানা পরিচালনা করিতে থাকিলে, উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে এই আইনের অধীন মোটরযান মেরামত কারখানা পরিচালনার নিমিত্ত কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিতে হইবে।
(৩) লাইসেন্স ব্যতীত কোনো মোটরযান মেরামত কারখানা স্থাপন বা পরিচালনা করিবার জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উপর এই ধারার অধীন জরিমানা আরোপিত হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, আরোপিত জরিমানা প্রদানপূর্বক নির্ধারিত শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে, মোটরযান মেরামত কারখানা স্থাপন বা পরিচালনার নিমিত্ত কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিতে পারিবে।
(৪) মোটরযান মেরামত কারখানা স্থাপন বা পরিচালনার লাইসেন্স প্রদান ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৫) কর্তৃপক্ষ, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত লাইসেন্সে কারখানার শ্রেণি, কারখানার স্থান ও কারখানার কর্মপরিধি উল্লেখ করিয়া তদানুযায়ী লাইসেন্সপ্রাপ্ত কারখানার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।
মোটরযান ডাম্পিং ইয়ার্ড
৬৫। (১) কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ বাহিনী, আটককৃত মোটরযান রাখিবার জন্য, উপযুক্ত স্থানে ডাম্পিং ইয়ার্ড স্থাপন করিতে পারিবে এবং উক্ত ডাম্পিং ইয়ার্ড সংশ্লিষ্ট থানা বা ট্রাফিক বিভাগ বা কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় থাকিবে।
(২) ডাম্পিং ইয়ার্ডে প্রেরণকারী কর্মচারীর প্রদত্ত আদেশ অথবা ক্ষেত্রমত, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ইয়ার্ড ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট থানা, ট্রাফিক বিভাগ আটককৃত মোটরযানের বিষয়ে বিলি-বন্দেজ করিবে।
একাদশ অধ্যায়
অপরাধ, বিচার ও দণ্ড
ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যাতীত মোটরযান ও গণপরিবহণ চালনার বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ৪ এবং ৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৬৬। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪ এবং ৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স হস্তান্তর সংক্রান্ত ধারা ৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৬৭। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৬ এর উপ-ধারা (৫) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
বিদেশি নাগরিক কর্তৃক এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের কোন বিধান বা লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্ত অমান্য সংক্রান্ত ধারা ৯ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৬৮। যদি কোনো বিদেশি নাগরিক ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
কর্তৃপক্ষ ব্যতীত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত, প্রদান বা নবায়নে বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১০ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৬৯। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১০ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা তবে অন্যূন ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক মোটরযান চালানোর উপর বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১২ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭০। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১২ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
কন্ডাক্টর লাইসেন্স ব্যতীত কোনো গণপরিবহণে কন্ডাক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭১। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ব্যতীত মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭২। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ভূয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার ও প্রদর্শনে বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১৭ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭৩। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৭ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা তবে অন্যূন ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তন বা হস্তান্তরের কারণে হস্তান্তরগ্রহীতা কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ধারা ২১ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭৪। যদি কোনো হস্তান্তরগ্রহীতা ধারা ২১ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাস কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মোটরযানের ফিটনেস সনদ ব্যতীত বা মেয়াদউত্তীর্ন ফিটনেস সনদ ব্যবহার করিয়া বা ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭৫। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ট্যাক্স-টোকেন ব্যতীত বা মেয়াদউত্তীর্ণ ট্যাক্স-টোকেন ব্যবহার করিয়া মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭৬। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
