জেড ক্যাটেগরি নিয়ে আবার জটিলতা

এসএমজে ডেস্ক

পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন লঙ্ঘনের কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিভুক্ত করতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জারি করা এক আদেশের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে এ জন্য পূর্বানুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। এখন কমিশন বলছে, এ ধারায় স্টক এক্সচেঞ্জ কোন কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিভুক্ত করতে সুপারিশ করবে, আর কোনটির ক্ষেত্রে করবে না, তা ‘কেস টু কেস’ ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গত ২৯ এপ্রিল ডিএসই ও সিএসইকে দেওয়া এক চিঠিতে সংস্থাটি এমন নির্দেশনা দিয়েছে। এ নিয়ে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে।

বিএসইসির এমন নির্দেশনার কারণে একই অপরাধে দু’জনকে দুই রকম শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিএসইর এক পরিচালক। তিনি বলেন, ‘কাকে শাস্তি দিতে বলব, আর কার জন্য বলব না, তা বিনিয়োগকারীরা কী করে বুঝবেন। এটা না বুঝলে তারা কী করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেবেন। একেক কোম্পানির ক্ষেত্রে একেক সিদ্ধান্ত নিলে স্টক এক্সচেঞ্জকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিতর্কিত করবে।

এদিকে বিএসইসি সূত্র জানিয়েছে, গত ২৫ এপ্রিল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সঙ্গে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ জরুরি সাক্ষাৎ করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারির আদেশের ২ নম্বর ধারার সংশোধন চেয়েছিল। এর পর নতুন নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে সমস্যা থাকলে ফের সংশোধন করে দেওয়া হবে।
ডিএসইর একাধিক পরিচালক সমকালকে জানান, জেড ক্যাটেগরি ইস্যুতে ১৫ ফেব্রুয়ারির আদেশ কী সমস্যা তৈরি করেছে, সে বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যানকে বোঝানো হয়েছে। ওই আদেশ বাস্তবায়ন করতে গেলে বিদ্যমান ৫৫টি কোম্পানির সঙ্গে নতুন করে আরও ১০০টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটেগরিভুক্ত করতে হবে। অবিলম্বে এ আদেশ সংশোধন করা দরকার। অন্যথায় তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি কোম্পানির শেয়ারকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিভুক্ত করা হলে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে।

ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, গত ২৪ এপ্রিল ডিএসইর ব্যবস্থাপনা বিভাগ বিএসইসির আদেশ পরিপালন করতে ৯০টির বেশি কোম্পানিকে জেড ক্যাটেগরিভুক্ত করতে প্রস্তাব দেয়। পর্ষদ তা পর্যালোচনা করে দেখতে পায়, সময়মতো লভ্যাংশ বিতরণ না করার দায়ে ২৫টি কোম্পানিকে এবং বার্ষিক তালিকাভুক্তি ফি না দেওয়ার কারণে ১২টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটেগরিভুক্ত করতে হবে। প্রথম কারণটি যৌক্তিক হলেও দ্বিতীয় কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো কোম্পানিকে জেড ক্যাটেগরিভুক্ত করতে চায় না। কিন্তু বিএসইসির আদেশ বহাল থাকলে তা না করে উপায় নেই।

 এখন ‘কেস টু কেস’ সিদ্ধান্ত নিতে হলে তা নতুন সংকট তৈরি করবে– এমন শঙ্কা প্রকাশ করে একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কোন আইন লঙ্ঘনের কারণে কোন কোম্পানি জেড ক্যাটেগরিতে যেতে পারে, তা জানা বিনিয়োগকারীদের অধিকার। এটা না হলে বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে হিমশিম খাবেন। কমিশনের এমন আইন করা উচিত না, যার প্রয়োগ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকবে।

ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, ‘আমরা বিএসইসিকে অনুরোধ করেছিলাম বিষয়টি সহজ করতে এবং বিনিয়োগকারীবান্ধব করতে। অথচ ফল এসেছে উল্টো। নতুন নির্দেশনার বিষয়টি যে সংকট তৈরি করবে, সে বিষয়টিও বিএসইসির চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এটিও শিগগিরই সংশোধন করে দেওয়া হবে।

Tagged