Stock Market Journal

জেড ক্যাটেগরিতে নামা ২২ শেয়ারে বড় দরপতন

এসএমজে ডেস্ক

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সিদ্ধান্তে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবনমন হওয়া ২২ কোম্পানির ব্যাপক দরপতন হয়েছে। গতকাল রোববার লেনদেনের শুরুতে এ কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০ দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হয়। অর্থাৎ এদিন এসব শেয়ারের এর থেকে বেশি দর পতনের সুযোগ ছিল না। শেষ পর্যন্ত ওই দরেই কেনাবেচা হয়েছে ১২টির।
এদিকে টানা চার দিন পতনের পর গতকাল ঊর্ধ্বমুখী ধারায় লেনদেন শুরু হয়। শুরুতে দুই-তৃতীয়াংশ শেয়ারের দর বাড়ে। তবে দিনের লেনদেন শেষ হয় উল্টো চিত্রে। এতে সূচকের পতন টানা পঞ্চম দিনে গড়ায়।

গত বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসির জারি করা আদেশের ভিত্তিতে এজিএম না করা বা ছয় মাসের বেশি বন্ধ থাকা বা পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন ছাড়ানোয় ২২ কোম্পানির শেয়ারকে পূর্বের ‘এ’ বা ‘বি’ ক্যাটেগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবনমন করা হয়। তবে কমিশনের যে আদেশে এ অবনমন করা হয়েছে, তাতে পর পর দুই বছর লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানিগুলোরও ক্যাটেগরি অবনমন করতে বলা হয়েছিল।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কমিশনের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কার্যকর করা হলে আরও অন্তত ২০ কোম্পানির গতকাল ক্যাটেগরি অবনমন হতো। স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র জানিয়েছে, কমিশনের আদেশ অনুযায়ী যে কোম্পানিগুলো জেড ক্যাটেগরিতে নামানো উচিত, তার সবক’টির তালিকা পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্য থেকে যেগুলোকে বিএসইসি বাছাই করেছে, সেগুলোরই ক্যাটেগরি অবনমন করা হয়েছে।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারীদের অনেকে এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও হতাশা জানিয়েছেন। তারা বলেন, এটি বিএসইসির স্বেচ্ছাচারিতা। বৃহস্পতিবারের আদেশের শেষে বলা হয়েছিল, এ আদেশ পৃথকভাবে কোম্পানিগুলোর পরবর্তী বার্ষিক বা অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ ঘোষণার দিনে কার্যকর হবে। এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্বশীল শীর্ষ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একই মত দিয়েছিলেন। ফলে আপাতত এসব কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা অনেকটা নির্ভার ছিলেন। তবে শনিবার রাতে জানা যায়, ২২ কোম্পানির বিষয়ে বিএসইসির আদেশ কার্যকর হচ্ছে। যদিও এ তথ্য সবার কাছে ছিল না। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডার তো দূরের কথা, অনেক গণমাধ্যমও এ খবর পায়নি। গতকাল লেনদেন শুরুর ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে ঘোষণা থেকে শেয়ারহোল্ডারসহ সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পান।

লেনদেনের শেষে দেখা যায়, পৃথকভাবে সর্বনিম্ন সাড়ে ৩ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে ক্যাটেগরি অবনমন হওয়া ২২ কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে অলটেক্স, আরামিট সিমেন্ট, জিবিবি পাওয়ার, ইনটেক, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, খুলনা প্রিন্টিং, প্রিমিয়ার লিজিং, রিং শাইন, সাফকো স্পিনিং, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল এবং ইয়াকিন পলিমারের সর্বশেষ লেনদেন মূল্য ছিল সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দর। এসব শেয়ারের দর ৯ থেকে ১০ শতাংশ পতন হয়েছে। সর্বনিম্ন সাড়ে ৩ শতাংশ দরপতন হয়েছে আজিজ পাইপসের।

এদিকে এসব শেয়ারের পাশাপাশি গতকাল তালিকাভুক্ত দুই-তৃতীয়াংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। বীমা ছাড়া অন্য সব খাতের অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৯৪ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৫৪টির দরপতন হয়েছে। বিপরীতে ১০৫টির দর বেড়েছে, যার মধ্যে ৫০টি ছিল বীমা খাতের। অপরিবর্তিত ছিল ২৯টির দর।
সার্বিক নিম্নমুখী ধারার মধ্যেও পাঁচ কোম্পানির শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়। এগুলো হলো– এএফসি এগ্রো বায়োটেক, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, লাভেলো এবং সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স। অধিকাংশ শেয়ারের দর পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫৩ পয়েন্ট হারিয়ে ৬২৮৩ পয়েন্টে নেমেছে।