রুট পারমিট ব্যতীত পাবলিক প্লেসে পরিবহন যান ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ২৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭৭। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৮ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
বিদেশি নাগরিক কর্তৃক বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ দেশের মোটরযান/ গণপরিবহণের রুট পারমিট গ্রহণ না করা সংক্রান্ত ধারা ২৯ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭৮। যদি কোনো বিদেশি নাগরিক ধারা ২৯ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মোটরযানের বাণিজ্যিক ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৭৯। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
গণপরিবহণে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন ও নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবী বা আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮০। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৪ এর উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
কনট্রাক্ট ক্যারিজের মিটার অবৈধভাবে পরিবর্তন বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮১। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ তাৎক্ষণিক অপসারণ সংক্রান্ত ধারা ৩৭ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮২। (১) যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৭ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড, বা স্থায়ী স্থাপনার ক্ষেত্রে অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা এবং অস্থায়ী স্থাপনার ক্ষেত্রে অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
চাঁদাবাজি নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত ধারা ৩৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮৩। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৮ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860)-এর অধ্যায়-১৭ এর অধীন চাঁদাবাজি (extortion) সংক্রান্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে।
কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত কোনো মোটরযানের কারিগরি বিনির্দেশ অমান্য সংক্রান্ত ধারা ৪০ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮৪। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪০ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের কারাদণ্ড তবে অন্যূন ১ (এক) বছর, বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ট্রাফিক সাইন ও সংকেতের ব্যবহার মানিয়া চলা সংক্রান্ত ধারা ৪২ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮৫। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪২ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
অতিরিক্ত ওজন বহন করিয়া মোটরযান চালানো সংক্রান্ত ধারা ৪৩ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮৬। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৩ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসরের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ২ (দুই) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
মোটরযানের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ধারা ৪৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮৭। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
নির্ধারিত শব্দমাত্রার অতিরিক্ত উচ্চমাত্রার কোনরুপ শব্দ সৃষ্টি বা হর্ণ বাজানো বা কোনো যন্ত্র, যন্ত্রাংশ বা হর্ণ মোটরযানে স্থাপন সংক্রান্ত ধারা ৪৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮৮। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৫ এর উপ-ধারা (২), (৩) ও (৪) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
পরিবেশ দূষণকারী, ঝুঁকিপূর্ণ ইত্যাদি মোটরযান চালনার বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ৪৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৮৯। (১) যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৬ এর উপ-ধারা (২) ও (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৬ এর উপ-ধারা (৪) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
