নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত- উল- ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য এখন উত্তম সময়। এখন বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা ভালো রিটার্ন পাবেন।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে আয়োজিতরোড শো’ শেষে সভাপতির বক্তব্যে এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরকে যদি আমাদের বাঁচাতে হয় তাহলে পুঁজিবাজারকে তার নিজস্ব নিয়ম করতে হবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য অর্থসংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা সেটাই করা শুরু করেছি। পুঁজিবাজারকেই পুঁজির সংস্থান করতে হবে। তাই বেশি করে আইপিও দেওয়া চেষ্ট করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাজারে যদি ভালো কোম্পানি আসে তাদেরকে অবশ্যই আইপিও দেওয়া হবে। তাছাড়া বর্তামানে আমরা প্রাইমারি মার্কেটকে গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রাইমারি মার্কেটে ফাইন্যান্স করতে গিয়ে দেখতে পাচ্ছি ইকুইটি ফাইন্যান্সে আমরা ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকা ফাইন্যান্স করছি। কিন্তু বাংলাদেশ সেই আগের অবস্থানে এখন আর নেই। কারন বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক ব্যবসায়ী আছে। আমরা বন্ড নিয়ে আসছি। আর বন্ডের সিকিউর করার জন্য বিভিন্ন ইন্সুরেন্স আসছে। বন্ডের মাধ্যমে আমরা দীর্ঘ সময়ের সমাধান দিবো। বিভিন্ন ব্যাংক আমাদের কাছে যেসব সাবঅর্ডিনেন্ট বন্ড, পারপেচুয়াল বন্ড নিয়ে আসছিলো সব আমরা অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি। সরকারি সুকুক বন্ডের মাধ্যমে ৮ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মুজিববর্ষে আজকের এই আয়োজন। বাংলাদেশের ৫০ বছর। এদিকে দুবাইয়েরও ৫০ বছর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশকে করোনার মধ্যে বন্ধ করে দিতে হয়নি। ম্যানেজমেন্টের সাপ্লাইচেন বন্ধ হয়ে গেলে সেই ইকোনমিক ব্যাবস্থাকে সোজা করে দাড় করানো অনেক কঠিন হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী সাপ্লাইচেইন ঠিক রেখেছেন। তিনি এমনভাবে বাংলাদেশকে ম্যানেজ করেছেন দেশ আজ বিশ্বের অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক নিরাপদে আছে। আমাদের দেশে একটি টিম কাজ করছে। আর সেই টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমরা সবাই একসাথে কাজ করছি। মানি মার্কেট খুবই ভালো করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের লিকুইডিটি ভালো। আমাদের রিজার্ভ ও রেমিট্যান্স গ্রোথও ভালো। প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণ ভালো চলছে।
এছাড়াও তিনি বলেন, আমি গত দুইদিনে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ও যারা ইনভেস্টর তাদের সাথে মিটিং করেছি। সবার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য অনেক আগ্রহ দেখা গেছে। আমাদের দেশের রেটিং বর্তমানেবিবি-। এটি যখনএ’ হবে তখন আর বিদেশী বিনিয়োগের দরকার পড়বেনা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এ গতি আরও বাড়িয়ে দেব। সবাই এক সাথে টিম হিসেবে কাজ করবো। বিও একাউন্ট অনলাইন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই বিও একাউন্টের মাধ্যমে ঘরে বসে লেনদেন করা যাবে। ইলেক্ট্রোনিক্স ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে রেমিট্যান্সের টাকা ঘরে বসে দেশে পাঠানো যাবে। এইবছর বা আগামী বছরের মধ্যে পুঁজিবাজার সম্পূর্ন ডিজিটালাইজেশন হয়ে যাবে। আমাদের মানি মার্কেটে লিকুইডিটি যত বাড়বে ইন্টারেস্ট তত কমবে। দেশে-বিদেশে মানুষ ব্যাংকে টাকা রেখে কোন লভ্যাংশ পাচ্ছে না। তাই যারা সঞ্চয় করে তাদের উচিৎ বন্ডে বিনিয়োগ করা। এছাড়া মিউচুয়াল ফান্ডও ভালো রিটার্ন দিয়ে থাকে। ক্যাপিটাল মার্কেটে অনেক কিছু করার আছে। আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটে ১ বছরের ম্যাক্সিমাম ফিক্সড ডিপোজিট নেই। কিন্তু আমরা ৫/১০ কিংবা ১৫ বছরের দীর্ঘ সময়ের জন্য ঋণ দিয়ে থাকি। ব্যাংকে একটি লোক ঋণ নিতে গেলে তাকে কিছু ক্লাসিফিকেশন রুলসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। একসময় দেখা যায় এসব নিয়মের কারণে তার ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
এসএমজে/২৪/রা