‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে’- কুসুম কুমারী দাশের এই কবিতার পঙক্তি শোনেননি বা পড়েননি- এমন শিক্ষিত বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। তারপরও আমাদের দেশে কথার চেয়ে কাজে বড় হওয়া লোকের অভাব প্রায়ই দেখা যায়। দেশের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে যেন এ অভাব আরও প্রকট। এখানে প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি চলতেই থাকে, কিন্তু কথা রাখা হয় না, বাস্তবায়ন হয় না। দেশের মানুষের মতো আমরাও পথ চেয়ে আছি- কবে কথা রাখা হবে- সেই দিকে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যেসব কোম্পানি ১ বছরের বেশি সময় ধরে জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে, সেসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ আগামী ৬ মাসের মধ্যে পুনর্গঠন করে ২৪ মাসের মধ্যে কোম্পানির অপারেশনাল এবং ফাইন্যান্সিয়াল পারফরম্যান্স উন্নত না করতে পারলে তখন আইন অনুযায়ী কোম্পানিকে মার্জার অথবা বিলুপ্ত বা অবসায়ন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
আমরা এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই এবং বলেতে চাই, জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছে দায়বদ্ধ। কারণ কোম্পানিগুলো তাদের থেকে পুঁজি সংগ্রহ করেছে। আবার এই প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাও দায়িত্বসূত্রে বিনিয়োগকারীদের কাছে দায়বদ্ধ। কারণ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ হচ্ছে পুঁজিবাজারে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা। এ অবস্থায় কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর জেড ক্যাটাগরিতে পড়ে থেকে দায়িত্ব শেষ করতে পারে না।
গত ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত কমিশনের ৬৮২তম সভায় ওই কোম্পানিগুলো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও, সেটি বাস্তবায়নের চিত্র এখনও পরিস্কার নয়।
এদিকে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলছে। সুতরাং জেড ক্যাটাগরিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে কোম্পানিগুলো কিছুতেই দায় এড়াতে পারে না। এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়েছে, সেটি যেন কথার কথা না হয়ে কার্যকর হয়- বিনিয়োগকারীদের মতো আমাদেরও প্রত্যাশা।
ব্রেকিং নিউজ :