জীবন এবং জীবিকার সংকট সমাধান কোথায়

করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারি বাংলাদেশে গলার কাঁটা হয়ে আছে। না যাচ্ছে ফেলা, না যাচ্ছে গেলা। এই মহামারির রাশ টেনে ধরতে হলে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্বের বিকল্প নেই। অন্য দিকে ছুটি বা লগডাউন দীর্ঘদিন ধরে রাখতে গেলে মানুষের জীবিকা বাঁচে না। তাই দুই পক্ষেই যুক্তি প্রবল। এই অবস্থার মধ্যে সাধারণ ছুটি না বাড়িয়ে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে সবকিছু খুলে দিয়েছে সরকার। যার পক্ষে বিপক্ষে রয়েছে নানা যুক্তি। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে- জীবন এবং জীবিকার সংকট সমাধান কোথায়, নাকি দুটি বিষয়েই শঙ্কা বাড়লো?
সংক্রমণ বিস্তার ও ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ না করাটা আরও বড় বিপদের কারণ হয় কিনা সে বিষযটিও কারো কারো ভাবনায় ভীষণ গুরুত্ব পাচ্ছে। অভিজ্ঞতায় এও আছে, যেসব দেশ শুরুতে এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেনি, তাদের অনেক বেশি মূল্য দিতে হয়েছে। এমতাবস্থায় ব্যক্তিগত সতর্কতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এ ব্যাপারে হেলাফেলার ফল ভালো হবে না। বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই বলে আসছেন, সংক্রমণ ঝুঁকি আরও কিছুদিন প্রকট থাকবে। উদ্বেগের বিষয় হলো, জনপরিসরে শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার ব্যাপকভাবে ব্যত্যয় ঘটে চলেছে।
অর্থনীতির আরও ক্ষতি এড়ানো এবং জীবনযাত্রার জন্য আয়-রুজির স্বার্থে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনঃশুরু করার বিকল্প যেহেতু নেই, সেহেতু সংক্রমণ ন্যূনতম মাত্রায় সীমাবদ্ধ রাখার প্রতি অবশ্যই গভীর মনোযোগী হতে হবে। আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবার পথ আরও সুগম করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার গাফিলতি কী ভয়াবহ হতে পারে, এ ব্যাপারে সমাজে গণমাধ্যমের সাহায্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে অধিকতর সজাগ করার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। সরকারকে আরও মনোযোগ দিতে হবে চিকিৎসার পরিধি ও সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে। না হলে পুরো দেশই বিপদে পড়তে পাগরে। তবে এটি কেবল সরকারের একার বিষয় নয়। যার যার অবস্থান থেকে সবাইকেই এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

Tagged