দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা দিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে হবে বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। এসব সহায়তার আওতাভুক্ত হবেন ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি মতবিনিময়ে করে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান তিনি। আমরা তার কথায় আস্থা রাখতে চাই। একই সঙ্গে বলতে চাই আগেও বিনিয়োগকারীদের নানা রকম প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। কিন্তু এসব প্রতিশ্রুতি কথা কথা হয়ে থেকে গেছে কোনো কাজে আসেনি। তবে এখন রাজনৈতিক পটপরিরর্তনের মধ্য দিয়ে যেহেতু একটি নতুন সরকার এসেছে, আমরা আশা করবো বিষয়টি আগের মতো হবে না। এছাড়া বর্তমান সরকার নানা বিষয়ে মৌলিক সংস্কারে হাত দিয়েছে সে কারণে পুঁজিাজারেও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান জানান, যেসব নীতি পদক্ষেপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল জোগানে সহায়তা, জরিমানার মাধ্যমে বিএসইসির আদায় করা অর্থ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি-বেসরকারি ভালো ও লাভজনক কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে আনতে আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, শেয়ারবাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে পরিমাণ অনাদায়ি পুঞ্জীভূত ঋণাত্মক ঋণ (নেগেটিভ ইক্যুইটি) রয়েছে চূড়ান্তভাবে সেগুলোর নিষ্পত্তি করা, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে মূলধনি মুনাফার করহার কমানো, শেয়ার পুনঃক্রয়ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে আর কখনো ফ্লোর প্রাইস আরোপ না করা, সুশাসন ও আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করা।
এসব বিষয়ে আমরাও দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি। কাজগুলো যদি সঠিক উপায়ে করা হয়, তাহলে এর সুফল পুঁজিবাজারে আসবে এবং বিনিয়োগকারীরা তা ভোগ করতে পারবেন। তবে বর্তমানে যে দরপতন বাজারে চলছে, আগে সেটি বন্ধ করার কৌশলও রাখতে হবে। তবেই কেবল বাজার একটি স্থিতিশীল অবস্থায় যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।