যারা শেয়ারবাজারের দায়িত্ব পেয়ে বেঈমানী করেছেন তাদের শাস্তি হোক

পুঁজিবাজারে খুবই দুর্দিনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামকে। তার কাছে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল, তিনি একটি ভালো শেয়ারবাজার উপহার দেবেন। বিশেষ করে যেখানে দুর্নীতি অনিয়ম থাকবে না। কিন্তু অনেকে ক্ষেত্রেই দেখা গেছে তিনি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি বরং কাজ করেছেন তার উল্টো। তাই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তার বেঈমানী থাকলে কেনো তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে না?

সম্প্রতি ঘোষণা ছাড়া উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস। এর ফলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের অনুমোদন দেওয়া কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে গেল।

নিয়ম অনুযায়ী, কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করা হলে তা বিনিয়োগকারীদের জানাতে হয়। কিন্তু কোম্পানিটি এই নিয়ম মানেনি। ফলে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেও তা জানতেন না বিনিয়োগকারীরা।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি কোম্পানিটির কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে উৎপাদন বন্ধের এই তথ্য জানতে পারে। গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর পক্ষ থেকে কারখানা বন্ধের এ তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের সময় ২০২০ সালে ডমিনেজ স্টিলকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। আইপিওর মাধ্যমে এটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এ জন্য আইপিওতে ৩ কোটি শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানিটি।

গণমাধ্যমের খবরের সূত্রে বিএসইসির অনুমোদনের সময়ই দুর্বল মানের কোম্পানিটির অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু ওই সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থা শীর্ষ পর্যায়ের সমর্থন থাকায় এটির আইপিও অনুমোদনে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে আনতে ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট। শাহজালাল ইক্যুইটির মালিকানায় রয়েছেন ছাগল-কাণ্ডে আলোচিত এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস। চক্রটি ছিল বিএসইসির সাবেক দুই চেয়ারম্যান এম খাইরুল হোসেন ও শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের ঘনিষ্ঠ। এ কারণে শাহজালাল ইক্যুইটির হাত ধরে নিম্নমানের অনেক কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ পায় গত দুই কমিশনের সময়কালে।

এখন যেহেতু সময় এসেছে, এ ধরনের অনিয়মে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাতে পরে আর কেউ এ ধরনের কাজ করতে না পারে।

Tagged