প্রশ্ন উঠেছে- মানুষের হাতে প্রকৃতির স্বাভাবিকতা নষ্ট হওয়ার কারণেই নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত মহামারী বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা? প্রকৃতির সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে দশকের পর দশক ধরে অগ্রাহ্য করে এসেছে মানুষ। প্রকৃতির প্রতি এ বিধ্বংসী আচরণই এখন বুমেরাং হয়ে দেখা দিয়েছে মহামারী আকারে, এমন মত অনেক বিশেষজ্ঞেরও। বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার (ডব্লিউডব্লিউএফ) ইন্টারন্যাশনালের শীর্ষ পর্যায় থেকে এরই মধ্যে বিবৃতিও দেয়া হয়েছে। এমন খবর প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান।
বাছবিচারহীনভাবে বন উজাড় ও বন্যপ্রাণী হত্যার কারণে বিপন্ন হয়ে পড়েছে বাস্তুসংস্থান। বন্যপ্রাণীর দেহ থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী অজানা ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকিতে পেড়েছে মানবজাতি। বর্তমানে নভেল করোনাভাইরাসের ধারাবাহিকতায় বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের সংক্রমিত হওয়ার যে ঝুঁকির কথা বারবার উঠে আসছে, তার পেছনেও প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে প্রকৃতি প্রাণীর বাস্তুসংস্থান ধ্বংস করা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ এখনই সচেতন না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব আরো ভয়াবহ হতে পারে। সম্প্রতি এ নিয়ে ডব্লিউডব্লিউএফের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, অদূর ভবিষ্যতে বন্যপ্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমণের মাধ্যমে নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। প্রকৃতি প্রতিশোধ নিতে শুরু করলে জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।
আমরা বলতে চাই, নগরায়নসহ বৈশ্বিক উন্নয়ন অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে। তবে এটি করতে গিয়ে যেন প্রাণ-প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এটি কাম। ভাইরাস যে কারণেই সৃষ্টি হোক, প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়েই মানুষকে টিকে থাকতে হবে। কারণ এখনও প্রকৃতির অনেক রহস্য মানুষের অজানা। তাই প্রকৃতি সংরক্ষণও উন্নয়নের অংশ হওয়া প্রয়োজন।