মোটরযান পার্কিং এবং যাত্রী বা পন্য উঠানামার নির্ধারিত স্থান ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ৪৭ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯০। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৭ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
দ্রুতগতির মোটরযান প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাসড়কের ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ৪৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯১। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৮ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
মোটরযান চলাচলের সাধারণ নির্দেশাবলী সংক্রান্ত ধারা ৪৯ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯২। (১) যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৯ এর উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সাধারণ নির্দেশাবলির প্রথম অংশের কোনো বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪৯ এর উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সাধারণ নির্দেশাবলির দ্বিতীয় অংশের কোনো বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
বিস্ফোরক বা দাহ্য পদার্থ মোটরযানে পরিবহন সংক্রান্ত ধারা ৫১ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯৩। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৫১ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আর্থিক সহায়তা তহবিলে বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা প্রদানের বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত ধারা ৫৩ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯৪। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৫৩ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য কর্তৃপক্ষ তাহার গণপরিবহণ চালনার অনুমতিপত্র ও রুট পারমিট বাতিল করিতে বা ক্ষেত্রমত, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সনদ বা উহার নবায়ন করিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে পারিবে এবং তদোতিরিক্ত নির্ধারিত হারে জরিমানা আরোপ করা যাইবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির চিকিৎসা সংক্রান্ত ধারা ৬২ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯৫। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৬২ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং, চালকের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক ১ (এক) পয়েন্ট কর্তন হইবে।
মোটর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনা সংক্রান্ত ধারা ৬৩ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯৬। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৬৩ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল বন্ধ করিতে পারিবে।
মোটরযান মেরামত কারখানা স্থাপন বা পরিচালনা সংক্রান্ত ধারা ৬৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
৯৭। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৬৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অন্যূন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা এবং অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত মোটরযান মেরামত কারখানা সিলগালা করিয়া বন্ধ করিতে পারিবে।
ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মোটরযান চালনার ফলে দুর্ঘটনায় জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের দণ্ড
৯৮। যদি নির্ধারিত গতিসীমার অতিরিক্ত গতিতে বা বেপরোয়াভাবে বা ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং বা ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মোটরযান চালনার ফলে কোনো দুর্ঘটনায় জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি সাধিত হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট মোটরযানের চালক বা কন্ডাক্টর বা সহায়তাকারী ব্যক্তির অনুরূপ মোটরযান চালনা হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক ০৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং আদালত অর্থদণ্ডের সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্রের দণ্ড
৯৯। যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন বা প্ররোচনা প্রদান করেন বা ষড়যন্ত্র করেন এবং যাহার ফলে সংশ্লিষ্ট অপরাধটি সংঘটিত হয়, তাহা হইলে উক্ত সহায়তাকারী, যড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনা প্রদানকারী ব্যক্তি উক্ত অপরাধ সংঘটনের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের সমপরিমাণ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধ পুনঃ সংঘটনের দণ্ড
