পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের কথা প্রায়ই শোনা যায়। তবে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে সেটি স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তরা আশা করছেন সরকার এবার কার্যকর কিছু করবে। যারার মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
এমতাবস্থায় সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে শেয়ারবাজারের জন্য একগুচ্ছ নীতি সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। উপদেষ্টা প্রথমবারের মতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির কার্যালয়ে গেলে তাঁর সঙ্গে এক বৈঠকে সংস্থাটি বাজারের উন্নয়নে এসব নীতি সহায়তা চেয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে সরকারের কাছ থেকে যেসব নীতি সহায়তা চাওয়া হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাবই দেখান অর্থ উপদেষ্টা। বিএসইসি যেভাবে যতটা সুবিধা চেয়েছে, তার সবগুলো পূরণ করা সম্ভব না হলেও এসব নীতি সহায়তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
বিএসইসির পক্ষ থেকে বাজারের বর্তমান অবস্থায় তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বল্প সুদে পুনঃ অর্থায়ন তহবিল সুবিধা চেয়েছে বিএসইসি। সেই সঙ্গে মূলধনি মুনাফার ওপর উচ্চ হারে যে করারোপ করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) তহবিল সহায়তার বিষয়ে উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অমল কৃষ্ণ মণ্ডলকে আইসিবিকে তহবিল সহায়তার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। তিনি জানান, তারল্য সরবরাহ বাড়াতে পুনঃ অর্থায়ন তহবিল বা ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কী করা যায়, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া তিনি মূলধনি মুনাফার ওপর আরোপিত কর কমানোর বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস দেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায় বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো আমাদের প্রধান লক্ষ্য। প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা ও সংস্কারের মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক মানের বাজার নিশ্চিত করতে চাই আমরা। এ ছাড়া স্বল্প মেয়াদে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে দুশ্চিন্তা রয়েছে, সেটি দূর করতে দ্রুত কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অতিতে সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেগুলো বাস্তবায়নে তেমন কাজ করেনি। তাই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এসব বিষয়ে বিশ্বাসের ঘাটতে থাকতে পারে। তবে আমরা আশা করি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সে বিষয়ে সতর্ক থাকবে। আমরা চাই যে কথা সেই কাজ হোক। এতে পুঁজিবাজার নিয়ে মানুষের মধ্যে তৈরি হওয় শঙ্কা দূর হবে।