নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি যে অবস্থায় আছে, সেটি কাটিয়ে উঠে বছরশেষে প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশের কাছে পৌঁছে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া।
তিনি বলেন,‘জুলাই-অক্টোবর সময়ে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের ওপরে রয়েছে। আগস্ট-সেপ্টম্বরে আমদানি-রফতানি শুল্ক ও ভ্যাটের রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ছিল। অক্টোবরে সেটি কাটিয়ে উঠেছি। আশা করি বছরশেষে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশের কাছে পৌঁছে যাবে।’
গতকাল ৮ ডিসেম্বর রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সম্মেলনকক্ষে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই-অক্টোবর সময়ে রাজস্ব আয়ের হিসাব তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, আলোচ্য সময়ে আয়কর, আমদানি-রফতানি শুল্ক ও ভ্যাট মিলে ৬৫ হাজার ৯৬ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে। গত অর্থবছর একইসময়ে এর পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের ওপরে।
তিনি আরো জানান, জুলাই-অক্টোবর আয়কর ও ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
রাজস্ব আয় প্রবৃদ্ধির শ্লথ গতির বিষয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, যেহেতু আমরা এবার নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করেছি এবং এটি সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক। তাই রিটার্ন দাখিল, নিবন্ধন, কর পরিশোধ সবকিছু অনলাইনভিত্তিক অর্থ্যৎ স্ব-নির্ধারণী পদ্ধতিতে করতে হচ্ছে। কিন্তু সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনও অনলাইনে যেতে পারেনি, কিংবা বছররের প্রথমদিকে অনেকেই অনলাইন পদ্ধতিতে আসতে পারেনি। ফলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভ্যাট আহরণের প্রবৃদ্ধি একেবারে শ্লথ ছিল,সেটি অক্টোবরে কেটে গেছে। তিনি বলেন, ভ্যাট আহরণের নভেম্বরের হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি, নভেম্বরের হিসাবে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের বেশি হবে।
তিনি আরো বলেন, তামাকজাত পণ্য বা সিগারেট থেকে রাজস্ব আয় কমে গেছে। এর কারণ হিসেবে সিগারেট কোম্পানিগুলো বলছে মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সিগারেট বিক্রি কমেছে। আমরাও চাই এর ব্যবহার হ্রাস পাক। এছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি বিলেরও ওপর রেয়াত শতভাগ করা হয়েছে। যা ভ্যাটের আয় কমার অন্যতম কারণ। এসব যৌক্তিক কারণে ভ্যাট রাজস্ব আহরণে প্রথমদিকে শ্লথ গতি ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন,নতুন আইনে ৫০ লাখ টাকার ওপরে বার্ষিক টার্নওভার হলে তাকে ভ্যাট দিতে হবে। কিন্তু এখনও এসব ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেয়া শুরু করেনি, সেজন্য আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। এসব ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
আমদানি-রফতানি শুল্ক থেকে রাজস্ব আয় প্রবৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, আমদানি-রফতানি কিছুটা কম আছে। এ কারণে শুল্ক রাজস্ব আয় কিছুটা কম। তবে ব্যাংকে যথেষ্ট তারল্য থাকায় এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভাল হওয়ায় দ্রুত অর্থনীতিতে গতিধারা সঞ্চারিত হবে, যা আমদানি-রফতানি শুল্ক আহরণসম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।
ব্যবসায়ীদের চলতি ডিসেম্বর মাসে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ডিসেম্বর মাসেই ইএফডি দেয়া শুরু হবে এবং চলতি অর্থবছরের মধ্যে ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ইএফডি পাবে।সূত্র:বাসস
এসএমজে/২৪/এম এইচ