নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুঁজিবাজারের শীর্ষ মার্কেট মেকার হিসেবে খ্যাত রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) পুঁজিবাজারে যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছে। পুঁজিবাজারে মার্কেট মেকার নেই। তবুও আইসিবি মার্কেট মেকারের ভূমিকা পালন করে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টায় আইসিবি’র কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন।
আবুল হোসেন বলেন, বেশ কিছু সরকারি ব্যাংক পুঁজিবাজারে আসছে। এ উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমি অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আসলেই বাজারের জন্য ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন শেয়ার দরকার। এতে পুঁজিবাজার গতিশীল হবে। তবে বাজারের গতিশীলতা রক্ষার্থে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আরো এগিয়ে আসতে হবে। তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে। তাহলে বাজার স্থিতিশীল হবে।
আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আইসিবি পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দিতে গিয়ে নিজের ভালো-মন্দের কথা কখনোই চিন্তা করেনি। যদি সেটা করত তাহলে, গত তিন বছরে আইসিবি যে বিনিয়োগ করেছে তা কেউ করতো না। আইসিবি ৬ হাজার ইন্ডেক্স থেকে বিনিয়োগ করেই যাচ্ছে। বাজার পতন হয়, আর আইসিবি শেয়ার কেনে। আইসিবি শেয়ার কিনলে বাজার একটু স্থিতিশীল হয় বা বাড়ে। আইসিবি’র যখন টাকা শেষ হয়ে যায়, তখন আবার বাজারে পতন ঘটে।
তিনি আরওবলেন, আইসিবিকে বছরে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণের সুদ দিতে হয়। প্রতিষ্ঠানটির হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করেই তো দিতে হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আজকে পর্যন্ত হিসাব করলে দেখা যাবে, আইসিবি’র শেয়ার বিক্রির চেয়ে কেনার পরিমাণ বেশি। তাই বাজার পড়ার সাথে আইসিবি’র শেয়ার বিক্রির কোনো সম্পর্ক নেই।
বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারে টাকার চেয়ে বেশি প্রয়োজন আস্থার সংকট দূর করা। আস্থার সঙ্কট দূর করা সম্ভব হলে, বাজার এমনিতেই ভালো হবে। তবে বর্তমান প্রেক্ষপটে বাজারে দ্রুত স্থিতিশীল আনয়নের লক্ষ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সরকার যে বিশেষ তহবিল সুবিধা দিয়েছে তা থেকে ৪০ লাখ টাকার নিচে যেসব ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী রয়েছেন, তাদেরকে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ফেস ভ্যালুর নিচে যেসব শেয়ারের দাম রয়েছে সেই শেয়ার ফেস ভ্যালুতেই কোম্পোনিকে বাই-ব্যাক করতে হবে।
কোনো কোম্পিানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে ন্যূন্তম ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে।
কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ারের মাধ্যমে উত্তোলিত টাকা পরিশোধিত মূলধনের সঙ্গে দেখানো যাবে না।
ডি-লিস্টিং প্রক্রিয়ায় কোম্পানিকে “সেফ জোনো” নিয়ে যাওয়া হয়। এতে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হন বিনিয়োগকারীরা। তাই কোম্পোনিকে ডি-লিস্টিং করা যাবে না।
কোম্পোনি যদি আইন ভঙ্গ করে তাহলে পরিচালনা পর্ষদকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা যেন পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে সরকারের বিশেষ তহবিল সুবিধা পেতে পারেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইসিবিকে অনুরোধ জানানো হয়।
এসএমজে/২৪/মি