অভিভাবকদের কাছে দায়িত্বশীল বক্তব্যই কাম্য

সন্তান যখন ভুল করে কিংবা বিপদে পড়ে তখন মা আশ্রয় দেন, বাবা সান্ত্বনা দেন, অন্য অভিভাবকরা এগিয়ে আসেন তাকে রক্ষা করতে। এটি আমাদের সমাজিক মূল্যবোধে সাধারণ শিষ্টাচার। এর জন্য বড় ধরনের জ্ঞানী-গুণী হওয়ার দরকার নেই। এটি সামাজিক শিক্ষা থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু এর ব্যতিক্রম দেখা যায় আমাদের পুঁজিবাজারে। এখানে একের পর এক বাজার ধসে বিনিয়োগকারীরা যখন দিশেহারা হয়ে পড়েন, ব্যাপক ক্ষতির শিকার হন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও উপর মহল থেকে প্রায়ই বলা হয়ে থাকে- তারা বিনিয়োগ করেছেন কেনো, তাদেরকে পুঁজিবাজারে কে ডেকে এনেছে, ইত্যাদি।

গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা, দায়বদ্ধতা এসব বিষয় না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু আমরা কি বিপদগ্রস্ত মানুষের প্রতি সাধারণ সহানুভূতি প্রকাশের যে সামাজিক শিষ্টাচার সেটিও ভুলে যাবো? বিশেষ করে অভিভাবকের অবস্থানে থেকে এটি করা কতটা মানবিক, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।

পুঁজিবাজারে কে কাকে ডেকে আনল সেটি বড় কথা  নয়। গণতান্ত্রিক দেশে ভাগ্য উন্নয়নে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করবে, এটি তার অধিকার। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করাও তার মধ্যেই পড়ে। সরকার বা সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাজ জনগণের অধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা বিধান করা। কোনো নাগরিক বা মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হচ্ছে তার পাশে থাকা এবং সংবিধান ও আইন প্রদত্ত ব্যবস্থা নেয়া। সেটি না করা অবশ্যই দায়িত্বহীনতার মধ্যে পড়ে। গণতান্ত্রিক দেশে এমনটি করার সুযোগ নেই। বরং আমরা যদি যে যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হই তাহলে শুধু পুঁজিবাজার নয়, সমগ্র দেশই এক সময় মানুষের কল্যাণকামী হবে। এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

Tagged