এসএমজে ডেস্ক
এক কার্যদিবস কিছুটা মূল্য সংশোধনের পর আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গত মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় মাস পর ঢাকার বাজারে ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের দেখা মিললো।
পুঁজিবাজারে মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী রাখতে এবং লেনদেন বাড়াতে মুখ্য ভূমিকায় ছিল বিমা খাত। বিমা খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় একদিকে যেমন মূল্যসূচক বেড়েছে, তেমনি বড় হয়েছে দাম বাড়ার তালিকা। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি। একাধিক বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম দিনের সর্বোচ্চ সীমাও স্পর্শ করেছে। আর ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অর্ধেকের বেশি রয়েছে বিমা কোম্পানি।
ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলার মাধ্যমে শেষ ৯ কার্যদিবসের মধ্যে ৭ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলো শেয়ারবাজার। অবশ্য এর আগে নানা গুজবে বাজারে টানা দরপতন দেখা দেয়। একই সঙ্গে দেখা দেয় লেনদেন খরা। ডিএসইতে লেনদেন কমে দুইশ কোটি টাকার ঘরে নেমে যায়। এখন সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকার পাশাপাশি ধিরে ধিরে লেনদেনের গতিও বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। একই সঙ্গে লেনদেনেও ভালো গতি দেখা যায়। এতে প্রথম আধাঘণ্টাতেই ডিএসইতে একশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। একই সঙ্গে একশর বেশি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। মূল্যসূচকেরও বড় উত্থান হয়।
লেনদেনের শুরু থেকেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে বিমা খাত। যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তবে শেষদিকে কিছু বিমা কোম্পানির দাম বাড়ার প্রবণতা কিছুটা কমে। এরপরও দিনের লেনদেন শেষে ৪২টি বিমা কোম্পানি দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়। বিপরীতে দাম কমেছে ৮টির।
বিমার এমন দাপটের দিনে লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে ৮৯ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির। আর ১৮৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৩৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৭৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৫৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২৩ জুলাইয়ের পর ডিএসইতে আবারও ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।
গত কয়েক কার্যদিবসের মতো লেনদেনের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬০ কোটি ৯৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়া প্যাসেফিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার। ২৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইস্টার্ন হাউজিং, ইউনিক হোটেল, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, ইয়াকিন পলিমার, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬২টির। বিপরীতে দাম কমেছে ৪০টির এবং ৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫৩৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা।