এসএমজে ডেস্ক:
বর্তমান ভয়াল আতঙ্ক করোনাভাইরাস। ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করছে। তবে এই করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। উন্নয়নশীল ৩০টি দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে এই দুর্ভিক্ষ।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। সংস্থাটির প্রধানের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট বিশ্বজুড়ে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা দেখা দিতে পারে। প্রায় সাড়ে ২৬ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষপীড়িত হতে পারে, যা হবে বর্তমানের দ্বিগুণ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। দেশে দেশে অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে আছে। স্থবির হয়ে গেছে পর্যটন খাত থেকে আয়। বৈদেশিক মুদ্রার খাতে ধস নেমেছে। ভ্রমণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে নানা মাত্রার নিষেধাজ্ঞা চলছে। এর অভিঘাত হবে ভয়ংকর। চলতি বছর নতুন করে আরও ১৩ কোটি মানুষকে তীব্র ক্ষুধার্তদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। বিশ্বের প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি মানুষ এখনই এই তালিকায় আছে।
উন্নয়নশীল ৩০টি দেশে দুর্ভিক্ষ সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে দুর্ভিক্ষপীড়িত হতে পারে সাড়ে ২৬ কোটি মানুষ, যা বর্তমানের দ্বিগুণ
সব মিলিয়ে চলতি বছরই বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে ২৬ কোটিতে পৌঁছাতে পারে। গত মঙ্গলবার ডব্লিউএফপির প্রধান ডেভিড বিসলি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেছেন, আসন্ন এই বিপর্যয় এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক ভিডিও কনফারেন্সে দেওয়া ভাষণে বিসলি বলেন, ‘৩০টির বেশি উন্নয়নশীল দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এসব দেশের মধ্যে ১০টি দেশে এখনই এই অবস্থা চলছে। ১০ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতিতে আছে। মানুষের অনাহারে রাত কাটানোর কথা বলছি না। আমরা বলছি, চরম ক্ষুধার কথা।’
ডব্লিউএফপির প্রধান আরও বলেন, ‘এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি যে মানুষ না খেতে পেয়ে আক্ষরিক অর্থে মারা যাবে। কয়েক মাসের মধ্যেই বাইবেলে বর্ণিত পরিস্থিতির মতো একাধিক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারি আমরা। এ কথা সত্য যে আমাদের হাতে আর সময় নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে।’ তিনি এ কথাও বলেন, ‘সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। চার সপ্তাহ পরই দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কিংবা আমরা কয়েক মাস সময় পেতে পারি। এখন জরুরি দরকার অর্থ। আর শুধু অর্থ পেলেও চলবে না। সেই সঙ্গে খাদ্য সরবরাহ করার নিশ্চয়তা লাগবে। যত দ্রুত হয়, ততই মঙ্গল।’
বিশ্বের কোন কোন অঞ্চলে খাদ্যসহায়তার প্রয়োজনীয়তা বাড়তে পারে, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা সে বিষয়ে বিস্তারিত না বললেও আফ্রিকায় সংকট তীব্রতর হতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।
ডব্লিউএফপিও জানিয়েছে, চলতি বছর তাদের সাহায্য কর্মসূচিগুলো অব্যাহত রাখতে ১০-১২ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন পড়তে পারে। এ অঙ্ক গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। গত বছর তারা রেকর্ড ৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার তুলতে সক্ষম হয়েছিল। সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান ও আল-জাজিরার।
এসএমজে/২৪/বা