কারসাজি চক্র লাভবান হলেও সর্বস্বান্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা

দেশের পুঁজিবাজারে একের পর এক কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়িয়ে এক বিশেষ চক্র মোটা অঙ্কের মুনাফা তুলে নিচ্ছে। তারা পুঁজিবাজার থেকে বড় অঙ্কের মুনাফা তুলে নিলেও বাজারের প্রাণ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বিপাকে রয়েছেন।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেঁধে দেওয়া ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বেশিরভাগ নতুন বিনিয়োগে যেতে পারছেন না। মাসের পর মাস লোকসানে শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হচ্ছেন।

আবার অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন না হওয়ায় লেনদেনের গতিও বাড়ছে না। ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয়েও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয়ের একমাত্র উৎস লেনদেন থেকে পাওয়া কমিশন। লেনদেন কম হওয়ায় তাদের কমিশন আয় কমে গেছে। ফলে অনেক ব্রোকার তাদের কর্মীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু কোম্পানির শেয়ার দাম এমন অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এমন একটি কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল। গত ২ এপ্রিল কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩০ টাকা ৮০ পয়সা। সেখান থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে এখন প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১৫৭ টাকা ৩০ পয়সা। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়ে পাঁচগুণ হয়েছে।

এ ধরনের পরিস্থিতি পুঁজিবাজারের  জন্য মঙ্গল বইয়ে আনবে না।তারপরও এটি অহরহ ঘটছে।

শেয়ারবাজারে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হলে বেশিরভাগ ব্রোকারেজ হাউজ ব্রেক ইভেন্ট পজিশনে থাকতে পারে। সেখানে এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ৭০০-৮০০ কোটি টাকার লেনদেনের দেখা মিলছে। এতে বেশিরভাগ ব্রোকারেজ হাউজ লোকসানের মধ্যে পড়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দুই ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এর মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাচ্ছে বিমা কোম্পানিগুলো। বেশকিছু বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম এরই মধ্যে ৫০ শতাংশের ওপরে বেড়ে গেছে। এতো যারা বাজার নিয়ে ‘খেলা’ করে,সেই কারসাজি চক্র লাভবান হলেও সর্বস্বান্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।

Tagged