এম এইচ রনি:
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে ৬৫ কোম্পানির মধ্যে ১১ কোম্পানির হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ ১১ কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের প্রায় চার শ’ কোটি টাকা আটকে আছে। পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হয়ে ওটিসি মার্কেটে থাকা এসব কোম্পানির হদিসই পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাদের টাকা উদ্ধারের কোন তৎপরতা নেই। বাধ্য হয়ে অনেকেই হাল ছেড়ে দিয়েছেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ডিএসইর ওটিসি মার্কেটে ৬৫ কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৩২ কোম্পানি পুঁজিবাজারের বিদ্যমান আইন কিছুটা অনুসরণ করলেও বাকিরা আইনের তোয়াক্কা করছে না। এর মধ্যে ২২ কোম্পানি নামমাত্র অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। কয়েকটি কোম্পানি প্রতিবছর লভ্যাংশ ঘোষণা করছে। কিন্তু অন্য ১১ কোম্পানির বর্তমানে কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে উধাও হওয়া ওটিসি মার্কেটের এই ১১ কোম্পানি হলো- বাংলাদেশ ইলেক্ট্র্রিসিটি মিটার কোম্পানি (বেমকো), চিক টেক্সটাইল, রাসপিট ডাটা, রাসপিট ইনকর্পোরেশন, এম হোসেন গার্মেন্টস, ফার্মাকো, আমান সি ফুড, জার্মান বাংলা ফুড, মেটালিক্স, রাঙামাটি ফুড ও সালেহ কার্পেট। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের প্রায় চার কোটি ৮৭ লাখ শেয়ার রয়েছে, যার বাজারমূল্য ৪শ’ কোটি টাকার বেশি। নির্দিষ্ট ঠিকানায় গিয়ে এসব কোম্পানির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ওইসব ঠিকানায় কোথাও আবাসিক বাসা, কোথাও মুদি দোকান, আবার কোথাও বেসরকারী ক্লিনিক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) (ওভার দ্য কাউন্টার) বিধিমালা ২০০১ অনুযায়ী ২০০৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসির আদেশ নং এসইসি/ সিএমআরআরসিডি/ ২০১১-১৬ অনুসারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডকে কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের জন্য ওভার দ্য কাউন্টার সুযোগ দেয়। ২০০৯ সালের ১ অক্টোবরে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫১ কোম্পানি নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ওটিসি মার্কেট যাত্রা শুরু করে। ৫১ কোম্পানির মধ্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড ’১০ সালের ১৩ জুন ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে মূল বাজারে ফিরে আসে। এরপর আরও ২৯ কোম্পানিকে বিদ্যমান ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই শর্ত পূরণ করায় দশটি কোম্পানিকে আবার মূল মার্কেটে ফেরার অনুমোদন দেয় বিএসইসি। জিএমজি ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল কর্পোরেশন লিমিটেড নামে একটি কোম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওটিসি মার্কেট থেকে ’১১ সালের ২০ জুন তালিকাচ্যুত করা হয়। এরপর ’১৪ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ পদ্মা সিমেন্ট লিমিটেডকে তালিকাচ্যুত করে। একই বছরের ১৪ মে ওয়াটার কেমিক্যালস লিমিটেডের শেয়ার ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে যাওয়ার আবেদন অনুমোদন করে ডিএসই। সর্বশেষ ’১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে যাওয়ার আবেদন অনুমোদন করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ। ওটিসিতে থাকাকালীন এটি সজিব নিটওয়্যার নামে পরিচিত ছিল। এ অবস্থায় বর্তমানে ওটিসি মার্কেটে সর্বমোট ৬৫ কোম্পানি রয়েছে।
এসএমজে/২৪/এম এইচ