মানহীন কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে ক্ষতির শিকার হচ্ছে পুঁজিবাজার। মানসম্মত কোম্পানির তালিকাভুক্তি কমে যাওয়ায় পুঁজিবাজারে এখন দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের ছড়াছড়ি। ২০১০ সালের বিশাল ধসের পর পুঁজিবাজার আর সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। এত লাখ-লাখ পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারী বাজারবিমুখ হয়ে পড়েছেন।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) এ সময় পুঁজিবাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়িয়েছে ঠিকই, কিন্তু কোম্পানির মান ও হিসাবের স্বচ্ছতার দিকে নজর দেয়নি মোটেই। ফলে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে বাজার সয়লাব। অন্যদিকে নড়বড়ে বাজারে ক্রমাগত পুঁজি হারিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আস্থার সংকটও।
অভিযোগ আছে, নিম্নমানের কোম্পানির তালিকাভুক্তি, অযৌক্তিক প্রিমিয়াম ও লাগামহীন প্লেসমেন্ট বাণিজ্যের অনুমতির মাধ্যমে কিছু কোম্পানিকে টাকা বানানোর হাতিয়ার হিসেবে পুঁজিবাজারকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছেন এসইসির কর্তাব্যক্তিরা। অচেনা, স্বল্প পরিচিত বিভিন্ন কোম্পানি আইপিও প্রসপেক্টাসে তথ্য অতিরঞ্জিত ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আয় ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখালেও কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের আসল চিত্র বেরিয়ে পড়েছে।
ফলে আইপিওর অনুমোদন পাওয়ার দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয়ে (ইপিএস) মারাত্মক অবনতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ‘রাইট শেয়ার’ ইস্যুর মাধ্যমেও অযৌক্তিকভাবে বাজারে শেয়ার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাজার চিত্রে। সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও পুঁজিবাজারের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।
এখনও যদি এসব বিষয় মনোযোগের সঙ্গে বিবেচনা না করা হয়, তা হলে বাজারের সংকট আরও বাড়তে পারে। তাই দ্রুত এই পরিস্থিতি থেকে বাজারকে মুক্ত করা প্রয়োজন।