Stock Market Journal

শর্ত বাতিল করে তালিকাভুক্ত করা হবে ২৭ বীমা কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নতুন ২৭ বীমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য বীমা কোম্পানির ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা থাকার বাধ্যতামূলক শর্ত বাতিল হচ্ছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট আইন ‘পাবলিক ইস্যু রুলস’ থেকে ন্যূনতম মূলধনের ধারা প্রত্যাহারের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।

তালিকাভুক্ত হতে যাওয়া ২৭টি বীমা কোম্পানির মধ্যে জীবন বীমা কোম্পানি রয়েছে ১৮টি এবং সাধারণ বীমা কোম্পানি রয়েছে ৯টি।

আইডিআরএ সূত্র জানায়, ওই ১৮টি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি হলো- বায়রা লাইফ, গোল্ডেন লাইফ, হোমল্যান্ড লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, বেস্ট লাইফ, চার্টার্ড লাইফ, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ, প্রোটেকটিভ ইসলামী লাইফ, সোনালী লাইফ, জেনিথ ইসলামী লাইফ, আলফা ইসলামী লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, গার্ডিয়ান লাইফ, যমুনা লাইফ, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ, স্বদেশ লাইফ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ, এলআইসি বাংলাদেশ।

বাকি ৯টি সাধারণ বীমা কোম্পানি হচ্ছে- ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনরেল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে আইডিআরএ’র এক বৈঠকে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই ২৭টি কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট ওই সময়ের মধ্যে এসব বীমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে পারেনি। এর কারণ খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি একটি বৈঠক করেছে আইডিআরএ। বৈঠকে উঠে আসে- পুঁজিবাজারে কোনো বীমা কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত হতে হলে ন্যূনতম ৭৫ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের ৪৫ কোটি টাকা এবং জনগণের অংশ ৩০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই ২৭টি কোম্পানির অধিকাংশের ক্ষেত্রেই পরিশোধিত মূলধনের উদ্যোক্তাদের অংশে ঘাটতি আছে।

অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো আইডিআরএ’র চিঠিতে বলা হয়, ‘পাবলিক ইস্যু রুলস’ বিধান অনুযায়ী আইপিও’র জন্য আবেদন করতে হলে বীমা কোম্পানিগুলোকে মুনাফা বা সারপ্লাস থাকতে হবে। কিন্তু অনেক লাইফ বীমা কোম্পানির একচ্যুয়াল ভেলুয়েশনে দেখা গেছে, সারপ্লাস বা মুনাফা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি কোম্পানিগুলো। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা থাকার বাধ্যতামূলক শর্ত বাতিলের সুপারিশ করেছে আইডিআরএ। বৈঠকে এটি ছাড়া আরও ৮টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে- পুঁজিবাজারে আসতে আবেদনের মেয়াদ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি, লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ ও একচ্যুয়াল ভেলুয়েশন শেষ করার নির্দেশ।

সূত্রমতে, বৈঠকের সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে ২৭টি বীমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার জন্য গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদন দিয়ে আবেদন করতে হবে। এর মধ্যে গোল্ডেন লাইফ, স্বদেশ লাইফ, বায়রা লাইফ, হোমল্যান্ড লাইফ, বেস্ট লাইফ, যমুনা লাইফ, জেনীথ ইসলামী, আলফা ইসলামী, এনআরবি গ্লোবাল, ডায়মন্ড লাইফ ও সাউথ এশিয়াকে রোডম্যাপ দ্রুত কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে বলা হয়। এছাড়া মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ, সানফ্লাওয়ার, প্রোটেকটিভ ইসলামী লাইফ, দেশ জেনারেল, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্সু্যুরেন্স ও ইসলামী কর্মাশিয়ালকে পুঁজিবাজারের আইপিও অনুমোদনের জন্য তাদের কাজের অগ্রগতি তলব করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ওই বৈঠকে। এছাড়া বিদ্যমান আইনে যেসব বীমা কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের জন্য আবেদন করার সক্ষমতা আছে, সেসব কোম্পানির ক্ষেত্রে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি থাকবে না। সর্বশেষ সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ এর আগে আইপিও’র অনুমোদনের জন্য আবেদনকারী বীমা কোম্পানিগুলোর আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিএসইসিকে চিঠি দেয়া হবে। তবে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, যেসব কোম্পানি পাবলিক ইস্যু রুলস সংশোধনের আগে আইপিওর জন্য আবেদন করেছে অর্থাৎ গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের আগে আবেদন করেছে, তারা আগের নিয়মেই আইপিওতে যেতে পারবে। আর ৩ সেপ্টেম্বর পরবর্তী আবেদন করা কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই পাবলিক ইস্যু রুলস বিধান পালন করতে হবে। নতুবা আইপিও অনুমোদন পাবে না।

এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দাখিল করা আইডিআরএ’র চিঠি সূত্রে আরও জানা গেছে, দুটি নন-লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ‘পাবলিক ইস্যু রুলস’র বিধান মোতাবেক আবেদন করেছে, যা বর্তমান কমিশনের বিবেচনাধীন আছে। কোম্পানি দুটি হচ্ছে- এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।

এসএমজে/২৪/মি/তা