১০০। এই আইনে উল্লিখিত কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডভোগকারী একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করিলে, উক্ত ব্যক্তিকে সংঘটিত অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ দণ্ডের দ্বিগুণ দন্ডে দন্ডিত করা যাইবে এবং ইহা কোনোক্রমে পূর্বে প্রদত্ত দণ্ডের দ্বিগুণের কম হইবে না।
পরিদর্শনে বাধা প্রদান বা প্রদত্ত নির্দেশনা অমান্য সংক্রান্ত ধারা ১১৬ এর উপ-ধারা (২) এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
১০১। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১১৬ এর উপ-ধারা (২) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
আদেশ পালন ও তথ্য প্রদানে বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত ধারা ১১৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
১০২। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১১৮ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
আক্রমনাত্মক আচরণ ও জনরোষ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ধারা ১১৯ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
১০৩। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১১৯ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ ও নির্দেশনা সংক্রান্ত ধারা ১২৪ এর অধীন প্রণীত বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড
১০৪। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১২৪ এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশনা এবং প্রণীত নীতিমালায় প্রদত্ত নির্দেশনা লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
দুর্ঘটনা সংক্রান্ত অপরাধ
১০৫। এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মোটরযান চালনাজনিত কোনো দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে কোনো ব্যক্তি আহত হইলে বা তাহার প্রাণহানি ঘটিলে, তৎসংক্রান্ত অপরাধসমূহ Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860)-এর এতদ্সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, Penal Code,1860 (Act No. XLV of 1860)-এর section 304B এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তির বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনার কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত হইলে বা তাহার প্রাণহানি ঘটিলে, উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক ০৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
১০৬। (১) কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানির এইরূপ মালিক, পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য যে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত সত্তা হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানিকে পৃথকভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে, “কোম্পানি” অর্থে, নিগমিত বা নিবন্ধিত হউক বা না হউক, কোনো কোম্পানি বা সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন এবং সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা সরকারের সম্পূর্ণ বা আংশিক মালিকানাধীন যে কোনো কোম্পানি বা সংস্থাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
দ্বাদশ অধ্যায়
পুনর্বিবেচনা ও আপিল
পুনর্বিবেচনা ও আপিল
১০৭। (১) যদি কোনো ব্যক্তি নবম অধ্যায় ব্যতীত এই আইনের অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হন, তাহা হইলে তিনি উক্ত আদেশ প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত দ্বারা সন্তুষ্ট না হন, তাহা হইলে তিনি উক্ত সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।
(৩) এই ধারার অধীন পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল, আপিল দায়ের ও উহা নিষ্পত্তির পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ত্রয়োদশ অধ্যায়
কার্যপদ্ধতি
কতিপয় অপরাধের বিচারের জন্য বিশেষ পদ্ধতি
