নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা সংক্রান্ত বিএসইসির সর্বশেষ জারি করা নির্দেশনার কিছু ধারা সম্পর্কে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি)। এসব ধারা সংশোধনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর কাছে লিখিতভাবে প্রস্তাবনা দিয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর এই ফোরাম।
ফোরামটি মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিএসইসিতে এই প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে বিএপিএলসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বিএসইসি। ওই প্রজ্ঞাপনের চারটি ধারা সংশোধনের সুপারিশ করেছে বিএপিএলসি।
ওই প্রজ্ঞাপনের তিন নাম্বার অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণার ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ অথবা মিউচুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মোট ডিভিডেন্ডের সমপরিমাণ টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আলাদা ব্যাংক হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে। শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে এই শর্ত আরোপ করা হয়েছে বলে বিএসইসির প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বিএপিএলসি আলোচিত অনুচ্ছেদটি সংশোধন করে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠানের ১০ দিনের মধ্যে আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডিভিডেন্ডের অর্থ স্থানান্তরের সুপারিশ করা হয়েছে। এর যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, অনেক সময় ঘোষিত ডিভিডেন্ডের হার এজিএমে গিয়ে পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই শেয়ারহোল্ডাররা ঘোষিত ডিভিডেন্ড অনুমোদনের পর পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে ডিভিডেন্ডের অর্থ স্থানান্তর করা ভাল। তাছাড়া পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয়ের পর এজিএম আয়োজনের জন্য ৯০ দিন সময় পাওয়া যায়। তারপর ডিভিডেন্ড বিতরণ করা হয়। তাই পর্ষদ সভার পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে ডিভিডেন্ডের সমপরিমাণ টাকা আলাদা ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হলে কোম্পানি ওই অর্থ ব্যবহারের সুযোগ থেকে অনেকটা বঞ্চিত হবে। তিন মাস ওই অর্থ ব্যবহার করা যাবে না। তাতে কোম্পানির চলতি মূলধনের উপর চাপ তৈরি হবে। কোম্পানির মুনাফা ও শেয়ার প্রতি আয়ে (ইপিএস) নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
প্রজ্ঞাপনের চতুর্থ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, স্টক ডিভিডেন্ডের ক্ষেত্রে ওই ডিভিডেন্ড ঘোষণা/রেকর্ড তারিখ অথবা এজিএমে তা অনুমোদনের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শেয়ারহোল্ডারের বিও অ্যাকাউন্টে তা জমা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) এর কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে।
সিডিবিএলের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নেওয়ার শর্তটুকু তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে বিএপিএলসি। সংগঠনটির মতে এটি অপ্রয়োজনীয়।
প্রজ্ঞাপনের ৮ম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ডিভিডেন্ড ঘোষণার পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে তা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব না হলে অবিতরণকৃত ডিভিডেন্ড সমপরিমাণ অর্থ বিএসইসির নির্দেশিত একটি ফান্ডে স্থানান্তর করতে হবে। আর স্থানান্তরের পর যদি কোনো শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডার ওই ডিভিডেন্ড দাবি করেন, তাহলে ওই দাবির ১৫ দিনের মধ্যে তা যাচাই করে আলোচিত ফান্ডের কাছে পাঠাতে হবে, যাতে তারা তাদের প্রাপ্য ডিভিডেন্ড পেতে পারেন।
বিএপিএলসি এই অনুচ্ছেদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও স্পষ্টীকরণের সুপারিশ করেছে। এ বিষয়ে তাদের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ভারতের কোম্পানি আইনে ৭ বছর পর অবন্টনকৃত ডিভিডেন্ড বিশেষ ফান্ডে স্থানান্তরের বিধান আছে। কিন্তু বাংলাদেশের কোম্পানি আইনে এ সংক্রান্ত কোনো বিধান বা নির্দেশনা নেই।
এসএমজে/২৪/রা
