বিনিয়োগকারীদের ১৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ক্রেস্টের এমডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের গচ্ছিত ১৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শহিদুল্লাহ। প্রতিষ্ঠানটিতে অবশ্য গ্রাহকদের টাকার পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এই সদস্য প্রতিষ্ঠানটিতে ২২ হাজার গ্রাহক রয়েছে।

সময়সুযোগ পেলে হয়তো বাকি টাকাও সরিয়ে নিতেন তিনি এবং তার স্ত্রী। কিন্তু সুযোগের অভাবে তা করতে সক্ষম হননি।

সোমবার (৬ জুলাই) পুলিশের গোয়েন্দা শাখাডিবি হাতে আটক হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে মো. শহিদুল্লাহ এই টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন। এদিন ডিবি লক্ষ্মীপুর নোয়াখালীর সীমান্ত এলাকা থেকে স্ত্রী নিপা সুলতানসহ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। মো. শহিদুল্লার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির একজন পরিচালক।

মঙ্গলবার ( জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রপলিট্যান পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টে গ্রাহকের শেয়ার কেনাবেচার ১০০ কোটি টাকার জমা ছিল। সেই টাকা আত্মসাতের টার্গেট ছিল তাদের। ১৮ কোটি টাকা তুলেও ফেলেছিল তারা। তবে এর আগেই ডিবির অভিযানে ধরা পড়ে।

মো. আবদুল বাতেন বলেন, এমডি তার স্ত্রী গত ২২ জুন তার ক্রেস্ট সিকিউরিটিস স্টক ব্রোকারেজ হাউজটি বন্ধ করে চলে যায়। তার প্রতিষ্ঠানে আনুমানিক ২২ হাজার বিও অ্যাকাউন্টধারীদের শেয়ারবাজারে শেয়ার কেনাবেচার ১০০ কোটি টাকা ছিল। শহিদুল্লাহ ২২ তারিখে তার প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ কোটি টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে শিফট করে প্রতারণার জন্য সরিয়ে নিয়েছেন। বিনিয়োগকারীরা যখন দেখলো, অ্যাকাউন্টে টাকা নেই, তখন তারা অফিসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। তখন দেখে অফিস তালা শহিদুল্লাহ, তার স্ত্রী ভাই পালিয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত গত মাসের (জুন) শেষ সপ্তাহে হঠাৎ ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের প্রধান কার্যালয়সহ সব শাখা অফিস বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপন করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল্লাহ, তার স্ত্রী নিপা সুলতানা। তারা গ্রাহকদের টাকা শেয়ার আত্মসাত করে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন গ্রাহকরা। হাজী নিশাত নামে একজন গ্রাহক ২৫জুন রমনা থাকায় একটি জিডিও দায়ের করেন।

অন্যদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসিগত ২৫ জুন ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ, এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার স্ত্রীর নামে থাকা সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি তারা যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলারক্ষাবাহিনীকেও জানানো হয় বিষয়টি। তখন থেকেই তাদেরকে আটক করার জন্য মাঠে ছিল পুলিশ বিভিন্ন সংস্থা।

তবে মো. শহীদল্লাহ তার দোসররা বিনিয়োগকারীদের কী পরিমাণ অর্থ শেয়ার আত্মসাত করেছে তা এখনো জানা যায়নি। বিষয়ে ব্রোকারহাউজটির গ্রাহকদের কাছ থেকে তথ্য চেয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ডিএসই। তারা এক সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের আশ্বাস দিয়েছে, তাদের টাকা শেয়ার খোয়া গিয়ে থাকলে তা ফেরত পাওয়ার সব ব্যবস্থা করবে ডিএসই।

এসএমজে২৪/কা

Tagged