১০৮। (১) Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার বা ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তি, ধারা ৪৩, ৬৬, ৭২, ৭৫, ৮৪, ৮৭, ৮৯, ৯২ এবং ৯৫ এর অধীন সংঘটিত অপরাধের জন্য অভিযোগ গঠন করিবেন, যাহার একটি কপি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হস্তান্তর করিতে হইবে, যিনি স্বাক্ষর বা বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ দিয়া উহার প্রাপ্তি স্বীকার করিবেন, এবং অপর কপি পুলিশ সুপার বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটান এলাকার ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (ট্রাফিক) বা অপরাধ সংঘটিত এলাকার জন্য সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত এখতিয়ারসম্পন্ন কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ক্ষমতাপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী নির্ধারিত পদ্ধতিতে অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ জরিমানা আরোপ করিতে পারিবেন, এবং যদি উক্ত জরিমানা নির্দিষ্ট তারিখে বা তৎপূর্বে নগদ অথবা অন্য কোনভাবে নির্ধারিত স্থানে প্রদান করা হয়, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ সম্পর্কে অপরাধীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আরোপিত জরিমানার অর্থ প্রদান করা না হইলে, যে স্থানে অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে, উক্ত এলাকার আঞ্চলিক এখতিয়ারসম্পন্ন পুলিশ সুপার বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটান এলাকার ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (ট্রাফিক), বা তৎকর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো পুলিশ অফিসার, বা যথাযথ অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর অপরাধীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত আদালতে অভিযোগ দায়ের করিবেন।
(৪) কোনো ব্যক্তি এই ধারার অধীন তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কপি গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিলে বা উহা এড়াইয়া যাইবার চেষ্টা করিলে, বা সংশ্লিষ্ট প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ গ্রহণে অস্বীকার করিলে, এই ধারা অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচরী তাহাকে ওয়ারেন্ট ব্যতীত গ্রেফতার করিতে পারিবেন এবং যথাযথ আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইলে, সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের অতিরিক্ত আদালত তাহাকে অতিরিক্ত অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করিতে পারিবে।
মোটরযান থামাইবার এবং মোটরযানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষার ক্ষমতা
১০৯। সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার বা, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তির চাহিদা মোতাবেক কোনো চালক মোটরযান থামাইতে এবং মোটরযানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শন করিতে বাধ্য থাকিবেন।
ওয়ারেন্ট ব্যতীত গ্রেফতারের ক্ষমতা
১১০। (১) কোনো পোশাকধারী পুলিশ অফিসারের সন্মুখে কোনো ব্যক্তি ধারা ৭২, ৭৩, ৭৫, ৭৭, ৭৯, ৮৪, ৮৬, ৮৯, ৯২(১), ৯৮ বা ১০৫ এর অধীন শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ করিলে, তিনি উক্ত ব্যক্তিকে ওয়ারেন্ট ব্যতীত গ্রেফতার করিতে পারিবেন।
(২) উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রয়োজনে, কোনো পুলিশ অফিসার ওয়ারেন্ট ব্যতীত কোনো মোটরযানের চালককে গ্রেফতার করিলে, তিনি উক্ত মোটরযানের নিরাপদ হেফাজতের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন, বা মোটরযানটি নিকটতম থানায় লইয়া যাইবেন।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ অফিসার, যথাশীঘ্র সম্ভব, তবে কোনক্রমেই চব্বিশ ঘন্টার অধিক নহে, সংশ্লিষ্ট মোটরযানের মালিককে মোটরযানটি কোথায় স্থানান্তর করা হইয়াছে এবং চালককে কোথায় লইয়া যাওয়া হইয়াছে তাহা অবহিত করিবেন।
পুলিশ অফিসার কর্তৃক মোটরযানের কাগজপত্র আটকের ক্ষমতা
১১১। (১) সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তির যদি এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, মোটরযানের চালক বা মোটরযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক প্রদর্শিত মোটরযান সনাক্তকরণ চিহ্ন বা লাইসেন্স বা পারমিট, রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ, বীমা সনদ, বা অন্য কোনো কাগজপত্র Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর ধারা ৪৬৪ এ বিধৃত অর্থে মিথ্যা বা জাল, তাহা হইলে তিনি উক্ত কাগজপত্র বা চিহ্ন আটক করিতে এবং অনুরূপ মিথ্যা বা জাল কাগজপত্র বা চিহ্ন রাখিবার জন্য কৈফিয়ত প্রদানের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালক অথবা মালিককে তলব করিতে পারিবেন।
(২) সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তির যদি এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, এই আইনের অধীন অভিযুক্ত চালক বা কন্ডাক্টর, যদি থাকে, পলায়ন করিতে বা সমন জারি করা হইলে উহা এড়াইয়া যাইতে পারে, তাহা হইলে তিনি অনুরূপ চালক বা কন্ডাক্টরের লাইসেন্স আটক করিয়া উহা সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরণ করিবেন এবং চালক বা কন্ডাক্টর প্রথমবার হাজির হইবার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত আদালত তাহাকে উপ-ধারা (৩) এর অধীন সাময়িক প্রাপ্তিস্বীকারপত্রের বিনিময়ে উক্ত লাইসেন্স ফেরত প্রদান করিবে।
