করোনা ভাইরাস কীভাবে এড়ানো সম্ভব

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

করোনা ভাইরাস ইতিমধ্যে চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের উহানে গত ডিসেম্বর মাস থেকে শনাক্ত করা হয়েছে এ ভাইরাস। এ ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে এ পর্যন্ত ১৮শ’র কাছাকাছি মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৭১ হাজার এর মতো লোক। এ ভাইরাস প্রতিনিয়ত আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

এই ভাইরাসটি কোন একটা প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াচ্ছে। কিন্তু এ ভাইরাসটির কিভাবে রোধ করা যেতে পারে এ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করছেন।

তবে মনে করা হচ্ছে প্রাণঘাতী সার্স(সিভিয়ার এ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) বা ইবোলার থেকেও করোনা ভাইরাস অনেক বেশি বিপদজনক।­­­­­

বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসটি মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতিমধ্যেই ‘মিউটেট করছে’ অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে। যার ফলে এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

করোনা ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি। করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন রকম প্রজাতি আছে। এর মধ্যে মাত্র ৭টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে।

যেভাবে,ছড়ায়
বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, এ ভাইরাসটি একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে দ্রুত ছড়াতে পারে। এটি মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের
দেহে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সাধারণত ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়ায়।

লক্ষণ
* করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।

* এর সঙ্গে থাকে জ্বর এবং কাশি।

* অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া।

* হতে পারে নিউমোনিয়া।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় পাঁচ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তার পর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট।

প্রতিরোধ

* ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করুন।

* গণপরিবহন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

* প্রচুর পরিমাণে ফলের রস ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

* ঘরে ফিরে ভালো করে হ্যান্ডওয়াস দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।

* যেকোন খাবার খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।

* ডিম বা মাংস রান্নার সময় ভালো করে সেদ্ধ করুন।

* ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলুন।

* নিয়োমিত থাকার ঘর ও কাজের জায়গা পরিষ্কার রাখুন।

* অপ্রয়োজনে ঘরের দরজা বা জানালা ‍খুলে রাখবেন না।

* অযথা হাত ‍দিয়ে নাক বা মুখ স্পর্শ থেকে বিরত থাকুন।

* হাঁচি/কাশির সময় চিস্যু ব্যবহার করুন এবং ব্যবহারের পর ডাস্টবিনে ফেলুন।

প্রতিকার

ভাইরাসটি নতুন বলে এখনও পর্যন্ত এর কোন টিকা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পারেনি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।তবে এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে যে বিষয়গুলো আমাদের মেনে চলতে হবে তা হল:-

* রক্ষার একমাত্র উপায় হলো, যারা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছে বা এ ভাইরাস বহন করছে- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

* ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন বার বার হাত ধোয়া, বাহিরে বের হওয়ার পর হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরা।

* আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মাস্ক পরুন, আর নিজে অসুস্থ না হলেও, অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মাস্ক ব্যবহার করুন। কেননা চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসে কমপক্ষে ১৫ জন চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।

ভাইরাসটি এখন চীনের অন্যান্য শহর এবং চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, জাপান, মালোশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে। সূত্র: বিবিসি

এসএমজে/২৪/রা

Tagged