Stock Market Journal

মার্চেন্ট ব্যাংকের অনুমোদন দেবে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সংস্থাটি। এরই অংশ হিসেবে একদিকে নিস্ক্রিয় মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বিএসইসি। অন্যদিকে নতুন আরও মার্চেন্ট ব্যাংকের অনুমোদন দিতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এতোদিন বিএসইসি নিজেই মার্চেন্ট ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়ে আসছিল। কিন্তু এ দফায় লাইসেন্স দেওয়ার অনুমতি চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। সে আলোকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করবে বলে জানা গেছে। এখন অর্থমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে তিনি আর কতটি লাইসেন্স দিতে চান বা আদৌ দিতে চান কি না।

পুঁজিবাজারে বর্তমানে ৬৩টি মার্চেন্ট ব্যাংক কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মার্চেন্ট ব্যাংকের মূল কাজ ইস্যু ম্যানেজ করে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোন কাজ করতে পারছে না। অন্যদিকে পরিশোধিত মূলধন ঘাটতি রয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। মূলধন ঘাটতিসহ মার্চেন্ট ব্যাংকের লাইসেন্সের শর্ত পূরণ করতে পারছে না ২৫ থেকে ৩০টি প্রতিষ্ঠান।

পুঁজিবাজারে নতুন ইস্যু আনা ও পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা এবং আন্ডাররাইটিং ও অ্যাডভাইজরির কাজ করে থাকে মার্চেন্ট ব্যাংক। অন্য কাজের মধ্যে রয়েছে করপোরেট পরামর্শ দেওয়া, ঋণ সিন্ডিকেশন করা, চলতি মূলধনের অর্থায়নের ব্যবস্থা করা, বিল ডিসকাউন্ট করা, ইজারা অর্থায়নের ব্যবস্থা করা, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। তবে মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান কাজ বিবেচনা করা হয় নতুন কোনো কোম্পানিকে বাজারে আনা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত ১৩ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব মার্চেন্ট ব্যাংকের সর্বশেষ চিত্র বিশ্লেষণ করেছে। এর মধ্যে ৩টি আংশিক অর্থাৎ ইস্যু ম্যানেজারের কাজের জন্য লাইসেন্স নেওয়া। একটি লাইসেন্স নিয়েছে শুধু পোর্টফোলিও ম্যানেজারের কাজ করবে বলে। বাকি ৫৮টি মার্চেন্ট ব্যাংক ফুল ফ্লেজের অর্থাৎ ইস্যু ম্যানেজার, পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা এবং আন্ডাররাইটিংসহ সব কাজই করবে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকার সময় ২০১২ সালে মার্চেন্ট ব্যাংক ৬৫ টি পর্যন্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ সর্বশেষ লাইসেন্স পায় ইসলামী ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। আরেকটিকে লাইসেন্স দেওয়ার জন্য গত মাসে কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর নাম ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৮টি ব্যাংক, ৮টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ১৮টি অন্যান্য মিলিয়ে ৩৪টি মার্চেন্ট ব্যাংকের আবেদন জমা আছে। সাধারণত দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মার্চেন্ট ব্যাংকের লাইসেন্স নিয়ে থাকে।

নতুন লাইসেন্সের বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন,
প্রায় অর্ধেক যেহেতু বন্ধ, তাই আমরা নতুন করে ২৫টিকে লাইসেন্স দেওয়ার অনুমতি নিয়ে রাখতে চাইছি। এগুলো দেওয়া হবে মূলত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে।’

তিনি বলেন, নিষ্ক্রীয় হওয়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অবস্থা অনেক খারাপ। তাদের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে কমিশন। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংক যত বাড়বে, বাজারে তারল্য তত বাড়বে। সে হিসেবে নতুন লাইসেন্সের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। বাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুমোদন দেওয়া হয়; বাজারে প্রতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণ বাড়াতে। কেউ যদি কমিশনের আইন অনুযায়ী কাজ করতে না পারে; তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে। সূত্র: বিএসইসি

এসএমজে/২৪/রা