Stock Market Journal

ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ ১১ ব্যাংক

Building and sign bank (done in 3d)

এসএমজে ডেস্ক:

গেল বছর জুড়ে করোনা পরিস্থিতির জন্য ঋণের শ্রেণিকরণ বন্ধ ছিল, ছিল না নতুন করে খেলাপির আশঙ্কা। এমন ছাড়ের পরও ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে সরকারি-বেসরকারি খাতের ১১টি ব্যাংক।

খেলাপি ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের তথ্য অনুযায়ী ১১টি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি সাত হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

এর মধ্যে সরকারি ৩টি ব্যাংকেরই প্রভিশন ঘাটতি সবচেয়ে বেশি ৫,৪২৯ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো হচ্ছে রূপালী, বেসিক, অগ্রণী ব্যাংক।

অন্যদিকে বেসরকারি খাতের ৬টি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১,৫৫২ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোসাল ইসলামী ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, প্রভিশন ঘাটতি থাকলে কোন ব্যাংক তার শেয়ার হোল্ডারদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারে না। এছাড়া প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি পড়ার ও আশঙ্কা রয়েছে।

আমানতকারীদের অর্থ ঋণ হিসেবে দিয়ে সুদ বাবদ আয়ই মূলত ব্যাংক ব্যবসা। তাই আমানতকারীদের অর্থ যেন কোন ধরনের ঝুঁকিতে না পড়ে সেজন্য নিয়মিত বা অশ্রেণিকৃত ঋণের ক্ষেত্রে ০.২৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। অর্থাৎ ১০০ টাকা ঋণ দিলে ২৫ পয়সা ব্যাংকগুলোকে প্রভিশন রাখতে হবে। তবে শ্রেণিকৃত ঋণের ধরণ অনুযায়ী প্রভিশন রাখার হারও ভিন্ন হয়ে থাকে।

কোন ঋণ, শ্রেণিকৃত হওয়ার পর শ্রেণিকরণের প্রথম ধাপে পড়লে ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হয়। অর্থাৎ ১০০ টাকা ঋণের বিপরীতে ২০ টাকা প্রভিশন।

দ্বিতীয় ধাপ তথা ডাউটফুল বা সন্দেহজনক মানে নেমে গেলে ওই ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ প্রভিশন রাখার বিধান। অর্থাৎ ১০০ টাকা ডাউটফুল ঋণের ক্ষেত্রে ৫০ টাকা ব্যাংককে প্রভিশন রাখতে হবে।

আর কোন ঋণ, মন্দ বা ব্যাড লোনে পরিণত হলে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হয়। অর্থাৎ ১০০ টাকা মন্দ ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ১০০ টাকাই প্রভিশন রাখতে হবে।

ব্যাংকের আয় থেকে অর্থ এনে এই প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়। তাই খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যাংকের আয় না বাড়লে প্রভিশন ঘাটতি দেখা দেয়।

করোনার অভিঘাত মোকাবেলায় ঋণ প্রবাহ বাড়াতে গেল বছর ঋণ-আমানত অনুপাত (এডভান্স ডিপোজিট রেশিও-এডিআর) বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর জন্য এই অনুপাত ৮৭ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৯২ শতাংশ।

অর্থাৎ কনভেনশনাল ব্যাংকগুলো ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে এখন ৮৭ টাকা ঋণ দিতে পারে। আর ইসলামী ব্যাংকগুলো ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে ৯২ টাকা ঋণ দিতে পারবে। তবে এই হার সময় সময় পরিবর্তন করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এসএমজে/২৪/মি