নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা সংক্রমণের প্রাক্কালে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতন হতে থাকে। দরপতন ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তালিকাভুক্ত কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়। প্রায় এক বছর পর গত ৭ এপ্রিল ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হওয়া ১১৫টি কোম্পানির মধ্যে ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় বিএসইসি।
ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহারের পর প্রথম কার্যদিবসে বেশিরভাগ কোম্পানিই একদিনে সর্বোচ্চ পরিমাণ (শতকরা ১০ শতাংশ) দর হারানোর পর বিএসইসি জানায়, এই ৬৬ কোম্পানির দর দিনে কমতে পারবে সর্বোচ্চ দুই শতাংশ। তবে বাড়তে পারবে অন্যান্য কোম্পানির মতো ১০ শতাংশ। এরপরেও দুই শতাংশ হারেই দর কমতে থাকে বেশিরভাগ কোম্পানির।
তবে কয়েকদিনের মধ্যেই দেখা যায় উল্টো চিত্র। দর বাড়তে থাকে কোম্পানিগুলোর। এক পর্যায়ে বেশিরভাগ কোম্পানির ক্ষেত্রে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দিন যত দর ছিল, তার চেয়ে ছাড়িয়ে যায় দর।
তবে কিছু কিছু কোম্পানি দর হারলেও বেশিরভাগের দর কমেছে খুবই কম।
আর যে লাভ হয়েছে, সেটি হলো, দীর্ঘদিন লেনদেন না হওয়ার কারণে যে টাকা আটকে ছিল, সেটি আবার বিনিয়োগে ফিরতে থাকে।
ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এক বছর আগে যে উদ্দেশ্যে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস দেয়া হয়েছিল সেটি খুবই কার্যকর হয়েছে। তখন ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বেড়েছিল। এক বছর পর পুঁজিবাজারে যে অবস্থায় ফিরেছে তাতে সেই আস্থার জায়গাটি অনেক শক্ত হয়েছে। ফলে এখন মনে হয় ফ্লোর প্রাইসের আর প্রয়োজন নেই।’
তাহলে কবে নাগাদ প্রত্যাহার হচ্ছে ফ্লোর প্রাইস- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম পর্যায়ে ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বাতিল করেছি। তিনটি ক্যাটাগরিতে তা করা হয়েছিল। প্রথম ক্যাটাগরি হিসাবে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর ৫০ টাকার নীচে সেগুলোর বাতিল করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোরও ফ্লোর প্রাইস বাতিল করা হবে।’
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার সময় বলা হয়েছিল, এমন সময় তা প্রত্যাহার করা হবে, যখন বিনিয়োগকারীরা এর প্রভাব বুঝবেই না। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে ফ্লোর প্রত্যাহারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
পরে বিএসইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুঁজিবাজার বিষয়ক বৈশ্বিক জোট ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন-আইওএসসিও এর সদস্য বাংলাদেশ। সেই জোট এই সিদ্ধান্তকে বাজারে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। আর এ কারণে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে র্যাংকিং কমে যাবে।
শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস পুঁজিবাজারের কোনো অংশ না। ফ্লোর দিয়ে স্বল্প সময়ে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীল রাখা গেলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য রাখা ঠিক নয়। এখন পুঁজিবাজার যে অবস্থায় আছে তাতে বিকল্প কোনো কিছু দিয়ে শেয়ার দর ধরে রাখারও প্রয়োজন হবে না।’
এসএমজে/২৪/রা