(৩) আদালত ভিন্নরূপ আদেশ প্রদান না করিলে, উপ-ধারা (২) এর অধীন লাইসেন্স আটককারী পুলিশ অফিসার, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স সমর্পনকারী ব্যক্তিকে একটি সাময়িক প্রাপ্তিস্বীকারপত্র প্রদান করিবেন এবং উক্ত ব্যক্তি তৎদ্বারা লাইসেন্স ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত বা প্রাপ্তিস্বীকারপত্রে বর্ণিত তারিখ পর্যন্ত মোটরযান চালাইতে বা কন্ডাক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে পারিবেন।
রেজিস্ট্রেশন বা ফিটনেস সনদ বা রুট পারমিট ব্যতীত মোটরযান চালনার ফলাফল
১১২। (১) সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তির যদি এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, কোনো নির্দিষ্ট মোটরযান ধারা ১৬ এ বর্ণিত রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিধান বা ধারা ২৫ এ বর্ণিত ফিটনেস সংক্রান্ত বিধান বা ধারা ২৮ এ বর্ণিত রুট পারমিট সংক্রান্ত বিধান প্রতিপালন ব্যতিরেকে উক্ত মোটরযান ব্যবহার করা হইতেছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত মোটরযান আটক করিতে এবং সাময়িক হেফাজতে লইতে পারিবেন।
(২) সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তির যদি এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, কোনো মোটরযান ধারা ২৫ এ বর্ণিত ফিটনেস সংক্রান্ত বিধান বা ধারা ২৮ এ বর্ণিত রুট পারমিট সংক্রান্ত বিধান প্রতিপালন ব্যতিরেকে ব্যবহৃত হইতেছে, তাহা হইলে তিনি রেজিস্ট্রেশন সনদ আটক করিয়া উহার একটি প্রাপ্তিস্বীকারপত্র প্রদান করিবেন।
ঘটনাস্থলে কতিপয় শ্রেণির অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তিকে জরিমানা আরোপ করিবার ক্ষমতা
১১৩। (১) এই আইন বা আপাতত বলবত অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক কেন, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত কোনো এলাকায় কোনো ব্যক্তি, যদি সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তির সন্মুখে, ধারা ৪৩, ৬৬, ৭২, ৭৫, ৮৪, ৮৭, ৮৯, ৯২ এবং ৯৫ এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে উক্ত অফিসার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই তাহাকে জরিমানা আরোপ করিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জরিমানা আরোপকারী কর্মচারী নির্ধারিত ফরমে অপরাধের ধরন এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য আরোপিত জরিমানার পরিমাণ লিপিবদ্ধ করিবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত জরিমানা প্রদান করিবেন এবং উক্ত কর্মচারীর নিকট হইতে প্রাপ্তিস্বীকারপত্র গ্রহণ করিবেন।
(৩) অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগের কপি গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিলে, বা উপ-ধারা (২) এর অধীন জরিমানা পরিশোধ না করা হইলে, উপ-ধারা (১) এর অধীন দায়িত্বপালনকারী কর্মচারী যে মোটরযান অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত হইয়াছে উহা নিকটবর্তী থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা করিবেন, এবং ভারপ্রাপ্ত অফিসার মোটরযানটি তাহার হেফাজতে রাখিবেন এবং জরিমানা পরিশোধের পর যথাশীঘ্রসম্ভব মোটরযানটি অবমুক্ত করিবেন এবং যে অফিসার মোটরযানটি প্রেরণ করিয়াছিলেন তাহাকে এতদ্সম্পর্কে অবহিত করিবেন।
অপরাধের তদন্ত, বিচার ইত্যাদি
১১৪। (১) এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল, ইত্যাদির ক্ষেত্রে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
(২) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নম্বর আইন) এর তপশিলভুক্ত করিয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার করা যাইবে।
মোটরযান আটক ও বিলি-বন্দেজ
১১৫। (১) এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী কোন কর্মকর্তা বা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট (টিআই) কোনো মোটরযান আটক করিতে পারিবেন এবং এই আইনের বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।
(২) এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশের ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট (টিআই) পদমর্যাদার কোনো অফিসার মোটরযান ডাম্পিং ইয়ার্ডে প্রেরণ করিতে পারিবেন।
(৩) এই আইনের অধীন কোন মোটরযান ডাম্পিং ইয়ার্ডে প্রেরণ করা হইলে উহা অবমুক্তির জন্য মোটরযান মালিক, মোবাইল কোর্টের ক্ষেত্রে, ২ (দুই) মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে এবং, অন্যান্য ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার বা উপ-পুলিশ কমিশনার বা সমমর্যাদার অফিসারের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন; এবং আদালত বা সংশ্লিষ্ট কর্মচরী দলিল-দস্তাবেজ পর্যালোচনা ও শুনানি গ্রহণ করিয়া নিষ্পত্তিমূলক আদেশ প্রদান করিবেন।
