৯ কোম্পানির হাজার কোটি টাকার আইপিও আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শেয়ারবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের অনুমতি পেয়েছে বিভিন্ন খাতের ৯ কোম্পানি। কোম্পানিগুলোর শেয়ার ছেড়ে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার বেশি মূলধন সংগ্রহ করবে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন পাওয়া এই ৯ কোম্পানির মধ্যে ৩টির আইপিও অর্থ সংগ্রহের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।

এর মধ্যে দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আইপিও আসছে টেলিযোগাযোগ খাতের দ্বিতীয় শীর্ষ কোম্পানি রবি আজিয়াটা। কোম্পানিটি ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করবে।

ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডসহ তিনটি কোম্পানিই ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে টাকা সংগ্রহ করবে।

বাকি ৬টির আইপিও অর্থ সংগ্রহের তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। কোম্পানিগুলোর মধ্যে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও ই-জেনারেশন ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসছে।

বাকি ৪টি কোম্পানি মীর আক্তার হোসাইন, লুব-রেফ বাংলাদেশ, ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে অর্থ সংগ্রহ করবে।

রবি আজিয়াটা : রবি আজিয়াটা ফিক্সড প্রাইস মেথডে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা তুলবে। আইপিও অর্থ জমা নেওয়া শুরু হবে ১০ নভেম্বর।

২০১৯ সালে রবি মুনাফা দেখিয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর আগে পর পর দুবছর যথাক্রমে ১৪ কোটি ৭৩ লাখ ও ১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী রবির মোট সম্পদ ১৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট ০.১০ শতাংশ। এর অর্থ ১০০ টাকার সম্পদ ব্যবহার করে ০.১০ টাকা মুনাফা হয়েছে।

ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস : ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস। এর মধ্যে চাঁদার টাকা জমা নেওয়া শেষ হয়েছে গত ২৫ অক্টোবর।

নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে ডমিনেজ স্টিল ২০১৯ সালে মুনাফা দেখিয়েছে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর আগের দুই বছরে যথাক্রমে ৯ কোটি টাকা ও ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা মুনাফা দেখানো হয়েছে।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড : ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সও ফিক্সড প্রাইস মেথডে টাকা তুলবে ১৬ কোটি। আইপিও অর্থ জমা নেওয়া শুরু হবে ১০ নভেম্বর থেকে।

কোম্পানিটি ২০১৯ সালে ৭ কোটি ২ লাখ মুনাফা দেখিয়েছে। এর আগে পর পর দুই বছর ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার মুনাফা দেখানো হয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের মোট সম্পদ ১০৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট ৬.৬৪ শতাংশ; নেট প্রফিট মার্জিন ১৩.৩০ শতাংশ।

লুব-রেফ বাংলাদেশ : বুক বিল্ডিং মেথডে ১৫০ কোটি টাকা লুব-রেফ বাংলাদেশ। লুব-রেফ বাংলাদেশের কাট অব প্রাইস নির্ধারিত হয়েছে ৩০ টাকায়। ১০ শতাংশ কম দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার পাবেন। আইপিও অর্থ সংগ্রহের তারিখ এখনও ঠিক করেনি।

কোম্পানিটি ২০১৯ সালে আগের তিন বছরে যথাক্রমে ২০ কোটি ৭৬ লাখ, ২০ কোটি ৪৫ লাখ ও ১৫ কোটি ৬ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, লুব-রেফ বাংলাদেশের মোট সম্পদ ৫০৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা; রিটার্ন অন অ্যাসেট ৪.১১ শতাংশ ও নেট প্রফিট মার্জিন ১৩.৫৪ শতাংশ।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড : বুক বিল্ডিং মেথডে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড বাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা তুলবে। আইপিও অর্থ সংগ্রহের তারিখ এখনও ঠিক করেনি।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের কাট অফ প্রাইস হয়েছে ৩৫ টাকা। এর থেকে ১০ শতাংশ কম দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনতে পারবেন।

এনার্জিপ্যাক ২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছর যথাক্রমে ৪৭ কোটি ৯৯ লাখ, ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ও ৩০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনার্জিপ্যাকের মোট সম্পদ ৩ হাজার ২০৪ কোটি টাকা; রিটার্ন অন অ্যাসেট ১.৫০ শতাংশ ও নেট প্রফিট মার্জিন ৩.৩৩ শতাংশ।

তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ : খাদ্য ও সহযোগী খাতের কোম্পানি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। আইপিও অর্থ সংগ্রহের তারিখ এখনও ঠিক করেনি।

কোম্পানিটি ২০১৯ সাল থেকে এর আগের তিন বছর যথাক্রমে ৬ কোটি ১৬ লাখ, ৪ কোটি ২৫ লাখ ও মাত্র ২৫ লাখ টাকা।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির মোট সম্পদ ১৬৩ কোটি টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট ৩.৭৯ শতাংশ; নেট প্রফিট মার্জিন ৬.৬৮ শতাংশ।

ই-জেনারেশন : তথ্য-প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি ই-জেনারেশন ফিক্সড প্রাইস মেথডে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। কোম্পানিটির আইপিও অর্থ সংগ্রহের তারিখ এখনও ঠিক করেনি।

২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছর কোম্পানিটি যথাক্রমে ১০ কোটি ৯০ লাখ, ১০ কোটি ৪৯ লাখ ও ৮ কোটি ৬৮ লাখ মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির মোট সম্পদ ১৩১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। রিটার্ন অন অ্যাসেট হচ্ছে ৮.৩০ শতাংশ। নেট প্রফিট মার্জিন ২৯.৯৫ শতাংশ।

মীর আক্তার হোসাইন লিমিটেড : বুক বিল্ডিং মেথডে পুঁজিবাজার থেকে ১২৫ কোটি টাকা তোলার অনুমতি পেয়েছে মীর আক্তার হোসাইন লিমিটেড। কোম্পানিটির আইপিও অর্থ সংগ্রহের তারিখ এখনও ঠিক করেনি।

মীর আক্তারের শেয়ারের কাট অব প্রাইস বা প্রান্তসীমা মূল্য ৬০ টাকা ঠিক হয়েছে। এর থেকে ১০ শতাংশ কম দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার পবেন।

কোম্পানিটি ২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছর যথাক্রমে ৬৩ কোটি ২৫ লাখ, ৬১ কোটি ৮৮ লাখ ও ৫২ কোটি ৯১ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মীর আক্তার হোসাইন লিমিটেডের মোট সম্পদ ১ হাজার ৬৯৯ কোটি; রিটার্ন অন অ্যাসেট ৩.৭২ শতাংশ, নেট প্রফিট মার্জিন ১৪.৮২ শতাংশ।

ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ : বুক বিল্ডিং মেথডে ৫০ কোটি টাকা তুলবে ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ। কাট অব প্রাইস বা প্রান্তসীমা মূল্য নির্ধারণের জন্য বিডিং শুরু হচ্ছে আজ রোববার (১ নভেম্বর)।

ইনডেক্স এগ্রো ২০১৯ সাল থেকে আগের তিন বছরে যথাক্রমে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ, ২৬ কোটি ৫২ লাখ ও ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা মুনাফা দেখিয়েছে।

২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুয়যায়ী, কোম্পানির মোট সম্পদ ৩১৮ কোটি ১২ লাখ টাকা; রিটার্ন অন অ্যাসেট ৮.৬৭ শতাংশ ও নেট প্রফিট মার্জিন ৬.৩৭ শতাংশ।

এসএসজে/২৪/রা

Tagged