ক্রেতা সংকটে বিপদগ্রস্ত পুঁজিবাজার

দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে মন্তব্য করাটা এখন খুবই মুশকিল। কখন কী হয়, কিছুই আন্দাজ করা যায় না। তবে একটি বিষয়ে আশা করি অনেকেই একমত হবেন, সেটি হচ্ছে বাজার তার স্বাভাবিক গতিতে চলছে না। এখানে এক প্রকার খেলা চলছে। তবে কারা এই খেলোয়াড় তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের। এখন যেটি বলা যায়, সেটি হচ্ছে পুঁজিবাজার বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ক্রেতা সংকট খুবই প্রবল।

ঈদের ছুটির পরও বড় ধরনের দরপতন দেখল দেশের পুঁজিবাজার। ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসে গতকাল সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৫ পয়েন্ট বা প্রায় দেড় শতাংশ পড়েছে। তাতে সূচকটি কমে হয়েছে ৫ হাজার ৭৭৯ পয়েন্ট। ৩ এপ্রিলের পর এটিই ডিএসইএক্সের সর্বনিম্ন অবস্থান।

দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক গতকাল ১৮৯ পয়েন্ট বা ১ শতাংশের বেশি কমেছে। সূচক কমার পাশাপাশি দুই বাজারে লেনদেনও বেশ কমেছে। ডিএসইতে গতকাল শেয়ার লেনদেন হয় ৩৬৮ কোটি টাকার, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৭৬ কোটি টাকা কম।

পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। তাই বিদ্যমান বিনিয়োগকারীরা বাজার ছাড়ছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না। ক্ষেত্রবিশেষে তাঁরা সিন্ডিকেটের সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করছে।

সাধারণত শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা দুই ভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন। একটি শ্রেণি নিজেদের জমানো টাকা বিনিয়োগ করে। আরেক শ্রেণি নিজেদের বিনিয়োগের পাশাপাশি শেয়ার জিম্মায় রেখে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে, যা ‘মার্জিন লোন’ নামে পরিচিতি। এ ধরনের ঋণ নিয়ে যাঁরা বিনিয়োগ করেন, তাঁদের শেয়ারের দাম একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামলেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঋণের সমপরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে দেয়। শেয়ারবাজারে এ ধরনের বিক্রিকে বলা হয় ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রি। বাজার যত পড়ছে, ফোসর্ড সেলের চাপ তত বাড়ছে। তাই এ বাস্তবতায় বাজারে বিনিয়োগকারীরা কিছুতেই নিরাপদ নয়।

Tagged