Stock Market Journal

পুঁজিবাজার থেকে ৫০০ কোটি টাকা তুলতে ১৫ কোম্পানির আবেদন

এসএমজে ডেস্ক:

প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে চায় বিভিন্ন খাতের ১৫টি কোম্পানি। এর মধ্যে স্মলক্যাপ প্লাটফর্মের ২টি কোম্পানি রয়েছে। আইপিও’র মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায় কোম্পানিগুলো। এজন্য ইতোমধ্যে কোম্পানিগুলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন জমা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

কোম্পানিগুলো হলো- সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, বিডি পেইন্টস, থ্রি এঙ্গেল মেরিন, মাস্টার ফিড এগ্রোটেক, বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, অনিক ট্রিমস, কৃষিবিদ ফিড, সুব্রা সিস্টেমস, একমি পেস্টিসাইড, বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড ট্রেক্সটাইল, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং।

আর স্মলক্যাপ প্লাটফর্মের কোম্পানি দু’টি হলো- কৃষিবিদ সিড ও নাইলকো অ্যালয়স।

জানা গেছে, ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে চায় ১২ কোম্পানি। এর মাধ্যে ১০০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট।

১৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে সোনার বাংলা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট।

২০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় বিডি পেইন্টস। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে সিএপিএম অ্যাডভাইজরি, ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস ও মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট।

৩২ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় থ্রি এঙ্গেল মেরিন। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে বাঙ্কো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ও জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

একই পদ্ধতিতে ৩০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় মাস্টার ফিড এগ্রোটেক। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনার্স ইনভেস্টমেন্ট ও এনবিএল ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট।

১৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট ও বিএলআই ক্যাপিটাল।

২৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে ইমপেরিয়াল ক্যাপিটাল, ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট এবং সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস।

৩০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় অনিক ট্রিমস। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে ইমপেরিয়াল ক্যাপিটাল, সিএপিএম অ্যাডভাইজরি ও রূপালী ইনভেস্টমেন্ট।

৩০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করতে চায় কৃষিবিদ ফিড। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এমটিবি ক্যাপিটাল।

৩০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় সুব্রা সিস্টেমস। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে ইমপেরিয়াল ক্যাপিটাল।

৩০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় একমি পেস্টিসাইড। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে শাহজালাল ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট।

৩৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড ট্রেক্সটাইল। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে সোনার বাংলা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায় জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

এছাড়া স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে কৃষিবিদ সিড ১৮ কোটি টাকা এবং নাইলকো অ্যালয়স ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায়।

সে হিসেবে এই ১৫টি কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে ৪৯৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার মূলধন সংগ্রহ করার অপেক্ষায় রয়েছে।

এর মধ্যে আইপিও’র জন্য জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট, মাস্টার ফিড এগ্রোটেক, বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড ট্রেক্সটাইল ও থ্রি অ্যাঙ্গেল মেরিন পুনরায় আবেদন করেছে।

এর আগে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, বিডি পেইন্টস লিমিটেড, থ্রি এঙ্গেল মেরিন, বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড ট্রেক্সটাইল ও মাস্টার ফিড এগ্রোটেকের আইপিও আবেদন বাতিল করা হয়েছিল। এ কোম্পানিগুলো কমিশনের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছে।

বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও অনিক ট্রিমস লিমিটেডের আইপিও আবেদন অপেক্ষমাণ রয়েছে।

আর সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, কৃষিবিদ ফিড লিমিটেড, সুব্রা সিস্টেমস, একমি পেস্টিসাইডস, কৃষিবিদ সিড ও নাইলকো অ্যালয়স নতুন করে বিএসইসির কাছে আইপিও আবেদন করেছে।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘বেশিরভাগ দুর্বল কোম্পানিগুলোই শেয়ারবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে চায়। মূলত খারাপ কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের কারণে শেয়ারবাজার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণ অনেক ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে আইপিও’র মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে অনিহা রয়েছে।’

এদিকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘সকল আইন-কানুন পরিপালন সাপেক্ষে আবেদন করা কোম্পানিগুলোর আইপিও অনুমোদন দেওয়া হবে। শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়াতে মৌলভিত্তিসম্পন্ন ছোট-বড় আকারের সকল কোম্পানির তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে আমরা সব সময়ই স্বাগত জানাই।

এসএমজে/২৪/রা