সবার আগে নজর দিতে হবে পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতার দিকে

পুঁজিবাজারে দামের ওঠানামা তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মুনাফায় বড় ভূমিকা রাখে। সে অনুযায়ী যে কোম্পানি যত বেশি মুনাফা করবে, সেটির শেয়ারের দামও তত বাড়বে। এটিই পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক প্রবণতা। তবে কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও ঘটে। কিন্তু স্বাভাবিক প্রবণতাকে বিবেচনায় নিলে বলা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো লাভ-লোকসানের যে হিসাব দিচ্ছে, তা পুঁজিবাজারের জন্য সুখকর নয়।

বাজার যদি স্বাভাবিক আচরণ করে, তাহলে কোম্পানির মুনাফা কমলে তার নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যই শেয়ারের দামে পড়বে। তবে দীর্ঘদিন কোম্পানিগুলো লোকসান বইবে না। একপর্যায়ে গিয়ে তারা মুনাফায় ফিরতে পণ্যের দাম আরও বাড়িয়ে দেবে। তখন কোম্পানিগুলো হয়তো লাভে ফিরবে। তাই কোম্পানির মুনাফা কমায় সাময়িকভাবে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দীর্ঘ মেয়াদে এ অবস্থা থাকবে না। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে আগ্রহী হতে হবে।

গত এক সপ্তাহে প্রকাশিত ২৮টি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিং, টেলিকম খাতের এডিএন টেলিকম ও হোটেল খাতের ইউনিক হোটেলের মুনাফা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। গত কয়েক দিনে তার প্রভাব দেখা গেছে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দাম তিন কার্যদিবসে প্রায় ১৯ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০২ টাকা। একই সময়ে ইউনিক হোটেলের শেয়ারের দাম সাড়ে ৬ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ টাকা ৩০ পয়সায়, আর এডিএন টেলিকমের শেয়ার ৮ টাকা বেড়ে ১২১ টাকায় উঠেছে।

বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারই এখন সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। ফলে মুনাফা কমে যাওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামে নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়েনি। ওয়ালটন, আইসিবি, আরএকে সিরামিকস, সিঙ্গার বাংলাদেশের মতো ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমলেও তাদের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। ফলে মুনাফা কমার প্রভাব এসব শেয়ারে পড়েনি। তাতে অবশ্য বাজার রক্ষা পেয়েছে নেতিবাচক প্রভাব থেকে।  যাই হোক বাজার পরিস্থিতি উন্নতির জন্য, প্রথমেই নজর দিতে হবে স্বচ্ছতার দিকে।

Tagged