এসএমজে ডেস্ক
রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) সরকার তিন হাজার কোটি টাকার ঋণের নিশ্চয়তা দিয়েছে। সরকারের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত বুধবার এ–সংক্রান্ত নিশ্চয়তাপত্র ইস্যু করেছে। এখন সরকারি নিশ্চয়তার বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণসুবিধা পাবে আইসিবি।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইসিবি সূত্রে জানা গেছে, আইসিবিকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় আজ বুধবার নিশ্চয়তাপত্র ইস্যু করেছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি অনুযায়ী, আইসিবি প্রস্তাবিত ঋণ নিজেদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ করবে। এই টাকা তারা পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনয়ন ও উচ্চ সুদে নেওয়া তহবিল পরিশোধে ব্যবহার করবে। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইসিবির অনুকূলে দেওয়া তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ বা ঋণের ওপর আরোপিত সুদ বা সুদাসল পরিশোধে আইসিবি ব্যর্থ হলে সরকার তা পরিশোধ করবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে যে মুনাফা দেয় তা থেকে এই ঋণের অপরিশোধিত অংশ বা সুদ সমন্বয় করা যাবে না।’
জানতে চাইলে আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ নিশ্চয়তা পাওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঋণ নেওয়া হবে। ঋণের অর্থ শেয়ারবাজারের পাশাপাশি পুরোনো উচ্চ সুদের ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, তিন হাজার কোটি টাকার এই ঋণের সুদ কত হবে, তা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সুদের হার বাণিজ্যিক ঋণের সুদহারের চেয়ে কম হবে। আইসিবি যখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহ করবে, তখন সুদ নির্ধারিত হবে।
দেরিতে হলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে শেয়ারবাজারের প্রতি আন্তরিক তার প্রমাণ ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। …আশা করছি, সরকারের এসব পদক্ষেপে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
আইসিবিকে সরকারের দেওয়া নিশ্চয়তার বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান বলেন, ‘দেরিতে হলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে শেয়ারবাজারের প্রতি আন্তরিক তার প্রমাণ ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। এরই মধ্যে শেয়ারবাজারের মূলধনি মুনাফার ওপর করহার কমানো হয়েছে। নতুন করে আইসিবির সক্ষমতা বাড়াতে ঋণের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সরকারের এসব পদক্ষেপে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।’
মিনহাজ মান্নান আরও বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বর্তমান নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধীনে শেয়ারবাজারে খারাপ কোনো কোম্পানি আইপিওতে আসবে না বলে আমরা মনে করি। সেই সঙ্গে রাইট ও প্লেসমেন্টসহ নানা উপায়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ বের করে নেওয়ার পথও বন্ধ থাকবে। সব মিলিয়ে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে বলে বিশ্বাস করি।’