কালো টাকা বিনিয়োগে শর্ত বাতিলের দাবি বিএসইসির

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকারেজ হাউজ কর্তৃপক্ষের পর এবার পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত বাতিল করার দাবি জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এ সময় বিএসইসির কমিশনাররা এবং এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিকাল ৩টায় এনবিআর কার্যারয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

এনবিআর ও বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে এনবিআরের সদস্য (করনীতি) মো. আলমগীর হোসেন, বিএসইসির কমিশনার খোন্দকার কামালুজ্জামান, অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, মো. আব্দুল হালিম এবং নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বৈঠকে বিএসইসির পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার (কালো টাকা সাদা করা) ক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত ৩ বছরের লকইন তুলে নেওয়াসহ স্টেকহোল্ডারদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এসব দাবির  মধ্যে আছে- পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে ৩ বছরের লক-ইন তুলে নেওয়া, তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা, মার্চেন্ট ব্যাংকের আয়করের বিদ্যমান হার ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ, ব্রোকারহাউজে লেনদেনের উৎসে করের হার ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ শতাংশ নির্ধারণ।  এছাড়া লভ্যাংশ আয়ের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করার অনুরোধ জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বিনিয়োগকারী, স্টেকহোল্ডার তথা পুঁজিবাজারের বৃহত্তর স্বার্থে এসব বিষয় বিবেচনা করার জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান। জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ চেষ্টার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, এটি ছিল মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎ। এর মধ্যেই পুঁজিবাজারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিনিয়োগকারী, ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকারসহ স্টেকহোল্ডাররা বাজেট নিয়ে বিএসইসির কাছে যেসব প্রস্তাবের বিষয়ে সহায়তা চেয়েছেন, তার প্রায় সবগুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছে। পুঁজিবাজারের বৃহত্তর স্বার্থে বিএসইসি চেয়ারম্যান এসব প্রস্তাব ও সুপারিশ বিবেচনা করার অনুরোধ জানালে এনবিআর চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ চেষ্টা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ১১ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।

আগামী বাজেটের কিছু প্রস্তাব পুঁজিবাজারের জন্য অনুকূল নয়, আবার স্টেকহোল্ডারদের অনেক দাবি বাজেটে উপেক্ষিত থেকে গেছে বলে জানিয়েছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়েশন। ইতোমধ্যে তারা আদের এই বক্তব্য ও দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। তারা এ বিষয়ে বিএসইসির সহযোগিতা চাইলে তার প্রেক্ষিতে আজ এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি।

জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার পর তা পাশ হবে। আর নিয়ম অনুসারে আগামী ১ জুলাই থেকে এই বাজেট কার্যকর হবে। তাই ঘোষিত বাজেটের বিভিন্ন প্রস্তাবনা সংশোধন ও সংযোজন-বিয়োজনের সুযোগ এখনো আছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক কিছু বিষয় বের করে আনার চেষ্টা করছে বিএসইসি।

এসএমজে২৪/কা

Tagged