(৪) ডাম্পিং ইয়ার্ডে প্রেরিত মোটরযানের মালিক ডাম্পিং ইয়ার্ড হইতে মোটরযান অবমুক্তির জন্য উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে আবেদন না করিলে, ডাম্পিং ইয়ার্ডের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা কর্তৃক, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি গ্রহণ করিয়া মোটরযানটি কোনো সরকারি সংস্থা বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা যাইবে বা নিলামে বিক্রয় করা যাইবে।
পরিদর্শনের এখতিয়ার
১১৬। (১) কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচরী বা মোটরযান পরিদর্শক এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির বিধান অনুসরণ করিয়া যে কোনো মোটরযান বা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বা তদসংশ্লিষ্ট স্থাপনা বা এলাকা পরিদর্শন করিতে এবং যে কোনো নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবেন।
(২) কোনো মোটরযান মালিক বা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শনে বাধা প্রদান করিতে পারিবেন না এবং উক্ত উপ-ধারার অধীন কোনো নির্দেশনা প্রদান করা হইলে উহা মানিয়া চলিতে বাধ্য থাকিবেন।
অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষযোগ্যতা
১১৭। (১) Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ ভিন্নতর কোনো কিছু না থাকিলে,-
(ক) এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন সংঘটিত সকল অপরাধ আমলযোগ্য (cognizable) হইবে, যদি উক্তরূপ অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ অফিসার, বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মোটরযান পরিদর্শক বা অন্য কোনো ব্যক্তি যথাযথ এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতকে অবহিত করেন;
(খ) এই আইনের ধারা ৮৪, ৯৮ ও ১০৫ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ ব্যতীত অন্যান্য অপরাধসমূহ জামিনযোগ্য (bailable) হইবে; এবং
(গ) এই আইনের ধারা ৬৬, ৭২, ৭৫, ৮৭, ৮৯ এবং ৯২ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আপোষযোগ্য (compoundable) হইবে।
(২) আঞ্চলিক এখতিয়ারসম্পন্ন কোনো জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী বা অন্যূন অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ বা সম-মর্যাদাসম্পন্ন কোনো পুলিশ অফিসার এই আইনের অধীন আপোষযোগ্য অপরাধসমূহ আপোষ-মীমাংসা করিতে পারিবেন।
চতুর্দশ অধ্যায়
বিবিধ
আদেশ পালন ও তথ্য প্রদানে বাধ্যবাধকতা
১১৮। (১) যদি কোনো ব্যক্তি, চালক, শ্রমিক, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান বা তাহাদের প্রতিনিধিকে এই আইনের অধীন কোনো তথ্য প্রদান বা অন্য কোনো কার্য করিবার নির্দেশ প্রদান করা হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, চালক, শ্রমিক, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান বা তাহাদের প্রতিনিধি উক্তরূপ নির্দেশ প্রতিপালনে বাধ্য থাকিবে।
(২) কোনো ব্যক্তি, চালক, শ্রমিক, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান বা তাহাদের প্রতিনিধি উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোনো নির্দেশ অমান্য করিতে বা উহা বাস্তবায়নে বাধা প্রদান করিতে বা যাচিত তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল তথ্য পরিবেশন করিতে পারিবেন না।
আক্রমণাত্মক আচরণ ও জনরোষ নিয়ন্ত্রণ
১১৯। (১) কোনো সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হইলে দুর্ঘটনার সহিত সংশ্লিষ্ট মোটরযানের কোনরূপ ক্ষতিসাধন করা যাইবে না।
(২) জীবন রক্ষার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং অধিকতর দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য দুর্ঘটনা কবলিত মোটরযানের চালক, কন্ডাক্টরের প্রতি কোনো আক্রমণাত্মক আচরণ করা যাইবে না।
(৩) দুর্ঘটনায় জড়িত মোটরযান বা মোটরযানসমূহের যাত্রীগণ বা ঘটনাস্থলে সমবেত ব্যক্তিগণ জনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কোনোরূপ আক্রমণাত্মক আচরণ করিতে পারিবেন না।
(৪) কোনো সংগঠনের ব্যানারে কোনো যাত্রীবাহী বা পণ্যবাহী কোনো মোটরযানের ক্ষতিসাধন এবং সাধারণ যাত্রীর প্রতি কোনোরূপ আক্রমণাত্মক আচরণ বা জনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কোনো কাজ করা যাইবে না।
ক্ষমতা অর্পণ
১২০। সরকার, এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট শর্তে, কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মচারী বা মোটরযান পরিদর্শক বা পুলিশের সার্জেন্ট বা সাব-ইন্সপেক্টর এর নিম্নে নহেন এইরূপ কোনো অফিসার বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত অন্য কোনো সংস্থাকে অর্পণ করিতে পারিবে।
