করোনায় মৃত্যু ৩ হাজার ছাড়িয়েছে, আক্রান্ত ৯০ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বিশ্বজুড়ে বিরাজ করছে করোনাভাইরাস আতঙ্ক। এ ভাইরাস ছড়িয়েছে ৭৬টি দেশে। এই পর্যন্ত মারা গেছেন ৩১২০ জন। আক্রান্ত ৯০ হাজার ৯৩৩ জন। দূর্বল হয়ে পড়ছে বিশ্বের অর্থনীতির চাকা। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বিশ্বজুড়ে জীবনযাত্রায়।

করোনাভাইরাস কীঃ

করোনা ভাইরাস হলো নিদুভাইরাস শ্রেণীর করোনাভাইরদা পরিবারভুক্ত করোনাভাইরিনা উপগোত্রের একটি সংক্রমণ প্রজাতি ভাইরাস। এ ভাইরাসের জিনোম নিজস্ব আরএনএ দিয়ে গঠিত। এর জিনোমের আকার সাধারণত ২৬ থেকে ৩২ কিলো বেস-পেয়ার (kilo base-pair) এর মধ্যে হয়ে থাকে যা এ ধরনের আরএনএ ভাইরাসের মধ্যে সর্ববৃহৎ। করোনাভাইরাস শব্দটি ল্যাটিন করোনা  থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ মুকুট। কারণ ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ভাইরাসটি দেখতে অনেকটা মুকুটের মত। ভাইরাসের উপরিভাগে প্রোটিন সমৃদ্ধ থাকে যা ভাইরাল স্পাইক পেপলোমার দ্বারা এর অঙ্গসংস্থান গঠন করে। এ প্রোটিন সংক্রামিত হওয়া টিস্যু বিনষ্ট করে। সকল প্রজাতির করোনাভাইরাসে সাধারণত স্পাইক (এস), এনভেলপ (ই), মেমব্রেন (এম) এবং নিউক্লিওক্যাপসিড (এন) নামক চার ধরনের প্রোটিন দেখা যায়।

করোনাভাইরাসের ইতিহাসঃ

করোনাভাইরাস ১৯৬০-এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। প্রথমদিকে মুরগির মধ্যে সংক্রামক ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস হিসেবে এটি প্রথম দেখা যায়। পরে সাধারণ সর্দি কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এরকম দুই ধরনের ভাইরাস পাওয়া যায়। মানুষের মধ্যে পাওয়া ভাইরাস দুটি ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ২২৯ই’ এবং ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ওসি৪৩’ নামে নামকরণ করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ভাইরাসটির আরো বেশ কিছু প্রজাতি পাওয়া যায় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০০৩ সালে ‘এসএআরএস-সিওভি’, ২০০৪ সালে ‘এইচসিওভি এনএল৬৩’, ২০০৫ সালে ‘এইচকেইউ১’, ২০১২ সালে ‘এমইআরএস-সিওভি’ এবং সর্বশেষ ২০১৯ সাল চীনে ‘নোভেল করোনাভাইরাস’। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ ভাইরাসের ফলে শ্বাসকষ্টের গুরুতর সংক্রমণ দেখা দেয়।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবঃ

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রামণ দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘২০১৯-এনসিওভি’ নামকরণ করে। ২০২০ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত চীনসহ ৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়।

নিশ্চিতভাবে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে আরো ৯০,০০০ রোগী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। উহানে দেখা দেওয়া ভাইরাস প্রজাতিটি ‘এসএআরএস-সিওভি’ প্রজাতির সাথে ৭০% জিনগত মিল পাওয়া যায়। অনেকেই অনুমান করছেন নতুন এ প্রজাতিটি সাপ থেকে এসেছে যদিও অনেক গবেষক এ মতের বিরোধীতা করেন।

