এসএমজে ডেস্ক
আরও এক বছর বন্ধ থাকবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মেট্রো স্পিনিংয়ের কারখানা। কোম্পানিটি বুধবার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ রয়েছে। নতুন করে এই বন্ধের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করেছে কোম্পানিটি।
নতুন কারখানা ভবন তৈরি, যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ আধুনিকায়নের জন্যই কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নতুন কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়। ওই সময় কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রথম দফায় ১২ মাস কারখানা বন্ধের কথা জানানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ শেষের আগে গতকাল নতুন করে আরও ১২ মাস কারখানা বন্ধের কথা জানানো হয়েছে। ফলে নতুন কারখানা ভবন নির্মাণ ও আধুনিকায়নের জন্য টানা দুই বছর বন্ধ কোম্পানিটির কারখানা।
কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মেট্রো স্পিনিংয়ের কারখানাটি ছিল প্রায় ৩০ বছরের পুরোনো। তাই এতে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে, সেগুলোর উৎপাদনক্ষমতা অনেক কম। এ অবস্থায় ব্যবসা সম্প্রসারণে নতুন কারখানা ভবন তৈরির পাশাপাশি নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বস্ত্রকল সমিতির (বিটিএমএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন।
কারখানা তথা উৎপাদন বন্ধ থাকায় বর্তমানে কোম্পানিটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ গত জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে এটির শেয়ারপ্রতি লোকসানের পরিমাণ ছিল ১ টাকা ১০ পয়সা। গত বছরের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। গত জুনে আরও একটি হিসাববছর শেষ হলেও এখনো কোম্পানির পক্ষ থেকে লভ্যাংশের কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। ফলে কারখানা বন্ধের কারণে এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ওপর তার প্রভাব পড়েছে।
কারখানা বন্ধের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর খবরে আজ দিনের শুরুতেই মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে। দিনের প্রথম এক ঘণ্টার লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বা দেড় টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৯০ পয়সায়।
এদিকে গত বছর প্রথম দফায় কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই সময় কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী খোকন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ৩০ বছরের পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে কোনোভাবেই কারখানাটির উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানো যাচ্ছিল না। আবার সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে কোম্পানিটির আধুনিকায়নও প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধ না করে তা অন্যত্র কারখানা স্থাপনেরও চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু গ্যাসলাইন স্থানান্তরের অনুমতি মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ করে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বন্ধের আগে মেট্রোর কারখানায় দৈনিক সুতা উৎপাদনের ক্ষমতা ছিল ৬ টন। নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনের পর দৈনিক সুতা উৎপাদনক্ষমতা বেড়ে ২২ থেকে ২৫ টনে দাঁড়াবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়।