এসএমজে রিপোর্ট
পুঁজিবাজারে ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলোগুলো বিষয়-আশয় দেখার কি কেউ নেই? কোম্পানিগুলো লেনদেন করছে ধীরগতিতে, কিছু কোম্পানি বহুদিন আগে একবার লেনদেন করেছিল, আবার কিছু কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে কোনো লেনদেনই করেনি। এরকম মোট ২০ কোম্পানি এখনও ওটিসি মার্কেটে তালিকাভ‚ক্ত আছে। এসকল কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা মেনেই নিয়েছে যে, তারা এই টাকা হয়তো আর কোন দিন পাবেনা। বলা হচ্ছে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, জিডিপি বাড়ছে, অর্থনীতির আকার বাড়ছে। কিন্তু ওটিসি মার্কেটের এই দশা কেনো? এখানে যারা বিনিয়োগ করেছেন, তারা এখন কোথায় যাবেন?
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আওতাধীন ওটিসি মার্কেটের তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানি আজাদী প্রিন্টার্স লিমিটেডের শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছিল ২০০৬ সালের ৮ জুন। এরপর থেকে আজ অবধি কোনো লেনদেন হয়নি, কোম্পানিটি এখনও ওটিসি মার্কেটেই তালিকাভুক্ত। এতে যারা বিনিয়োগ করেছেন তাদের দুরাবস্থার অবসান হবে কীভাবে?
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র জানায়, কিছু কোস্পানি ২০০৮ সাল থেকে আজ অবধি কোনো লেনদেন করেনি। এর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ হোটেলস্ লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। চিক টেক্সটাইলস লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারী। জার্মান বাংলা জে.ভি ফুড লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ১ জুন। পেট্রো সিনথেটিক প্রোডাক্টস লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ৬ জানুয়ারী। ফার্মাকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ৭ জুলাই। ফনিক্স লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ৮ জুলাই। রাসপিট ডাটা ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ১৫ জানুয়ারি। রাসপিত ইঙ্ক বাংলাদেশ লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৮ সালের ১৭ জানুয়ারি।
আবার কিছু কোম্পানির শেয়ার ২০০৯ সালের পর থেকে কোনো লেনদেনই হয়নি। সেগুলো হচ্ছে- আমাম সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রæয়ারি। বাংলাদেশ ইলেকট্রিসিটি মিটার কোম্পানি লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৯ সালের ৩ মার্চ। ডায়নামিক টে´টাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৯ সালের ৩ মার্চ। ঈগল স্টার টেক্সটাইল মিলস্ লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৯ সালের ৯ জানুয়ারি। এম. হোসেন গার্মেন্টস ওয়াশিং এন্ড ডাইং লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৯ সালের ৩ মার্চ। মিতালেক্স কর্পোরেশন লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৯ সালের ২৬ মে। টিউলিপ ডেইরী এন্ড ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০০৯ সালের ২ জুলাই।
২০১০ সালের পর থেকে আর কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানির মধ্যে রয়েছে-বাংলাদেশ লীফ টোবাকো কোম্পানি লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। ডেনডি ডাইং লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০১০ সালের ১ নভেম্বর। হিল প্ল্যানটেশন লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০১০ সালের ১৯ আগষ্ট। রোজ হেভেন বল পেন লিমিটেড, সর্বশেষ লেনদেন হয় ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর।
ওটিসি মার্কেট বিষয়ে বিনিয়োগকারী নেতা সেলিম চৌধুরী বলেন, ওটিসি মার্কেট দ্বারা বাজার ভালো করা সম্ভব। ওটিসি মার্কেটে যে সব কোম্পানির লেনদেন বন্ধ হয়ে আছে সেসকল কোম্পানির লেনদেন যদি আবার শুরু করা হয় এবং ওটিসি মার্কেটে লেনদেন করা যদি সহজ করা যায় তবে ওটিসিতে আটকে থাকা টাকা দিয়ে বিনিয়োগকারীরা আবারো বিনিয়োগ করতে পারবেন।
গত ৯ বছর যাবৎ বিনিয়োগকারীদের মোটা অংকের টাকা আটকা পড়েছে কোম্পানিগুলো শেয়ারে। যেহেতু কোম্পানিগুলোর লেনদেন হচ্ছে না তাই বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা এই কোম্পানিগুলো শেয়ার বিক্রি করে তুলে নিতেও পারছে না।