এসএমজে রিপোর্ট: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ এর গেজেট প্রকাশ করেছে । সম্প্রতি এই সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে বিএসইসি। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুষ্ঠিত ৬৯৩তম সভায় পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ এর সংশোধন এনে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। সম্প্রতি এই সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে কমিশন।
সূত্রমতে, পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ এর যা যা সংশোধন করে চূড়ান্ত করা হয়েছে তা হলো:
০১. আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারী (ইলিজিবল ইনভেস্টর) হিসেবে কোটা সুবিধা গ্রহণ করতে হলে কমিশন কর্তৃক নির্দিষ্ট অংকের সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ থাকতে হবে। এই বিনিয়োগ না থাকলে কোন যোগ্য বিনিয়োগকারী তাদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের কোটা সুবিধা পাবেন না। সেকেন্ডারি মার্কেটে এই বিনিয়োগের পরিমাণ কত হবে তা কমিশন প্রত্যেক পাবলিক ইস্যুর সম্মতিপত্রে উল্লেখ করবে।
০২. পূর্বের ইস্যুকৃত মূলধনের ৮০ শতাংশ ব্যবহার না করে পাবলিক ইস্যুর প্রস্তাব করা যাবে না।
০৩. স্থির মূল্যের (ফিক্সড প্রাইস) পাবলিক ইস্যুর পরিমাণ কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা অথবা ইস্যুয়ারের পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ যা বেশি সে পরিমাণ হতে হবে। তবে ইস্যু পরবর্তী মূলধন কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা হতে হবে।
০৪. স্থির মূল্যের (ফিক্সড প্রাইস) পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে ইস্যূয়ার কোম্পানির এক বছরের যে পজেটিভ নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর শর্তটি বাতিল করা হলো।
০৫. বুকবিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ কমপক্ষে ৭০ কোটি টাকা হতে হবে।
০৬. বুক বিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীর শেয়ারের কোটা বিডিং এর মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে বিক্রি না হলে সে ইস্যু বাতিল হয়ে যাবে।
০৭. স্টক এক্সচেঞ্জকে পাবলিক ইস্যুর তালিকাভুক্তির আবেদন পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে পাবলিক ইস্যু রুলস বা অন্যান্য সিকিউরিটিজ আইন অথবা অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডের ব্যত্যয়, যদি থাকে, উল্লেখপূর্বক তাদের মতামত কমিশনে প্রেরণ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে মতামত প্রদান না করলে ধরে নেয়া হবে যে স্টক এক্সচেঞ্জের এ বিষয়ে কোন পর্যবেক্ষণ নেই।
০৮. বুক বিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিংয়ের সময় কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
০৯. বুক বিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তাদের বিডের ১০০% মূল্য যে এক্সচেঞ্জ বিডিং পরিচালনা করছে তাকে জমা দিতে হবে।
১০. বুক বিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ বিডাররা যে মূল্যে এবং যে পরিমাণ শেয়ার বিড করবেন সেই মূল্যেই সেই পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করতে হবে।
১১. বুক বিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ শেয়ারের অ্যালটমেন্ট সর্বোচ্চ মূল্যস্তরে শুরু হবে এবং ক্রমান্বয়ে তা নিচের দিকে আসবে। যে মূল্যে শেয়ার শেষ হবে তা কাট অফ প্রাইস হিসাবে গণ্য হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সেই মূল্য থেকে ১০% কমে শেয়ার ক্রয় করবেন।
১২. বুক বিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর বিডিং এ যদি কাট অফ প্রাইসে একাধিক বিডারের বিড থাকে সেক্ষেত্রে যে বিডার আগে বিড দাখিল করেছেন তাকে প্রথমে শেয়ার প্রদান করা হবে।
১৩. বিডিং এর চূড়ান্ত ফল, মূল্য ও বরাদ্দকৃত শেয়ারের সংখ্যাসহ যারা শেয়ার পেয়েছেন তাদের ই-মেইলের মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে এবং একই সাথে ইস্যুয়ার, ইস্যু ম্যানেজার এবং এক্সচেঞ্জের ওয়েব সাইটে তা প্রকাশ করা হবে।
১৪. অকৃতকার্য বিডারের টাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সর্বোচ্চ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে বিডারকে ফেরত দিবে।
১৫. কৃতকার্য বিডারের টাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সর্বোচ্চ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ইস্যুয়ারের ব্যাংক হিসেবে জমা করবে।
১৬. বিডিং এর পর খসড়া প্রসপেক্টাস এবং সকল কাগজপত্র প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে কমিশন সাধারণ জনগনের কাছে শেয়ার বিক্রির অনুমোদন প্রদান করবে।
১৭. স্থির মূল্যে (ফিক্সড প্রাইস) পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীর কোটা ৪০% থেকে কমে ৩০% হবে এবং সাধারণ জনগনের কোটা (এনআরবি ব্যতিত) ৪০% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫০% হবে।
১৮. অভিহিত মূল্যের পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে আবেদন সম্মিলিতভাবে ৬৫% এর কম হলে ইস্যু বাতিল হয়ে যাবে এবং আবেদন সম্মিলিতভাবে ৬৫% অথবা তার বেশি হলে কিন্তু ১০০% এর কম হলে বাকি শেয়ার আন্ডার রাইটার গ্রহণ করবে।
১৯. বুক বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীর কোটা ৬০% থেকে কমিয়ে ৫০% এবং সাধারণ জনগনের কোটা ৩০% থেকে বাড়িয়ে ৪০% হবে।
২০. উদ্যোক্তা/পরিচালক ও ১০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারনকারীদের জন্য ৩ বছর লক-ইন প্রযোজ্য হবে। এছাড়া উদ্যোক্তা/পরিচালক ও ১০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারনকারীদের হস্তান্তরকৃত শেয়ারে লক-ইন ৩ বছর, আইপিওর ৪ বছরে পূর্বে ইস্যুকৃত শেয়ারে ১ বছর, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে ১ বছর ও বাকি অন্যসব শেয়ারে ২ বছর লক-ইন রাখা হবে।
২১. পাবলিক ইস্যুর আবেদনের সময় ইস্যুয়ারকে পূর্বে নগদে উত্তোলিত মূলধনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের অথবা অডিটরের সার্টিফিকেট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট দাখিল করতে হবে। এবং
২২. পাবলিক ইস্যুর আবেদনের সময়ে ইস্যুয়ারকে পূর্বে নগদে ব্যতিত উত্তোলিত মূলধনের ক্ষেত্রে যৌথ মূলধনী কোম্পানির রেজিস্টারের সার্টিফাইড ভেন্ডর এগ্রিমেন্ট এবং সম্পদের মালিকানা সংক্রান্ত টাইটেল ডকুমেন্ট কমিশনে জমা দিতে হবে।
এসএমজে/২৪/এমএইচ