দেশের পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দামে আটকে রয়েছে তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ক্রেতার অভাবে দিনের পর দিন লেনদেন হচ্ছে না এসব সিকিউরিটিজের। কমে এসেছে লেনদেনও। প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশও বাজারে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও রয়েছেন বিপদে। ক্রেতা না থাকায় প্রয়োজনের সময়ও শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলতে পারছেন না তারা। প্রতিদিন ফ্লোর প্রাইস লেনদেন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে লাখ লাখ শেয়ার ও ইউনিটের বিক্রির আদেশ আসছে। কিন্তু ক্রেতা না পাওয়ায় বিক্রির আদেশ দেওয়া বিনিয়োগকারীরা হতাশ হচ্ছেন।
এ পরিস্থিতিতে লেনদেনে গতি ফেরাতে নানামুখী প্রচেষ্টা চালাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর অংশ হিসেবে ২৬টি বিমা কোম্পানিকে ইক্যুইটির কমপক্ষে ২০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তার তদারকি বাড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে যেসব ব্যাংকের বিনিয়োগ আইনিসীমার নিচে রয়েছে, পুঁজিবাজারে তাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিএসইসি।
মহামারি করোনার প্রকোপে সারাবিশ্বে যখন এক ধরনের স্থবিরতা নেমে আসে, সে সময়েও অভাবনীয় সাফল্য দেখায় দেশের পুঁজিবাজার। করোনার প্রকোপের মধ্যেই প্রধান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক রেকর্ড ৭ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে উঠে আসে। করোনার শুরুর দিকে যা চার হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। সে সময় দেশের বাজার বড় ধরনের সাফল্য দেখালেও ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বাধার পর প্রায় নয় মাস ধরে মন্দার মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাজার। সম্প্রতি সংকট বেশ প্রকট হয়ে উঠেছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা এবং ডলার সংকট ইস্যু সামনে রেখে একটি বিশেষ চক্র পরিকল্পিতভাবে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এখন প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।