Stock Market Journal

সময় নিন, তারপরও পুঁজিবাজার রাহুমুক্ত হোক

বিগত দেড় দশকের স্বৈরশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতায় আর্থিক খাত বিপর্যস্ত অবস্থায়। এ সময়ে দেশের পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছিল না। বিভিন্ন প্রভাবশালী গোষ্ঠী পুঁজিবাজারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দেড় মাসে বর্তমান কমিশনের কার্যক্রম নানা ধরনের মত প্রকাশ করছেন অনেকে। আমাদের কথা হচ্ছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। আমরা বলবো সময় নিন, তারপরও পুঁজিবাজার রাহুমুক্ত হোক। মানুষের আস্থার পুঁজিবাজার গড়ে তুলুন। এমন করে নিয়ম কানুন করুন, যাতে আর কেউ ভবিষ্যতে অনিয়ম করার স্পর্ধা না পান।

বিএসইসের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে বিগত দিনের অনিয়ম অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে রেকর্ড জরিমানা করা হয়েছে। তিন অডিট প্রতিষ্ঠানকে বিএসইসির প্যানেল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির নতুন শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে। যেসব কোম্পানি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘোষিত লভ্যাংশ দেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের জমা অর্থ সিসিএ হিসাবে না থাকায় একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের মালিক ও শীর্ষ ব্যক্তিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে এবং কিছু পরিচালক ও এমডির বিও হিসাব জব্দ করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত রহিমা ফুডের শেয়ার অনিয়ম, ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি, ইনভেস্ট এশিয়া, স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তত ২৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬০টি বিও অ্যাকাউন্ট জব্দ, অন্তত ২৪টি কোম্পানির অনিয়ম ও দর বৃদ্ধি নিয়ে তদন্ত এবং বিগত সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও বাংলাদেশের আর্থিক খাতে অনিয়মের সঙ্গে প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মালিকানাধীন কোম্পানি নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলমান।

আমাদের কথা হচ্ছে, এসব বিষয় আপনারা করেছেন, আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে আসল কথা হচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার আর যেন অনিয়মের কারণে বিপর্যস্ত না হয় তেমন একটি টেকসেই ব্যবস্থা গড়ে তুলুন। তা হলে দেশবাসী আপনাদের অবদান মনে রাখবে।