ডিজিটাইজেশন
১২১। (১) সড়ক পরিবহণ খাতে উন্নত সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে সরকার ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করিবে।
(২) ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
১২২। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
১২৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ নয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
সরকারের আদেশ প্রদান, নীতিমালা প্রণয়ন, ইত্যাদির ক্ষমতা
১২৪। (১) সরকার, বাস্তবতার নিরিখে জনস্বার্থে নিরাপদ সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের জন্য, সময় সময়, নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক বিষয়ে আদেশ প্রদান বা নীতিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) রাস্তায় মোটরযান চলাচলের ক্ষেত্রে সময়ভিত্তিক বিধি-নিষেধ বা পিক-অফপিক আওয়ার নির্ধারণ;
(খ) যে কোনো স্হানে রেজিস্ট্রিকৃত মোটরযানের ফিটনেস ইত্যাদি কর্তৃপক্ষের যে কোনো কার্যালয় হইতে নবায়নের সুযোগ প্রদান;
(গ) যানবাহন চলাচলের জন্য নগরাঞ্চল এবং সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়কের লেনভিত্তিক বিন্যাসকরণ;
(ঘ) বায়ু-দূষণ, পরিবেশ দূষণরোধকল্পে যে কোনো অঞ্চলে বিকল্প ব্যবস্থায় যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থাকরণ;
(ঙ) কোনো নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কোনো সড়কে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা নির্ধারণ;
(চ) নতুন বা ব্যতিক্রমধর্মী মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন, পুনঃরেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সনদ বা উহার নবায়ন সম্পর্কিত বিধান অনুমোদন;
(ছ) মোটরযান চালনার দায়-দায়িত্বের ক্ষেত্রে চালক ও নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান;
(জ) যানবাহনের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ক্ষেত্রমত নারী চালক নিয়োগ উৎসাহ প্রদান;
(ঝ) যাত্রী ও পণ্যপরিবহন কমিটিতে নারী, সিনিয়র সিটিজেন ও প্রতিবন্ধীদের প্রতিনিধি রাখা;
(ঞ) রেজিস্ট্রেশন, নবায়ন, ফিটনেস সনদ প্রদান ও চালকদের প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি বিশেষায়িত কাজের জন্য আউটসোর্সিংয়ের ব্যবস্থাকরণ;
(ট) রাইড শেয়ারিং সংক্রান্ত কোনো বিষয়;
(ঠ) যাত্রী বা নিরাপদ সড়ক পরিবহণ কর্মে নিয়োজিত সামাজিক সংগঠন কর্তৃক আনীত যাত্রী স্বার্থ বিষয়ক অভিযোগ শুনানি ও নিষ্পত্তিকরণ;
(ড) যাত্রী ছাউনি, ওভারপাস, আন্ডারপাস, জেব্রাক্রসিং, বাস-স্টপেজ, ফুটপাথ, পরিবহণযান টার্মিনালের স্থান নির্ধারণ, পরিবহণযান চালক ও শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ ইত্যাদি;
(ঢ) দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিগণের সাহায্যার্থে আগাইয়া আসা প্রথম সাহায্যকারীকে আইনি সুরক্ষা প্রদান;
(ণ) জিপ, সিডান কার, থ্রি হুইলার, টু-হুইলার বা সমজাতীয় অন্যান্য হালকা মোটরযান সড়ক পথে পরিবহণের ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার বিশিষ্ট মোটরযান ব্যবহার;
(ত) দূর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির জীবন রক্ষার্থে দ্রুততম সময়ের পরিমাণ নির্ধারণ; এবং
(থ) সরকার কর্তৃক বিবেচিত অন্য যে কোনো বিষয়।
(২) কর্তৃপক্ষ, উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো নির্দেশনা যাচনা করিলে এবং সরকার, প্রয়োজনে, তৎসম্পর্কিত নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
১২৫। (১) Motor Vehicles Ordinance, 1983 (Ordinance No. LV of 1983), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল
(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত Ordinance এর অধীন কৃত সকল কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) উক্ত Ordinance এর অধীন গৃহীত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এইরূপে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উক্ত Ordinance রহিত হয় নাই।
(৪) এই আইনের অধীন বিধি বা প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত Ordinance এর অধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধান, আদেশ, নির্দেশাবলি, প্রজ্ঞাপন, ইত্যাদির কার্যকারিতা বলবৎ থাকিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
১২৬। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের একটি নির্ভরযোগ্য ইংরেজি পাঠ (Authentic English Text) প্রণয়ন করিবে।
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
তথ্যসুত্র: bdlaws.minlaw.gov.bd/act-details-1262.html