এসএমজে ডেস্ক
দেশের পুঁজিবাজারে বেড়েই চলছে স্বল্প মূলধনি শেয়ারের দাপট। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহ শেষে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ ৫ কোম্পানির সব কটিই ছিল স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। এসব শেয়ারের দাম সর্বনিম্ন ১২ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে, মন্দা বাজারেও রমরমা কারসাজি হচ্ছে।
গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম দিনেও সেই দাপট দেখা যাচ্ছে লেনদেনের শুরুতে। প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানির বেশির ভাগই স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জেমিনি সি ফুড, দেশবন্ধু পলিমার, শ্যামপুর সুগার, এমারেল্ড অয়েল, সোনালি পেপার, সোনালি আঁশ ও মুন্নু অ্যাগ্রো।
এদিকে, ডিএসইতে গত সপ্তাহ শেষে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল দেশবন্ধু পলিমার। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৫ কার্যদিবসে সাড়ে ৭ টাকা বা প্রায় সাড়ে ৩২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ টাকায়। একইভাবে গত সপ্তাহজুড়ে লাফিয়ে বেড়েছে লোকসানি কোম্পানি লিবরা ইনফিউশনের শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম মাত্র ৫ কার্যদিবসে ২০৬ টাকা বা সোয়া ২৪ শতাংশ বেড়ে আবারও হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার এক দিনেই বেড়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ বা সাড়ে ৭৩ টাকা। ফলে এই শেয়ারের দাম বেড়ে ১ হাজার ৫৪ টাকায় ওঠে, যা গত এক বছরে সর্বোচ্চ। গত ২৪ সেপ্টেম্বর শেয়ারটির দাম ছিল ৮০৮ টাকা।
বাজারে হঠাৎ স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ারের এমন মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, কারসাজির মাধ্যমেই মূলত এ ধরনের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হচ্ছে। মন্দা বাজারে ইদানীং কারসাজিকারীরা স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোকে কারসাজির জন্য বেছে নিচ্ছেন। কারণ, অল্প কিছু শেয়ার কিনে এ ধরনের কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো যায়।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে গত সপ্তাহে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির তালিকায় দেশবন্ধু পলিমার ও লিবরা ইনফিউশন ছাড়া আরও ছিল এমবি ফার্মা, রেনউইক যোগেশ্বর, শ্যামপুর সুগার। এসব কোম্পানির মধ্যে এমবি ফার্মার শেয়ারের দাম গত সপ্তাহে ১৫ শতাংশ, রেনউইক যোগেশ্বরের ১৪ শতাংশ ও শ্যামপুর সুগারের শেয়ারের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দেশবন্ধুর মূলধন ৬১ কোটি টাকা।
আর লিবরা ইনফিউশনের দেড় কোটি, এমবি ফার্মার প্রায় আড়াই কোটি, রেনউইক যোগেশ্বরের দুই কোটি ও শ্যামপুর সুগারের মূলধন পাঁচ কোটি টাকা।
কারসাজিকারকেরা কারসাজির মাধ্যমে এসব কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটাচ্ছে। যখন অপরাধের কোনো শাস্তি হয় না, তখন অপরাধীরা উৎসাহিত হয়। এটিই ঘটছে এখন পুঁজিবাজারে। মন্দা বাজারেও কারসাজিকারকেরা তাদের মুনাফা তুলে নিচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হন।