মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজারের জন্য কতটা সহায়ক?

লাখ লাখ বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণ নিয়ে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই সঞ্চয়ের সমপরিমাণ মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন। এরপর যখন দরপতন শুরু হয়, ব্রোকাররা নিজেদের টাকা তুলে নিতে মার্জিন অ্যাকাউন্টের শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি (ফোর্সসেল) করে দেন। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়, ধস নামে বাজারে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে ৩৩ লাখ বেনিফিশিয়ারি ওনার্সধারী (বিও) বিনিয়োগকারীর মধ্যে মার্জিন ঋণ নেওয়াদের নেগেটিভ ইক্যুইটি ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা। একের পর এক সুবিধা দিয়ে যা গত ১২ বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকা কমে পাঁচ থেকে ছয় হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজগুলো এখনও সেই লসের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে যখনই দরপতন হয়, তখনই এ মার্জিন ঋণ দেওয়া ব্রোকার হাউজগুলো শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুল নেয়। এতে দরপতন প্রলম্বিত হয়। বিনিয়োগকারীরা প্রতিনিয়ত পুঁজি হারান।

মার্জিন ঋণের কারণে বাজারে অস্বাভাবিক উত্থান-পতন হয়। ফলে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও পুঁজিবাজারের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। বাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে মার্জিন ঋণের বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বসহকারে ভাবা উচিত। তাহলে প্রকৃত বিনিয়োগ বাড়বে, কমবে কারসাজি। ২০১০ সালের পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত প্রতিবেদনেও পুঁজিবাজারে ধসের পেছনে মার্জিন ঋণকে দায়ী করা হয়। সেখানে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ পরিহারের সুপারিশও করা হয়। তাই নানা দিক থেকে বিবেচনা করে একটি সঠিক পথ বের করা প্রয়োজন।

Tagged