করোনাভাইরাসের সামগ্রিক চিত্র-

দেশের নাম মোট আক্রান্ত নতুন আক্রান্ত মোট মৃত্যু নতুন মৃত্যু বর্তমান রোগি আরোগ্য আশঙ্কায় রয়েছে
চীন ৮০,১৫২ ১২৬ ২,৯৪৫ ৩৩ ২৯,৮৬৪ ৪৭,৩৪৩ ৬,৮০৬
দ. কোরিয়া ৫,১৮৫ ৮৫১ ২৮ ৫,১২৪ ৩৪ ২৭
ইতালী ২,০৩৬ ৫২ ১,৮৩৫ ১৪৯ ১৬৬
ইরান ১,৫০১ ৬৬ ১,১৪৪ ২৯১
ডায়মন্ড প্রিন্সেস ৭০৬ ৫৯৯ ১০০ ৩৬
জাপান ২৭৪ ২২৫ ৪৩ ২৩
ফ্রান্স ১৯১ ১৭৬ ১২
জার্মানী ১৬৫ ১৪৯ ১৬
স্পেন ১২০ ১১৮
সিঙ্গাপুর ১০৮ ৩০ ৭৮
আমেরিকা ১০৩ +৩ ৮৮
হংকং ১০০ ৬২ ৩৬
কুয়েত ৫৬ ৫৬
বাহরাইন ৪৯ ৪৯
থাইল্যান্ড ৪৩ ১২ ৩০
তাইওয়ান ৪১ ২৮ ১২
বৃটেন ৪০ ৩২
অস্ট্রোলিয়া ৩৪ +১ ১৮ ১৫
সুইজারল্যান্ড ৩০ ২৯
মালেশিয়া ২৯ ২২
কানাডা ২৭ ২০
ইরাক ২৬ ২৬
নরওয়ে ২৫ ২৫
আরব আমিরাত ২১ ১৬
অস্ট্রিয়া ১৮ ১৮
নেদারল্যান্ড ১৮ ১৮
ভিয়েতনাম ১৬ ১৬
সুইডেন ১৫ ১৫
লেবানন ১৩ ১৩
ইসরাইল ১২ ১১
মাকাও ১০
আইসল্যান্ড
সান ম্যারিনো
বেলজিয়াম
ক্রোয়েশিয়া
ইকুয়েডর +১
ফিনল্যান্ড
গ্রিস
কাতার
ভারত
মেক্সিকো
ওমান
আলজেরিয়া
পাকিস্তান +১
চেক রিপাবলিক
ডেনমার্ক
ফিলিপাইন
আজার বাইজান
জর্জিয়া
রোমানিয়া
রাশিয়া
ব্রাজিল
মিশর
ইন্দোনেশিয়া
পর্তুগাল
আফগানিস্তান
আনদোর্রা
আর্মেনিয়া
বেলারুস
কম্বোডিয়া
ডোমিসিয়ান রিপাবলিক
ইস্টোনিয়া
আয়ারল্যান্ড
জর্ডান
লাতভিয়া
লিথুনিয়া
লুক্সেমবার্গ
উ. ম্যাকাডনিয়া
মোনাকো
মরোক্কো
নেপাল
নিউজিল্যান্ড
নাইজেরিয়া
সৌদি আরব
সেনেগাল
শ্রিলংকা
তিউনেশিয়া
মোট = ৯১,৩০৭ ৯৮৩ ৩,১২০ ৩৩ ৩৯,৯৩৪ ৪৮,২৫৩ ৭,০৯৮

করোনাভাইরাস হানা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে। দী্ঘসময় পার হলেও এখনো করোনাভাইরাসের কোনো এন্টিডোট তৈরি করা সম্ভব হয়নি। দূর্বল হয়ে পড়ছে অর্থনীতির চাকা। বিশ্বের বড় বড় উৎপাদন ব্যবস্থায় ধস নামছে। ক্ষতির মূখে পড়ছে অনেক বড় বড় কোম্পানি। করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাজারে। (পড়ুন, করোনার প্রভাবে আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারে ব্যাপক পতন)। সূত্রঃ উইকিপিডিয়া, ওয়ার্ডওমিটার।

এসএমজে/২৪/বা

Tagged